reporterঅনলাইন ডেস্ক
  ০২ অক্টোবর, ২০২৩

উৎসে কর না নেওয়ার সিদ্ধান্ত প্রশংসনীয়

ফ্রিল্যান্সার বা মুক্ত পেশাজীবীদের কাজের পরিমাণ দিন দিন বাড়ছে বিশ্বজুড়ে। কারণ বেশির ভাগ উন্নত দেশেই স্থায়ী কর্মীর বদলে আউটসোর্সের মাধ্যমে কাজ করানোর বিষয়টি বর্তমানে বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। কারণ আউটসোর্স করলে প্রতিষ্ঠানের পরিচালনা খরচ কম হওয়ায় লাভের পরিমাণ বেশি হয়। এজন্য উন্নত বিশ্বের অনেক প্রতিষ্ঠানই বর্তমানে তাদের কাজের কিছু অংশ নিয়মিত আউটসোর্স করে। ফলে অনলাইন মার্কেটপ্লেসে কাজের পরিমাণ বৃদ্ধি পাওয়ার পাশাপাশি ফ্রিল্যান্সার বা মুক্ত পেশাজীবীদের চাহিদাও বাড়ছে।

বাংলাদেশে এখন ঘরে বসে ইন্টারনেটে আয় বা অনলাইনে কাজ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। চাকরির চেয়ে স্বাধীনভাবে কাজ করার সুযোগ নিয়ে অনেকেই এখন ঝুঁকছেন এই ফ্রিল্যান্সিংয়ে। বর্তমানে বিশ্বে আউটসোর্সিং তালিকায় বাংলাদেশ শুরুর দিকে রয়েছে। ফ্রিল্যান্সিংয়ের সঙ্গে সংশ্লিষ্টদের ধারণা, দেশে ১০ লাখের বেশি ফ্রিল্যান্সার রয়েছেন, যারা বিশ্বের বিভিন্ন মার্কেটপ্লেসগুলোতে কাজ করেছেন। আর এদের বার্ষিক আয় এক বিলিয়ন ডলারের বেশি। বিশাল এ জনগোষ্ঠীর অধিকাংশ তরুণ। তারা চাকরির বদলে ফ্রিল্যান্সিংকেই পেশা হিসেবে নিয়েছেন। ফ্রিল্যান্সিংয়ে আগ্রহীদের সরকারিভাবে প্রশিক্ষণ দেওয়া ছাড়াও বিভিন্ন বেসরকারি প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠেছে। গড়ে উঠছে ফ্রিল্যান্সারদের নিজস্ব প্রতিষ্ঠান বা স্টার্টআপ। অনেকেই এ খাতে ভালো করে উদাহরণ সৃষ্টি করেছেন। অনেকেই বিশ্ব দরবারে বাংলাদেশকে তুলে ধরছেন। ‘আইডেনটিটি ক্রাইসিস’ নয়, বাংলাদেশের পরিচয় তুলে ধরছেন তারা।

ফ্রিল্যান্সারদের আয়ের বিপরীতে ১০ শতাংশ হারে উৎসে কর দিতে হবে বলে সম্প্রতি একটি সংবাদ প্রকাশিত হলে সমালোচনা দেখা দেয়। ডলার সংকটের এ সময় এমন কর আরোপ করা হলে ফ্রিল্যান্সাররা রেমিট্যান্স দেশে আনবেন না বলে আশঙ্কা দেখা দেয়। করারোপের এ খবর শোনার পর দেশের ফ্রিল্যান্সারদের মধ্যে উদ্বেগ সৃষ্টি হয়। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এ নিয়ে বিরূপ প্রতিক্রিয়াও জানিয়েছেন অনেকে। তবে গত শনিবার এ বিষয়ে অবস্থান পরিষ্কার করলেন আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক। তিনি বলেছেন, ‘বাংলাদেশের ফ্রিল্যান্সারদের কোনো উৎসে কর দিতে হবে না। তারা ট্যাক্সের আওতার বাইরে। বিভিন্ন মহলে গুজব ছড়ানো হচ্ছে যে, ফ্রিল্যান্সারদের কর দিতে হবে। এটা করে একটি চক্র বাংলাদেশের ভাবমূর্তি নষ্ট করার চেষ্টা করছে।’ গত কয়েক বছরে বাংলাদেশের ফ্রিল্যান্সিং কাজের বাজারের ব্যাপক বিস্তৃতি ঘটেছে। তরুণরা আপওয়ার্ক, ফাইভআর, ফ্রিল্যান্সার, গুরু, পিপলপারআওয়ারের মতো বিশ্বের নেতৃস্থানীয় চাকরির বাজারগুলোতে অনলাইনে কাজ করে বৈদেশিক মুদ্রা দেশে আনছেন। এর পাশাপাশি দেশের মধ্যে ব্লগ লিখে ও অডিও-ভিজ্যুয়াল কনটেন্ট বানিয়ে গুগল, ফেসবুক থেকেও আয় করছেন বহু মানুষ। মার্কেটপ্লেসগুলোতে অ্যাকাউন্টের হিসাবে, ফ্রিল্যান্সিংয়ে শীর্ষস্থানীয় দেশ ভারতের পরই রয়েছে বাংলাদেশের অবস্থান। এ অবস্থায় কর বসালে সেটা ফ্রিল্যান্সারদের জন্য সুখকর হতো না।

প্রযুক্তিবান্ধব আওয়ামী লীগ সরকার ফ্রিল্যান্সিং খাতের উন্নয়ন ও বিকাশে ফ্রিল্যান্সারদের জন্য প্রশিক্ষণ, উদ্যোক্তা হিসেবে তৈরি করতে অনুদান দেওয়াসহ নানামুখী কার্যক্রম বাস্তবায়ন করেছে। কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ে সরকারের উন্নয়ন অগ্রযাত্রাকে ব্যাহত করতে এবং ফ্রিল্যান্সারদের বিভ্রান্ত করতে একটি মহল নানা অপপ্রচার চালিয়ে যাচ্ছে। এটা সরকার ও ফ্রিল্যান্সার- উভয় পক্ষের জন্যই ক্ষতিকর। আমরা আশা করব, সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ এসব অপপ্রচারের বিষয়ে সতর্ক থাকবে। একই সঙ্গে ফ্রিল্যান্সারদের জন্যও এমন কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়া ঠিক হবে না যাতে তারা নিরুৎসাহিত হন।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close