reporterঅনলাইন ডেস্ক
  ০৩ জুন, ২০২৩

স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণের বাজেট

বাংলাদেশে গত দেড় দশকে অবিশ্বাস্য উন্নয়ন হয়েছে। বিগত বছরগুলোতে দেশে খাদ্যশস্যের উৎপাদন বেড়েছে বহুগুণ, খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন করেছে দেশ। বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নের যে গতিধারা তা অভূতপূর্ব। আগামী ২০৪১ সালে বাংলাদেশকে উন্নত দেশ হিসেবে গড়ে তোলার আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সেই বাংলাদেশ হবে স্মার্ট বাংলাদেশ। এই অঙ্গীকার সামনে রেখে ‘উন্নয়ন অগ্রযাত্রায় দেড় দশক পেরিয়ে স্মার্ট বাংলাদেশের অভিমুখে’ শিরোনামে ২০২৩-২৪ অর্থবছরের জন্য ৭ লাখ ৬১ হাজার ৭৮৫ কোটি টাকার জাতীয় বাজেট পেশ করা হয়েছে জাতীয় সংসদে।

এবারের বাজেটটি হলো স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণের পথে প্রথম বাজেট। বাজেটে সংগত কারণেই স্বাস্থ্য, কৃষি, খাদ্য উৎপাদন ও ব্যবস্থাপনাকে অধিক গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। অর্থবছরের পুরো সময় থাকবে সরকারের নানা ধরনের খাদ্যবান্ধব কর্মসূচি এবং বাড়ানো হয়েছে সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির আওতা। এবারের বাজেটের মূল দর্শন হলো ২০৪১ সালের মধ্যে সুখী-সমৃদ্ধ উন্নত স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণ। গত দেড় দশকে বর্তমান সরকার বাংলাদেশের টেকসই উন্নয়নের ভিত্তিপ্রস্তর তৈরি করে দিয়েছে। এর ধারাবাহিকতায় স্মার্ট বাংলাদেশ চারটি মূল স্তম্ভের ওপর প্রতিষ্ঠিত হবে। এগুলো হলো- স্মার্ট সিটিজেন, স্মার্ট গভর্নমেন্ট, স্মার্ট সোসাইটি এবং স্মার্ট ইকোনমি।

করোনা মহামারির দাপট কেটে যেতে না যেতেই শুরু হয়ে যায় রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ। সরবরাহ সংকটে জিনিসপত্রের দাম চড়া, লণ্ডভণ্ড বিশ্ব অর্থনীতি। এর প্রভাবে প্রবাসী আয়ের গতি কমে যায়। সংকটে পড়ে রপ্তানি খাত। ডলারের বিপরীতে ধারাবাহিকভাবে কমতে থাকে টাকার মান। পণ্য আমদানির জন্য ঋণপত্র (এলসি) খুলতে গেলে কোনো কোনো ব্যাংক ফিরিয়ে দেয়। আবার রপ্তানি আয় তুলতে গেলেও সহজে দেয় না। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে দেশে এমন পরিস্থিতি আর হয়নি। গত এক বছরে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভে পতন হয়েছে। রাজস্ব আয়ও কাঙ্ক্ষিত পরিমাণে হচ্ছিল না। এই অবস্থার মধ্যে সম্ভাবনাময় এক বাজেট পেশ করা হলো। বাংলাদেশের ইতিহাসে একে সবচেয়ে অভিলাষী বাজেট বলছেন বিশ্লেষকরা।

২০২৩-২৪ অর্থবছরের বাজেটের আকার ৭ লাখ ৬১ হাজার ৭৮৫ কোটি টাকা, যা জিডিপির ১৫ দশমিক ২ শতাংশ। অর্থমন্ত্রী ২০২২-২৩ অর্থবছরের জন্য ৬ লাখ ৭৮ হাজার ৬৪ কোটি টাকার বাজেট পেশ করেছিলেন। তবে সংশোধিত হয়ে এই বাজেটের আকার কমে দাঁড়ায় ৬ লাখ ৬০ হাজার ৫০৭ কোটি টাকা, যা জিডিপির ১৪ দশমিক ৯ শতাংশ। সংশোধিত বাজেটের তুলনায় প্রস্তাবিত বাজেটের আকার বাড়ছে ১ লাখ ১ হাজার ২৭৮ কোটি টাকা। আগামী অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে রাজস্ব আয় প্রাক্কলন করা হয়েছে ৫ লাখ কোটি টাকা, যা প্রাক্কলিত জিডিপির ১০ শতাংশ। এর মধ্যে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড উৎস থেকে ৪ লাখ ৩০ হাজার কোটি টাকা সংগ্রহ করা হবে। এনবিআর বহির্ভূত সূত্র থেকে কর রাজস্ব প্রাক্কলন করা হয়েছে ২০ হাজার কোটি টাকা। কর-বহির্ভূত খাত থেকে রাজস্ব আহরিত হবে আরো ৫০ হাজার কোটি টাকা। প্রস্তাবিত বাজেটে অনুদান ব্যতীত মোট ঘাটতি নির্ধারণ করা হয়েছে ২ লাখ ৬১ হাজার ৭৮৫ কোটি টাকা, যা জিডিপি ৫ দশমিক ২ শতাংশ।

প্রস্তাবিত বাজেট গণমুখী এবং উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রেখে উপস্থাপন করা হয়েছে। বাজেটকে বিশ্বমন্দা-পরবর্তী অর্থনীতি ঘুরে দাঁড়ানোর বাস্তবায়নযোগ্য বাজেট বলেও মনে করা হচ্ছে। দেশের ধনী, গরিব, মধ্যবিত্ত- সবাই এই বাজেটে উপকৃত হবে- এটাই আমাদের প্রত্যাশা।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close