reporterঅনলাইন ডেস্ক
  ২০ নভেম্বর, ২০২৩

মিধিলির আঘাতে ক্ষতিগ্রস্তদের পাশে দাঁড়াতে হবে

ঘূর্ণিঝড় হামুনের ক্ষত না শুকাতেই বাংলাদেশের উপকূলে আঘাত হানল বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট আরেক ঘূর্ণিঝড় ‘মিধিলি’। হামুন আঘাত হেনেছিল গত ২৪ অক্টোবর প্রধানত কক্সবাজার ও চট্টগ্রাম উপকূলে। সাম্প্রতিককালে দেশে বিশেষত ঘূর্ণিঝড়ে প্রাণহানি প্রায় শূন্যে নেমে এলেও এই ঘূর্ণিঝড়ে তিনজনের প্রাণহানি ঘটে; ক্ষতিগ্রস্ত হয় পাঁচ লাখ মানুষ। এতে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ফসলের। গত শুক্রবার আঘাত হানে মিধিলি।

ঘূর্ণিঝড় মিধিলির প্রভাবে বরিশাল-খুলনা থেকে শুরু করে চট্টগ্রাম পর্যন্ত উপকূল জুড়ে বয়ে যাওয়া ঝোড়ো বাতাস ও ভারী বৃষ্টিতে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। গাছ ও দেয়ালচাপা পড়ে সাতজনের মৃত্যু হয়েছে। অসংখ্য গাছপালা উপড়ে পড়েছে। বিনষ্ট হয়েছে খেতের ফসল ও শাকসবজি। ঝড়ের তাণ্ডবে উপকূলীয় এলাকায় খেতের ধানগাছ শুয়ে পড়েছে। এই ঘূর্ণিঝড়ে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে কৃষি খাত। প্রতিদিনের সংবাদের এক প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, বাগেরহাটে টানা বৃষ্টির পানিতে তলিয়ে গেছে কয়েক হাজার হেক্টর ধানের বীজতলা। ভোলার বোরহানউদ্দিনে ফসলের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। বিনষ্ট হয়েছে ৩০ শতাংশ আমন ধান এবং ৯০ শতাংশ শাকসবজি ও ডালজাতীয় ফসল। উপজেলায় চলতি মৌসুমে ১৮ হাজার ১৫০ হেক্টর জমিতে আমন আবাদ করা হয়। ‘মিধিলি’র আঘাতে ৫ হাজার ৪৬০ হেক্টর জমির ধান আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এ ছাড়া শাকসবজি, খেসারি, সরষে ফসলের ৯০ শতাংশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। চাঁদপুর জেলায় ১৯০ হেক্টর আধাপাকা ও পাকা আমন ধান এবং অন্যান্য ৪২০ হেক্টর জমির বিভিন্ন ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। জেলায় আধাপাকা ও পাকা রোপা আমান ১৯০ হেক্টর, সরষে ১৪০ হেক্টর, আগাম শীতকালীন সবজি ২৭০ হেক্টর ও বীজতলা (ধান) ১০ হেক্টর জমির ফসলের ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। পটুয়াখালীর দুমকিতে আমন ধান ও রবি মৌসুমের শাকসবজির ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। প্রায় ১৯৪০ হেক্টর প্রান্তিক এবং ১১৫০ হেক্টর ক্ষুদ্র আমন ও ইরি ধানের ক্ষতি হয়েছে। রবি মৌসুমের শাকসবজি, খেসারি ডাল সম্পূর্ণভাবে নষ্ট হয়ে গেছে।

পিরোজপুরের মঠবাড়িয়ায় ইরি আমন ধান, মৌসুমি সবজিখেত এবং ফলদ, বনজ গাছের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। বলেশ্বের নদী, খাল, পুকুর, জলাশয়, ধানখেতে পানি বৃদ্ধি পায়। চট্টগ্রামের মিরসরাইয়ে আমন ধান ও শীতকালীন সবজির ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। উপজেলায় প্রায় ১ হাজার ৫০০ হেক্টর জমির পাকা ও আধাপাকা ধানের ক্ষতি হয়েছে। ৪৪ হেক্টর জমির শীতকালীন সবজি নষ্ট হয়ে গেছে। জমির আমন ধান নুইয়ে পড়েছে। দু-এক দিনের মধ্যে কাটার উপযুক্ত পাকা ধানের বেশি ক্ষতি হয়েছে। সন্দ্বীপ উপজেলার প্রায় অনেক জমির রোপণকৃত আমন ও ইরি ফসল বৃষ্টিতে তলিয়ে গেছে। সবজির খেত ক্ষতির মুখে পড়েছে। ঘূর্ণিঝড় মিধিলি না হলে আমন উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে যেত।

আমনের ক্ষতি বোরো দিয়ে পূরণ করা সম্ভব। তবে বোরোর বীজতলার যে ক্ষতি হয়েছে, পুনরায় বীজতলা তৈরি করে তা পূরণ করা যেতে পারে। শাকসবজির জমিতে অন্য ফসলের আবাদ গড়ে তোলা যায়। এর জন্য আর্থিক ও অন্যান্য সহযোগিতা প্রয়োজন। সরকারকে উপদ্রুত অঞ্চলগুলোর ক্ষয়ক্ষতি নিরূপণ করে ক্ষতিগ্রস্তদের পাশে দাঁড়াতে হবে, যাতে তারা আবার ফসলাদির উৎপাদনে নিজেদের নিয়োজিত করতে পারেন।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close