বিনোদন প্রতিবেদক
‘মৃত্যু পর্যন্ত জীবন সুখ-দুঃখের খেলা’
দীর্ঘ ২৫ বছর একটি নতুন সিনেমায় অভিনয়ের অপেক্ষায় আছেন বাংলাদেশ চলচ্চিত্রের জীবন্ত কিংবদন্তি নায়িকা শবনম। ১৯৯৯ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত কাজী হায়াৎ পরিচালিত ‘আম্মাজান’ সিনেমায় সর্বশেষ নাম ভূমিকায় অভিনয় করেছিলেন তিনি। এরপর বিগত ২৫ বছরে কোনো সিনেমায় দেখা যায়নি তাকে। এটা সত্যিই অবাক করার মতো বিষয়ই বটে। কিন্তু অবাক করার মতো হলেও এই ২৫ বছর তার কাছে এমন কোনো মৌলিক গল্পের সিনেমার প্রস্তাব যায়নি! যা তিনি মুগ্ধ হয়ে অভিনয়ের জন্য রাজি হতেন।
শবনম বলেন, ‘আর কোনো দিন সিনেমায় অভিনয় করব কি না জানি না। তবে ইচ্ছে তো আছেই, গল্প মৌলিক হলে ভেবে দেখব। দেখতে দেখতে ৭৭টি বছর পার করে দিলাম। অথচ এখনো মনে হয় এই তো সেদিনের কথা, বাবা-মায়ের সঙ্গে সময় কাটছে, স্কুলে যাচ্ছি, ফিল্ম করছি। আর এখন ভাবলে মনে হয় কত সময় চলে গেছে জীবন থেকে। জীবনের কত রূপ দেখেছি, নানা বয়সে জীবনের সৌন্দর্যকে উপভোগ করেছি। কত কত মানুষের সঙ্গে পরিচয়, কত কিছু শিখেছি এক জীবনে, কত কোটি মানুষের ভালোবাসা পেয়েছি। আবার হারিয়েছিও অনেক প্রিয়জনকে। সত্যি বলতে কী মৃত্যু পর্যন্ত জীবন সুখ-দুঃখের খেলা। এখনো সুস্থ আছি, ভালো আছি- এটাই কম কীসের। বয়স তো আর কম হলো না। সবার দোয়া ও ভালোবাসা চাই।’
এদিকে একটা সময় ছিল যখন বাংলাদেশের চলচ্চিত্রের জীবন্ত কিংবদন্তি নায়িকা শবনমকে বাংলাদেশের দর্শক ‘হারানো দিন’, ‘চান্দা’, ‘তালাশ’, ‘নাচের পুতুল’-এর নায়িকা হিসেবেই বেশি চিনতেন। তারপর অবশ্য তিনি বাংলাদেশের ‘সন্ধি’, ‘শর্ত’, ‘সহধর্মিণী’, ‘যোগাযোগ’, ‘জুলি’, ‘বশিরা’, ‘দিল’সহ অনেক সিনেমায় অভিনয় করেছেন। তার পরবর্তী সময় অর্থাৎ ১৯৯৯ সালের ২৫ জুন কাজী হায়াৎ পরিচালিত ‘আম্মাজান’ সিনেমাটি মুক্তির পর থেকে আজ অবধি দর্শক তাকে ‘আম্মাজান’ হিসেবেই খুব সহজে চিনেন। দীর্ঘদিন তিনি পাকিস্তানের সিনেমায় অভিনয় করেছেন বিধায় অনেকেই আবার মনে করতেন তিনি পাকিস্তানের নায়িকা। কিন্তু এই ধারণাও ভুল ছিল। তার আসল নাম ঝরনা বসাক। ‘আম্মাজান’র পর আর কোনো সিনেমায় অভিনয়ে দেখা যায়নি শবনমকে। এরই মধ্যে বেশ কয়েক বছর আগে তিনি হারিয়েছেন স্বামী বরেণ্য সুরস্রষ্টা, সংগীত পরিচালক রবিন ঘোষকে। একমাত্র ছেলে রনিকে নিয়েই তিনি রাজধানীর একটি অভিজাত এলাকায় বসবাস করছেন।
চলচ্চিত্রে আসার অনেক আগে থেকেই শবনম নাচের সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিলেন। বুলবুল ললিতকলা একাডেমিতে নাচ শিখতেন। এহতেশাম পরিচালিত ‘এদেশ তোমার আমার’ সিনেমায় তখন একটি গানে বেশ কয়েকজন নাচের মেয়ের দরকার হয়ে পড়ে। তখন বুলবুল ললিতকলা একাডেমি থেকেই কয়েকজনকে নিয়ে যাওয়া হয়। সেই দলে শবনমও ছিলেন। এরপর ‘রাজধানীর বুকে’ সিনেমায় তিনি একটি একক নৃত্যে অংশগ্রহণ করেন। তার পরপরই এহতেশাম তাকে ও রহমানকে নিয়ে শুরু করেন ‘হারানো দিন’ সিনেমাটি। এরপর একে একে অনেক সিনেমায় অভিনয় করেন শবনম।
"