নিজস্ব প্রতিবেদক

  ১৪ এপ্রিল, ২০২০

এক দিনে রেকর্ড সংক্রমণ

দেশে করোনায় আক্রান্ত ৮০০ ছাড়াল, মৃত্যু বেড়ে ৩৯

দেশে এক দিনেই ১৮২ জনের মধ্যে নভেল করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ধরা পড়ায় আক্রান্তের সংখ্যা এক লাফে বেড়ে হয়েছে ৮০৩ জন। গতকাল সোমবার সকাল ৮টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় আরো পাঁচজনের মৃত্যুর মধ্য দিয়ে মৃতের সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ৩৯ জন। গত এক দিনে আরো তিনজন সুস্থ হয়ে ওঠায় ৪২ জন সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরে গেছেন। স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক গতকাল স্বাস্থ্য অধিদফতরের নিয়মিত ব্রিফিংয়ে যুক্ত হয়ে দেশে করোনাভাইরাস পরিস্থিতির এই সবশেষ তথ্য তুলে ধরেন।

তিনি জানান, রোববার থেকে সোমবার পর্যন্ত ১ হাজার ৫৭০ জনের নমুনা পরীক্ষা করা হয়। এতে ১৮২ জনের শরীরে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। এখন আক্রান্তের সংখ্যা হয়েছে ৮০৩। যারা আগে থেকে আক্রান্ত ছিলেন তাদের মধ্যে মারা গেছেন আরো পাঁচজন। সুতরাং মৃতের সংখ্যা হয়েছে ৩৯। আর সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরে গেছেন আরো তিনজন। এ নিয়ে ৪২ জন সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন।

স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, দেশের বিভিন্ন জেলাতে করোনা যারা সংক্রমিত করেছে তাদের বেশিরভাগই ঢাকা ও নারায়ণগঞ্জ থেকে গেছে। এ বিষয়ে আমাদের আরো বেশি কঠোর পদক্ষেপ নিতে হবে। লকডাউন জোরদার করতে হবে। বিশেষ করে এই এলাকাগুলো। আমাদের এরই মধ্যে ‘কমিউনিটি সংক্রমণ’ হয়ে গেছে, আপনারা জানেন। সেটি যাতে না বাড়ে সেদিকে আমাদের খেয়াল করতে হবে।

তিনি বলেন, করোনাভাইরাসে আক্রান্তদের চিকিৎসায় নতুন আরো ৪০০-৫০০ ভেন্টিলেটর ও ৪০০-৫০০ অক্সিজেনারেটর সংগ্রহ করা হচ্ছে।

এ সময় ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে বুলেটিনে যুক্ত ছিলেন স্বাস্থ্য অধিদফতরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (প্রশাসন) অধ্যাপক নাসিমা সুলতানা। তিনি বলেন, নমুনা সংগ্রহ আগের দিনের চেয়ে ৩৮ শতাংশ বেশি এবং ১৭ শতাংশ বেশি পরীক্ষা করা হয়েছে। হোম কোয়ারেন্টাইনে গেছেন আরো ৫ হাজার ৬৮৪ জন। এখন পর্যন্ত হোম কোয়ারেন্টাইনে আছেন ৮৫ হাজার ৪৯৮ জন। ৪৮৪ জনকে প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টাইনে নেওয়া হয়েছে। এখন পর্যন্ত ২ হাজার ১৮৯ জনকে প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টাইন করা হয়েছে।

এছাড়া কোয়ারেন্টাইন মুক্ত হয়েছেন ১ হাজার ৪৫ জন এবং এখন পর্যন্ত কোয়ারেন্টাইন মুক্ত হয়েছেন ৬৩ হাজার ২৭৬ জন। আর আইসোলেশনে রাখা হয়েছে ৮৪ জনকে। বর্তমানে আইসোলেশনে আছেন ২৯৯ জন। আর গত ২৪ ঘণ্টায় আইসোলেশন থেকে মুক্ত হয়েছেন ১৭ জন।

তিনি জানান, সবচেয়ে বেশি রোগী পুরান ঢাকা, মিরপুর, মোহাম্মদপুর, উত্তরা, ধানমন্ডি, বাসাবোতে। শুধু মিরপুরের টোলারবাগেই আক্রান্ত ১৯ জন। এছাড়া উত্তরায় ১৭, ওয়ারীতে ১৬, ধানমন্ডিতে ১৪, লালবাগে ১৩, মোহাম্মদপুরে ১২, বাসাবোতে ১২, যাত্রাবাড়ীতে ১১, বনানীতে ৭, গ্রিন রোডে ৫, বসুন্ধরা আবাসিক এলাকায় ৪ জন শনাক্ত হয়েছে। মিরপুর-১১ নম্বরে ১০ জন, ১২ নম্বরে ৮ জন ও মিরপুর ১ নম্বরে শনাক্ত হয়েছে ৫ জন।

গত ডিসেম্বরের শেষ দিকে চীনের উহান থেকে ছড়িয়ে বৈশ্বিক মহামারিতে পরিণত করোনাভাইরাসে বিশ্বজুড়ে আক্রান্তের সংখ্যা সাড়ে ১৮ লাখ ছাড়িয়ে গেছে। মারা গেছেন ১ লাখ ১৪ হাজারেরও বেশি মানুষ। তবে সোয়া চার লাখের মতো রোগী এরই মধ্যে সুস্থ হয়েছেন।

গত ৮ মার্চ দেশে প্রথম করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগীর সন্ধান পাওয়া যায়। এরপর প্রথম দিকে কয়েকজন করে নতুন আক্রান্ত রোগীর খবর মিললেও গত ক’দিনে লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে এ সংখ্যা। সবশেষ হিসাবে দেশে করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা ৮০৩। মারা গেছেন ৩৯ জন। সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন ৪২ জন।

প্রাণঘাতী এই ভাইরাসের বিস্তার ঠেকাতে সাধারণ ছুটি ঘোষণার পাশাপাশি নানা পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে; যার মূলে রয়েছে মানুষে মানুষে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা। মানুষকে ঘরে রাখতে রাজপথের পাশাপাশি পাড়া-মহল্লায় টহল দিচ্ছে সশস্ত্র বাহিনী, র‌্যাব ও পুলিশ।

দেশে কমিউনিটি

ট্রান্সমিশন শুরু হয়ে

গেছে : স্বাস্থ্যমন্ত্রী

নারায়ণগঞ্জ,

বাসাবো ও মিরপুরে

বেশি সংক্রমণ

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close