বিনোদন প্রতিবেদক

  ১০ মে, ২০২১

‘অভিজ্ঞ-সিনিয়র শিল্পীদের ডাকা হয় না’

দেশের জনপ্রিয় অভিনেতা চঞ্চল চৌধুরী। নাটকে তার অভিনয় জীবনের শুরু থেকেই প্রত্যেকটি নাটকের গল্প, চরিত্রের প্রতি যেমন মনোযোগী ছিলেন, ঠিক মনোযোগী ছিলেন শুটিংয়ে সময় মতো পৌঁছানো, স্ক্রিপ্ট মুখস্থ করে যাওয়া সর্বোপরি একটি নাটকে অভিনয়ের জন্য যত ধরনের প্রস্তুতি নেওয়ার প্রয়োজন তার পুরোটাই নিয়ে শুটিং স্পটে উপস্থিত হওয়া। কিন্তু দেখা গেছে, ধীরে ধীরে হাতেগোনা কয়েকজন নাট্যকার ছাড়া এ সময়ে এসে তিনি নাটকের গল্পে অনেক চরিত্রই আর খুঁজে পান না। তাই চঞ্চল চৌধুরী নাটকের গল্পের প্রতি জোর দিয়ে এবং নাটকে বাবা-মা, দাদা-দাদি, নানা-নানিসহ প্রয়োজনীয় অন্যান্য চরিত্র ফেরত চেয়ে গত ৮ মে কিংবদন্তি অভিনেত্রী শর্মিলী আহমেদের জন্মদিনে শ্রদ্ধা জানিয়ে একটি স্ট্যাটাস লেখেন। যার মূল বিষয় ছিল নাটকের গল্পে বাবা, মা, দাদা, দাদি, নানা, নানির চরিত্রগুলোকে ফেরত চাওয়া।

চঞ্চল চৌধুরী লেখেন, ‘পিতৃ-মাতৃ পরিবার’হীন আমরা। যখন আমার অভিনয়ের যাত্রা শুরু, তখন অধিকাংশ নাটক-সিনেমা ছিল সামাজিক এবং পারিবারিক। কত কত চরিত্র, দাদা-দাদি, নানা-নানি, বাবা-মা, ভাই-বোন। বহু চরিত্রের সার্বক্ষণিক উপস্থিতি ছিল আমাদের নাটক সিনেমায়। প্রায় প্রতিটি নাটক বা সিনেমা ছিল, চলমান সমাজ এবং বাঙালি সংস্কৃতির বাস্তব প্রতিফলন। কালান্তরে সেই দিনগুলো কীভাবে যেন শেষ হয়ে গেল! অধিকাংশ চরিত্র এখন আমাদের নাটকে অনুপস্থিত। অধিকাংশ নাটক নির্মাণ হচ্ছে প্রধানত দুটি চরিত্রকে কেন্দ্র করে। পুরো নাটকে নায়ক আর নায়িকার প্রেমের প্যান প্যানানি, ঘ্যান ঘ্যানানি। সব নাটক প্রেমে ভরপুর। মুক্তিযুদ্ধ বা একুশে ফেব্রুয়ারির নাটকেও অসংলগ্ন প্রেমের উপস্থিতি মূল বিষয়টির ভাবমূর্তি নষ্ট করছে। হুমায়ূন আহমেদের সেই সময়ের নাটকগুলো দেখলেই পরিবারের একটা চমৎকার চিত্র পাওয়া যায়। পরবর্তী সময়ে হাতেগোনা কয়েকজন নাট্যকার, যেমন মাসুম রেজা বা বৃদাবন দাসের গল্পে বাবা-মা, দাদা-দাদি, ভাই-বোনসহ অনেক চরিত্রের উপস্থিতি মেলে। কিন্তু ইদানীং পারিবারিক বা সামাজিক নাটকের গল্পে ভয়াবহ চিত্র দেখতে পাই। দাদা-দাদি, নানা-নানি নিখোঁজ। নাটকে বাবার চরিত্র থাকলে মা মৃত, মায়ের চরিত্র থাকলে, বাবা পরলোকগত। যেখানে বাবা-মা কাউকেই একসঙ্গে পাওয়া যায় না, সেখানে ভাই-বোন আসবে কোত্থেকে? আর অন্যান্য চরিত্রের কথা তো বলাই বাহুল্য। অনেকগুলো কারণের মধ্যে, নির্মাণ বাজেটের স্বল্পতা এবং খরচ বাঁচিয়ে কোনো মতে নাটকের নামে ফুটেজ কালেকশন, এর জন্য দায়ী। অনেক সিনিয়র শিল্পী অতৃপ্তি আর হতাশা নিয়ে বেঁচে আছেন, কেউ কেউ পৃথিবী ছেড়েও চলেও গেছেন। অনেক অভিজ্ঞ আর সিনিয়র শিল্পীদের অভিনয়ের জন্য ডাকা হয় না। এভাবেই আমাদের নাটক-সিনেমাও আজ অভিভাবকহীন হয়ে পড়েছে। এত কথা বলার কারণ, আমরা আমাদের নাটকে বাবা-মাকে ফেরত চাই... দাদা-দাদি ফেরত চাই, বড় ভাই-বোন ফেরত চাই। জমজমাট পরিবার চাই।’

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close