নিজস্ব প্রতিবেদক
শিথিলতার সঙ্গে বাড়তে পারে ছুটি
করোনাভাইরাস সংক্রমণ পরিস্থিতির উন্নতি না হওয়ার প্রেক্ষাপটে দেশে সাধারণ ছুটি আরো বাড়তে পারে। করোনা নিয়ন্ত্রণে ছুটি বাড়ানোর বিকল্প না থাকলেও আরো ছুটি সরকারকে নানা চ্যালেঞ্জের মুখে ফেলবে।
করোনা সংক্রমণ রোধে গত ২৬ মার্চ থেকে ২৫ এপ্রিল পর্যন্ত টানা ৩১ দিনের ছুটি চলছে দেশে। কিন্তু করোনা পরিস্থিতির ক্রমেই অবনতি হচ্ছে। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, সংক্রমণে রোধে মানুষকে ঘরে রাখতে ছুটি আরো বাড়ানোর প্রয়োজন হবে। এজন্য ছুটি বাড়ানোর জন্য যথাযথ কর্তৃপক্ষের কাছে সুপারিশ করা হচ্ছে।
যদিও মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ ও জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ছুটি বাড়ানোর বিষয়টি পুরোপুরি প্রধানমন্ত্রীর ওপর নির্ভর করছে। তবে টানা ছুটি দেশের উৎপাদন প্রক্রিয়াকে ব্যাহত করছে। বিপুল সংখ্যক মানুষকে করেছে কর্মহীন। ছুটি আরো বাড়ানো হলে খাদ্যের ওপর প্রভাব পড়তে পারে। এখন বোরো কাটার মৌসুম চলছে, এটাই দেশের সবচেয়ে বড় ফসল। বোরো কৃষকের ঘরে তুলতে ছুটির কারণে সমস্যা দেখা দিয়েছে। গণপরিবহন বন্ধ থাকায় শ্রমিক সংকটে অনেক স্থানে বোরো কাটা যাচ্ছে না।
এছাড়া ঈদকে সামনে রেখে ব্যবসায়ীরা কর্মকান্ড চালাতে না পারলে অর্থনৈতিক ক্ষতি অনেক বেড়ে যাবে। আর কর্মহীন মানুষকে দীর্ঘদিন ঘরে আটকেও রাখা যাবে না।
এই পরিস্থিতিতে সবকিছু বিবেচনা করে পরবর্তী সময়ে প্রধানমন্ত্রী ছুটি বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নেবেন বলে কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।
করোনা নিয়ন্ত্রণে ছুটি কত দিন পর্যন্ত বহাল রাখতে হতে পারে জানতে চাইলে স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সচিব গণমাধ্যমকে বলেন, সেটা এখনই বলা যাবে না। সংক্রমণের ট্রেন্ড অ্যানালাইসিস করে সেটা বলতে হবে। বিশেষজ্ঞরা পর্যালোচনা করছেন, অন্যান্য দেশের অভিজ্ঞতা দেখছেন।
ছুটির বিষয়ে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সচিব শেখ ইউসুফ হারুন গণমাধ্যমকে বলেন, করোনার যা পরিস্থিতি তাতে ছুটি বাড়ানো প্রয়োজন। কিন্তু আমাদের তো কিছু বিষয় চিন্তা করতে হবে। এখন বোরো ধান কাটার মৌসুম। হাওরাঞ্চলসহ যে জায়গাগুলোতে বেশি বোরো হয় সেখানে কৃষক যেতে না পারলে অবস্থা খারাপ হবে।
তিনি বলেন, ছুটি বাড়ানোর বিষয়ে এখনো কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। সবকিছু বিবেচনা করে হয়তো প্রধানমন্ত্রী এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবেন। কী হবে জানি না, আমরা এখনো কোনো সিদ্ধান্ত পাইনি।
একজন কর্মকর্তা জানিয়েছেন, ছুটি হয়তো আরো এক সপ্তাহ বাড়িয়ে ২ মে পর্যন্ত করা হতে পারে। তবে কিছু কিছু ক্ষেত্রে নিষেধাজ্ঞায় শিথিলতা আসতে পারে।
করোনার কারণে প্রথমে গত ২৬ মার্চ থেকে ৪ এপ্রিল পর্যন্ত সাধারণ ছুটি ঘোষণা করে সরকার। আরো তিন দফায় ছুটি বাড়ানো হয়। পরে পর্যায়ক্রমে ১১ এপ্রিল, ১৪ এপ্রিল ও ২৫ এপ্রিল পর্যন্ত ছুটি বাড়ে।
"