নিজস্ব প্রতিবেদক

  ২১ সেপ্টেম্বর, ২০২০

শীতে করোনা মোকাবিলায় প্রস্তুতি নিন : প্রধানমন্ত্রী

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, আসন্ন শীতকালে কোভিড-১৯ পরিস্থিতি আরো খারাপ হতে পারে। তাই এ মুহূর্ত থেকেই তা মোকাবিলায় প্রস্তুতি নেওয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট সবার প্রতি নির্দেশ দিয়েছেন তিনি। ৩৪টি বাণিজ্যিক ব্যাংকসহ বিভিন্ন সংগঠনের কাছ থেকে প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ ও কল্যাণ ফান্ডে অনুদান গ্রহণকালে তিনি এ নির্দেশ দেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘শীতকাল আসন্ন। কোনো কোনো ক্ষেত্রে করোনা পরিস্থিতির আরো অবনতি ঘটতে পারে। আমাদের এ মুহূর্ত থেকেই তা মোকাবিলার জন্য প্রস্তুতি নিতে হবে।’ প্রধানমন্ত্রী গতকাল রোববার গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে এই অনুদান হস্তান্তর অনুষ্ঠানে যোগ দেন। প্রধানমন্ত্রীর পক্ষ থেকে তার মুখ্য সচিব ড. আহমদ কায়কাউস প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় (পিএমও) প্রাঙ্গণে এই অনুদানের চেক গ্রহণ করেন।

করোনা মোকাবিলায় জাতির সহায়তায় প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ ও কল্যাণ তহবিলে এই আর্থিক অনুদান দেওয়ার জন্য শেখ হাসিনা সংগঠনগুলোর প্রতি কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করেন। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘সবাই এ পরিস্থিতিতে অত্যন্ত আন্তরিকতার সঙ্গে কাজ করেছেন। আর এজন্যই আমরা এই করোনা পরিস্থিতি মোকাবিলা করতে সক্ষম হয়েছি।’

কোভিড-১৯-এর অভিঘাত থেকে দেশের অর্থনীতিকে মুক্ত রাখতে প্রণোদনা প্যাকেজ ঘোষণাসহ সরকারের আন্তরিক প্রচেষ্টার কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী আরো বলেন, ‘দেশের ব্যবসা-বাণিজ্য ও অর্থনীতিকে সচল রাখতে কার্যকরী পদক্ষেপ নিয়েছি। প্রণোদনা প্যাকেজ ঘোষণা করেছি এবং যেখানে যা প্রয়োজন তাই দিয়েছি। কারণ জনগণের সেবা করাই আমাদের প্রধান লক্ষ্য।’

দেশের যেকোনো সংকটে বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংক (বিএবি) তাদের হাত বাড়িয়ে দেওয়ায় প্রধানমন্ত্রী তাদের ধন্যবাদ জানান। ব্যাংকগুলো যাতে যথাযথভাবে তাদের কাজ পরিচালনা করতে পারে; সেদিকে বিশেষ মনোযোগ দেওয়ার জন্য বিএবিকে অনুরোধ করেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি আরো বলেন, ‘কিছু ব্যাংক খুব দুর্বল হয়ে পড়েছে। সেক্ষেত্রে বহুবার (ব্যাংকগুলোর) মার্জিং প্রয়োজন। তবে কোন ব্যাংক সঠিকভাবে কাজ করছে, কোনটা করছে না তা সঠিকভাবে যাচাই করা দরকার। আমার ওপর বিশ্বাস রাখুন মূল্যায়ন না করে এ লক্ষ্যে কিছুই করা হবে না।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, তার সরকার প্রথম বেসরকারি খাতে ব্যাংক খোলার উদ্যোগ নিয়েছে এবং তারা বেশির ভাগ বেসরকারি ব্যাংক পরিচালনার অনুমতি দিয়েছেন, যার ফলে বিশাল কর্মসংস্থান সৃষ্টি হয়েছে। কৃষকের জন্য ১০ টাকায় ব্যাংক অ্যাকাউন্ট খোলার প্রসঙ্গ উল্লেখ করে তিনি বলেন, তার সরকার অর্থ লেনদেনের ক্ষেত্রে মানুষকে ব্যাংক ব্যবহারে অভ্যস্ত করে তোলারও উদ্যোগ নিয়েছে। তিনি আরো বলেন, ‘তাই আমরা চাই যে, ব্যাংকগুলো সঠিকভাবে তাদের কাজ পরিচালনা করবে। আপনারা যেসব যৌক্তিক দাবি আমার সামনে এনেছেন, তা আমরা সব সময় বিবেচনা করেছি। ব্যাংক পরিচালনায় কোনো সমস্যা থাকলে তা আমি বিবেচনা করব।’

বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংক (বিএবি)-এর নেতৃত্বে ৩৪টি বাণিজ্যিক ব্যাংক যেমন এবি ব্যাংক লিমিটেড, আল-আরাফাহ ইসলামী ব্যাংক লিমিটেড, ব্যাংক এশিয়া লিমিটেড, ব্র্যাক ব্যাংক লিমিটেড, সিটি ব্যাংক লিমিটেড, ঢাকা ব্যাংক লিমিটেড, ইস্টার্ন ব্যাংক লিমিটেড, এক্সিম ব্যাংক লিমিটেড, ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক লিমিটেড, ইসলামী ব্যাংক (বিডি) লিমিটেড, যমুনা ব্যাংক লিমিটেড, মার্কেন্টাইল ব্যাংক লিমিটেড, মিডল্যান্ড ব্যাংক লিমিটেড, মধুমতি ব্যাংক লিমিটেড, মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংক লিমিটেড, ন্যাশনাল ব্যাংক লিমিটেড, এনসিসি ব্যাংক লিমিটেড, এনআরবি ব্যাংক লিমিটেড, এনআরবি বাণিজ্যিক ব্যাংক লিমিটেড, এনআরবি গ্লোবাল ব্যাংক লিমিটেড, ওয়ান ব্যাংক লিমিটেড, পদ্মা ব্যাংক লিমিটেড, প্রাইম ব্যাংক লিমিটেড, পূবালী ব্যাংক লিমিটেড, এসবিএসি ব্যাংক লিমিটেড, শাহজালাল ইসলামী ব্যাংক লিমিটেড, সাউথইস্ট ব্যাংক লিমিটেড, স্ট্যান্ডার্ড ব্যাংক লিমিটেড, ট্রাস্ট ব্যাংক লিমিটেড, ইউনিয়ন ব্যাংক লিমিটেড, ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংক লিমিটেড, উত্তরা ব্যাংক লিমিটেড প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ ও কল্যাণ তহবিলে বড় অবদান রেখেছে।

আরো ছয়টি সংস্থা যেমন খাদ্য মন্ত্রণালয়, ফোসা (ফরেস অফিসার্স স্পাউস অ্যাসোসিয়েশন), রাজশাহী মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়, ইনস্টিটিউট অব আর্কিটেক্টস বাংলাদেশ (আইএবি), বাংলাদেশ জুডিশিয়াল এমপ্লয়িজ অ্যাসোসিয়েশন এবং মিনিস্টার গ্রুপও এ তহবিলে অনুদান দিয়েছে।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close