reporterঅনলাইন ডেস্ক
  ১৯ নভেম্বর, ২০২৩

নির্বাচনী ট্রেনের যাত্রী হোক সব রাজনৈতিক দল

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পরই শুরু হয়ে গেছে নির্বাচনী ডামাডোল। জোরেশোরে ভোটের প্রস্তুতি শুরু করেছে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ ও তার নেতৃত্বাধীন ১৪-দলীয় জোট। এ ছাড়া সংসদের বিরোধী দল জাতীয় পার্টিসহ (জাপা) অন্য ছোট দলগুলোও নির্বাচনের প্রস্তুতি নিচ্ছে। তবে ব্যতিক্রম শুধু বিএনপি। তারা নির্বাচনে আসবে না বলেই জানিয়ে দিয়েছে। হরতাল-অবরোধ নিয়ে আন্দোলনে মাঠে রয়েছে দলটি।

সারা দেশে নির্বাচনের আবহ তৈরির লক্ষ্যে কার্যক্রম শুরু করেছে আওয়ামী লীগ। গতকাল শনিবার বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ের দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে উপস্থিত হয়ে জাতীয় সংসদ নির্বাচনের জন্য দলীয় মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করেছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। দলের সভাপতির মনোনয়ন ফরম সংগ্রহের মাধ্যমে জাতীয় সংসদ নির্বাচনের মনোনয়ন ফরম বিক্রির কার্যক্রম শুরু করে ক্ষমতাসীন দলটি। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নিজের এলাকা গোপালগঞ্জ-৩ আসনের জন্য মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করেছেন। এরপর উৎসবের আমেজে ফরম সংগ্রহ করেন মনোনয়নপ্রত্যাশী প্রার্থীরা। এর মাধ্যমে নির্বাচনের আমেজ পুরোদমে শুরু হয়ে গেল। দলের নীতিনির্ধারকরা বলছেন, এখন থেকে আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সব কার্যক্রমই হবে নির্বাচনকেন্দ্রিক। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রাষ্ট্রের দৈনন্দিন কাজের পাশাপাশি প্রতিদিনই দলের কর্মকাণ্ডে যুক্ত থাকবেন।

প্রসঙ্গত, ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগের দিন থেকে ভোটগ্রহণ শেষ হওয়া পর্যন্ত রাজনৈতিক সহিংসতায় কমপক্ষে ১৯ জন নিহত হয়েছিল। নির্বাচনের আগের রাতেই সারা দেশে পাঁচশোর মতো ভোটকেন্দ্রে হামলা এবং অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছিল। সেই ৫ জানুয়ারি ২০১৪ সালের আগে নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবিতে বিএনপি-জামায়াত জোটের আন্দোলন কর্মসূচি চলেছে বছর জুড়ে। শেষ পর্যন্ত তারা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করা থেকে বিরত থাকে এবং দেশের মানুষ আন্দোলনের নামে নৃশংসতা, অগ্নিসন্ত্রাস প্রত্যক্ষ করে এবং সেই সঙ্গে পোহায় সীমাহীন ভোগান্তি। এরপর ২০১৮ সালের ১০ ডিসেম্বর একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে টানা তৃতীয়বারের মতো ক্ষমতায় আসে আওয়ামী লীগ। এই নির্বাচনে বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশন ইভিএম ব্যবহারের সিদ্ধান্ত নিলে বিএনপিসহ বেশ কয়েকটি দল এর বিরোধিতা করে। ২০০৮ সালের সংসদ নির্বাচনের পর প্রথমবারের মতো এই নির্বাচনে সব রাজনৈতিক দল অংশ নিয়েছিল, ফলে সে বিবেচনায় ২০১৮ সালের এই জাতীয় নির্বাচনের একটা ভিন্ন দিক ছিল। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে সরকার পতনের এক দফা দাবিতে ২৮ অক্টোবর নয়াপল্টনে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে মহাসমাবেশ ডাকে বিএনপি। সমাবেশ চলাকালে একপর্যায়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন তারা। এ সময় পিটিয়ে হত্যা করা হয় পুলিশের এক সদস্যকে। ওই দিন আগুনসন্ত্রাস, সহিংসতা ও ভাঙচুরের রাজনীতি দিয়ে বিএনপি-জামায়াত স্বরূপে ফিরেছে বলেই ধারণা করা হয়।

বলা বাহুল্য, সাংবিধানিক প্রক্রিয়ার মধ্য থেকেই রাজনৈতিক দলগুলো নির্বাচনে অংশ নিতে হবে। সংবিধানের বাইরে যাওয়ার সুযোগ নেই। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সব রাজনৈতিক দলকে নির্বাচনে অংশ নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। গত শুক্রবার তেজগাঁওয়ে আওয়ামী লীগের নির্বাচন পরিচালনা কমিটির সভায় তিনি বলেন, ‘নির্বাচনের দরজা সবার জন্য উন্মুক্ত। সবারই এগিয়ে আসতে হবে এবং নির্বাচনে অংশ নিতে হবে, জনগণের কাছে গিয়ে ভোট চাইতে হবে।’ সব দল সাংবিধানিক প্রক্রিয়ার মাধ্যমেই নির্বাচনে অংশ নেবে- সেই প্রত্যাশা আমাদেরও।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close