শুভেচ্ছা জানালেন রুনা লায়লা, ববিতা, আঁখি আলমগীর
রুনা লায়লা : আমার মতে আলমগীর সাহেব ‘ওয়ান অব দ্য ফাইনেস্ট অ্যাক্টর অব বাংলাদেশ’। শুরু থেকেই আমি তার অভিনয়ের ভীষণ ভক্ত। তিনি খুব ন্যাচারাল অ্যাক্টিং করেন। পুরোনো সিনেমাগুলো এখনো যখন দেখি আমার কাছে এখনো তার অভিনয় ফ্রেশ মনে হয়। তিনি অনেক ভালো ভালো সিনেমাতে অভিনয় করেছেন। কিন্তু আমার কাছে মনে হয় এখনো আরো ভালো স্ক্রিপ্ট পেলে আরো ভালো অভিনয় করতে পারতেন। কারণ অভিনয়ে তার আগ্রহ এখনো প্রবল। আর তিনি যে কত বড় মনের মানুষ তা কেউ কেউ জানেন, আবার অনেকেই জানেন না। এক দিন রাজধানীতেই একটি সিগন্যালে গাড়ি থামার পর আমার কাছে এসে একটি ছেলে সালাম দিয়ে বলল, ম্যাডাম আমি একসময় ভিক্ষা করতাম। কিন্তু স্যার আমাকে পথে পেয়ে এক দিন কিছু টাকা দিয়েছিলেন। সেই থেকে আমি ভিক্ষা ছেড়ে টুকটাক ব্যবসা করছি। স্যার আমার জীবন বদলে দিয়েছেন। এই ঘটনা কিন্তু আমি জানতাম না। এমন অনেক মানুষকে তিনি উপকার করেছেন যা আমার জানা নেই। আজীবন আমি তার স্ত্রী হিসেবে, তার বন্ধু হিসেবে ভালো চাই। আমি চাই তাকে গবেষণা করে অভিনয়ে তাকে আরো কাজে লাগানো হোক। আল্লাহ তাকে সুস্থ রাখুন, ভালো রাখুন, দোয়া এবং ভালোবাসা সব সময়ই থাকবে।
ববিতা : অভিনয়ে ৫০ বছর পরিপূর্ণতা লাভ করা একজন শিল্পীর জন্য বিরাট ব্যাপার বলেই আমি মনে করি। কারণ কিছুদিন আগে আমার জীবনেও এমন সময় এসেছিল। মানুষ হিসেবে আলমগীর ভাই সম্পর্কে আগে বলতে চাই। মানুষ হিসেবে তিনি অপূর্ব। সব সময়ই শিল্পীদের খোঁজ-খবর রাখেন। আমরা যারা তার খুব কাছের তাকে সত্যিকার অর্থেই একটু অন্যরকমভাবে চিনি, জানি। যে কারণে মানুষ হিসেবে তিনি অনন্য ও অসাধারণ। আমার সৌভাগ্য হয়েছিল তার প্রযোজিত প্রথম সিনেমা ‘ঝুমকা’সহ ‘নির্দোষ’ সিনেমাতে অভিনয় করার। আরো বেশকিছু সিনেমাতে আমরা একসঙ্গে অভিনয় করেছি। আমার প্রযোজিত ‘পোকা মাকড়ের ঘর বসতি’ সিনেমায় অভিনয় করেও তিনি জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পেয়েছেন। অথচ এই সিনেমাতে অভিনয়ের জন্য তিনি কোনো সম্মানী নেননি। বরং আমার সিনেমাটি যাতে ভালোভাবে শেষ হয় সেদিক বিবেচনায় তিনি পাশে থেকেছেন, সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন। এমন মহান মানুষের অভিনয় জীবনের সুবর্ণজয়ন্তীতে আমার শ্রদ্ধা, সম্মান, শুভেচ্ছা। আল্লাহ তাকে দীর্ঘ হায়াত দিন, সুস্থ রাখুন।
আঁখি আলমগীর : আমার আজকের আঁখি আলমগীর হয়ে ওঠা পর্যন্ত বাবার তো আসলে অনেকগুলো ধাপ আমার নিজের চোখে দেখা। বাবা হিসেবে তাকে যখন যেভাবে জীবনে প্রয়োজন সেভাবেই পেয়েছি। ছোট্ট বেলায় তিনি খুব কঠিন ছিলেন। আর এখন বন্ধুর মতো। ছোট বেলায় আমাদের তিন ভাইবোনের আস্থার জায়গা ছিলেন আমাদের বাবা। আর এখন আমরা তার আস্থার জায়গা। তিনি তার নাতি-নাতনিদের কাছে ভীষণ প্রিয়। একজন মানুষ হিসেবে এত সৎ মানুষ আমি আমার জীবনে খুব কম দেখেছি। জীবনে আমার বাবাকে কাউকে হিংসা করতে দেখিনি। কারো ভালো কিংবা মন্দ বিষয় নিয়ে আলোচনা করতে গেলে বাবা তা ইগনোর করে যেতে বলেছেন। সবকিছু থেকে বাবা নিজেকে ঊর্ধ্বে রাখার চেষ্টা করতেন। বাবা ভীষণ ব্যক্তিত্ব সম্পন্ন একজন মানুষ, যা আমার মতো অনেকের কাছে ভীষণ শ্রদ্ধা জাগিয়ে তুলে। ছোট-বড় অনেক দর্শকের কাছে আব্বু ভীষণ ভালোবাসার, ভীষণ প্রিয়। অনেক পুরুষকে আমি তার মতো হতে দেখেছি। আর নায়ক হিসেবে আমি কারো সঙ্গেই তুলনা করব না। আমি বলব আমার বাবাই সেরা নায়ক। তবে দর্শক হিসেবে আমার একটি অভিযোগ আছে। আর তা হলো আমার বাবা এমন একজন শক্তিমান অভিনেতা, যার অভিনয়ে এখনো অনেক আগ্রহ রয়েছে। এখনো তাকে নিয়ে সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়, অমিতাভ বচ্চন এই সময়ে এসে যে ধরনের গল্পের সিনেমাতে অভিনয় করেছেন সেই ধরনের সিনেমা নির্মাণ সম্ভব। কারণ বাবা পুরোপুরি সুস্থ একজন মানুষ এবং এখনো অভিনয়ের ধ্যানে মগ্ন থাকা একজন শিল্পী। আমি মনে করি বাংলাদেশের সিনেমার দর্শককে ঠকানো হচ্ছে।
"