নিজস্ব প্রতিবেদক
বন্যার উন্নতি ১৭ জেলায়
বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্রের এক বিজ্ঞপ্তিতে গতকাল বুধবার বলা হয়েছে কুড়িগ্রাম, গাইবান্ধা, বগুড়া, জামালপুর, সিরাজগঞ্জ, টাঙ্গাইল, নওগাঁ, নাটোর, মানিকগঞ্জ, মুন্সীগঞ্জ, মাদারীপুর, ফরিদপুর, চাঁদপুর, রাজবাড়ী, শরীয়তপুর, ঢাকা ও নারায়ণগঞ্জ জেলার বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হচ্ছে। এতে বলা হয়, আগামী ২৪ ঘণ্টায় ঢাকা সিটি করপোরেশন সংলগ্ন নিম্নাঞ্চলের বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হতে পারে।
গতকাল বুধবারের পূর্বাভাসে আরো বলা হয়েছে, রাজধানী ঢাকার আশপাশের নদীগুলোর পানি সমতল স্থিতিশীল আছে, যা আগামী ২৪ ঘণ্টা পর্যন্ত অব্যাহত থাকতে পারে। ব্রহ্মপুত্র নদ ও যমুনা নদীর পানি সমতল হ্রাস পাচ্ছে। যা আগামী ৭২ ঘণ্টা পর্যন্ত অব্যাহত থাকতে পারে। গঙ্গার পানি সমতল স্থিতিশীল আছে, পদ্মার পানি সমতল হ্রাস পাচ্ছে, যা আগামী ২৪ ঘণ্টা পর্যন্ত অব্যাহত থাকতে পারে। উত্তর-পূর্বাঞ্চলের আপার মেঘনা অববাহিকার প্রধান নদীগুলোর পানি সমতল হ্রাস পাচ্ছে, যা আগামী ৪৮ ঘণ্টা পর্যন্ত অব্যাহত থাকতে পারে।
দেশের ১০১টি পর্যবেক্ষণাধীন পানি সমতল স্টেশনের মধ্যে বন্যা আক্রান্ত জেলার সংখ্যা ১৮টি। এর মধ্যে বৃদ্ধি ৩৫টি এবং হ্রাস ৬২টির, বিপৎসীমার ওপরে নদ-নদীর সংখ্যা ১৫টি এবং অপরিবর্তিত চারটি। গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে উল্লেখযোগ্য বৃষ্টিপাত হয়েছে সাতক্ষীরা ৭৫ মিলিমিটার ও রাজশাহী ৬৪ মিলিমিটার। এদিকে, গাইবান্ধায় সার্বিক বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হচ্ছে, বন্যার্তরা ঘরবাড়িতে ফিরতে শুরু করেছে। সিরাজগঞ্জে যমুনার পানি কমলেও বিপৎসীমার ওপর দিয়ে বইছে। প্রতিনিধিদের পাঠানো রিপোর্টÑ
গাইবান্ধা : গাইবান্ধায় সবগুলো নদ-নদীর পানি কমতে থাকায় জেলার সার্বিক বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হয়েছে। জেলার সুন্দরগঞ্জ, ফুলছড়ি, সাঘাটা ও সদর উপজেলার চরাঞ্চল থেকে বেশিরভাগ পানি নেমে গেছে। বাঁধ ও উঁচু স্থানে আশ্রয় গ্রহণকারীদের অধিকাংশই ঘরে ফিরে যেতে শুরু করেছে।
এদিকে জেলা প্রশাসন জানিয়েছে, বন্যার ক্ষতির পরিমাণ নিরুপণের কাজ চলছে। জেলার ছয় উপজেলার ৪৫টি ইউনিয়নে ২৬৭টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। ২ লক্ষাধিক মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্তদের মধ্যে ৬০০ টন চাল, সাহায্য হিসেবে ১৮ লাখ ৫০ হাজার টাকা, শিশু খাদ্যের জন্য ৪ লাখ টাকা, গো-খাদ্যের ৯ লাখ টাকা বিতরণ করেছে। এ ছাড়া শুকনো খাবারের প্যাকেট বিতরণ করা হয়েছে ৬ হাজার ৬৫০ প্যাকেট। কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগ জানিয়েছে, এবারের বন্যায় ৩ হাজার ২৩৬ হেক্টর জমির বিভিন্ন ফসল বন্যার পানিতে নিমজ্জিত হয়েছে।
সিরাজগঞ্জ : সিরাজগঞ্জে যমুনার পানি কমলেও বিপৎসীমার ওপর দিয়ে বইছে। গতকাল বুধবার জানা গেছে, গত ২৪ ঘণ্টায় যমুনার পানি ১১ সেন্টিমিটার কমে বিপৎসীমার ২০ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে বইছে। নদী অববাহিকার নিম্নাঞ্চল ও চরাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। নষ্ট হয়ে যাচ্ছে পাট, ভুট্টা শাকসবজিসহ বিভিন্ন ফসল। গতকাল বুধবার সকালে যমুনা নদীতে পানি সিরাজগঞ্জ পয়েন্টে যমুনার পানি সমতল ১৩ দশমিক ৫৫ মিটার রেকর্ড করা হয়েছে। অপর দিকে সিরাজগঞ্জের কাজিপুর উপজেলায় গত ২৪ ঘণ্টায় যমুনা নদীর পানি ২০ সেন্টিমিটার কমে বিপৎসীমার ছয় সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে বইছে বলে সিরাজগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ড জানান।
"