বিনোদন প্রতিবেদক
৭ বছর আমাকে বোবা করে রাখা হয় : কনকচাঁপা
মুখ খুলতে শুরু করেছেন বিনোদন অঙ্গনের শিল্পীরা। বিগত দিনগুলো কীভাবে পার করতে হয়েছে, সেই ফিরিস্তি দিতে গিয়ে কেউ ফেলছেন দীর্ঘশ্বাস, কেউ ফেলছেন চোখের জল। সেই দলে আছেন নন্দিত কণ্ঠশিল্পী কনকচাঁপা। যার গান ছাড়া ঢালিউডে সিনেমা হতো না, সেই শিল্পীকেও অর্ধযুগের বেশি সময় ধরে গান গাওয়া থেকে বিরত রাখা হয়েছিল।
সাম্প্রতিক সময়ের নানা ঘটনা স্পর্শ করেছে শিল্পী কনকচাঁপাকে। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে তিনিও ছিলেন ছাত্রদের পক্ষে। ছাত্র হত্যার প্রতিবাদে গত ১৭ জুলাই ফেসবুকে তিনি লিখেছিলেন, ‘আমি সব সময়ই ন্যায়ের পক্ষে। ছাত্রদের যৌক্তিক আন্দোলনে হামলা, নিপীড়ন, রক্তপাত বন্ধ হোক। স্বাধীন বাংলাদেশে সমণ্ডঅধিকার নিশ্চিত হোক।’
ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের মাধ্যমে সরকার পতনের পর মুখ খুললেন কনকচাঁপা। এতকাল গান ছেড়ে রান্নায় মনোযোগ দিয়েছিলেন তিনি। রীতিমতো রন্ধনশিল্পী হিসেবে নিজেকে পরিচিত করিয়ে ফেলেছিলেন। বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) রাজনীতিতে সক্রিয় ছিলেন এই শিল্পী। এ কারণে বিগত সরকারের আমলে অনেক ভোগান্তি পোহাতে হয়েছে তাকে।
এ প্রসঙ্গে কনকচাঁপা বলেন, ‘আমি বিগত সাতটি বছর বিভিন্নভাবে নিগৃহীত হয়েছি, তাতে মোটেই ভেঙে পরিনি। আমি সব সময় হাসিখুশি থেকেছি। কখনো কাঁদিনি। কখনো হতাশ হইনি। যত সমস্যা এসেছে, কারো কাছে অভিযোগ করিনি।’ তীব্র ক্ষোভ ও আক্ষেপ নিয়ে কনকচাঁপা বলেন, ‘আমাকে সাত বছর যেভাবে বোবা করে রাখা হয়েছে, তা বর্ণনাতীত। আমি কোনো কিছু লিখতে পারতাম না। শুধু তাই নয়, আমি গান গাইতে পারিনি। একজন শিল্পী যদি গান গাইতে না পারে, তার বোবা হয়ে যাওয়াই ভালো। কিন্তু আমি এত কিছুর পরও আশা হারাইনি।’
তিন দশকেরও বেশি সময় ধরে গান করছেন কনকচাঁপা। চলচ্চিত্রের তার গাওয়া গানের সংখ্যা তিন হাজারেরও বেশি। ৩৫টিরও বেশি একক গানের অ্যালবাম প্রকাশিত হয়েছে তার। কনকচাঁপার গাওয়া জনপ্রিয় গানগুলোর মধ্যে ‘অনেক সাধনার পরে আমি পেলাম তোমার মন’, ‘তোমাকে চাই শুধু তোমাকে চাই’, ‘ভালো আছি ভালো থেকো’, ‘যে প্রেম স্বর্গ থেকে এসে জীবনে অমর হয়ে রয়’, ‘তোমায় দেখলে মনে হয়’, ‘অনন্ত প্রেম তুমি দাও আমাকে’, ‘তুমি আমার এমনই একজন’ উল্লেখযোগ্য।
সংগীতে অসামান্য অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে কনকচাঁপা একাধিকবার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পেয়েছেন। ‘স্থবির যাযাবর’, ‘মুখোমুখি যোদ্ধা’, ‘মেঘের ডানায় চড়ে’সহ বেশ কয়েকটি বইও লিখেছেন তিনি।
"