reporterঅনলাইন ডেস্ক
  ২৯ মার্চ, ২০২৩

ডিএমপির নির্দেশনা বাস্তবায়িত হোক

নানামুখী জটিলতায় ক্রমেই দুর্ভোগময় হচ্ছে রাজধানীবাসীর জীবন। এর মধ্যে সবচেয়ে প্রকট ও কঠিন সমস্যাটি হলো যানজট। এটা নিয়ে নানা রকমের উদ্যোগের কথা শোনা গেলেও কার্যত এ সমস্যার সমাধানের কোনো উদ্যোগই ফলপ্রসূ হচ্ছে না, বরং তা দিনে দিনে আরো প্রকট হচ্ছে। শুরু হয়েছে পবিত্র রমজান। কিন্তু অফিস-আদালত শেষ করে মানুষ যে যথাসময়ে ঘরে ফিরে যাবে তার কোনো জো নেই। রোজার প্রথম কর্মদিবসে রাজধানী জুড়ে ছিল তীব্র যানজট। সকাল থেকে বিভিন্ন সড়কে যানবাহনের চাপ কম থাকতে দেখা গেলেও বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে যানবাহন ও যাত্রী পথচারীদের চলাচল বাড়তে শুরু করে। ফলে বিভিন্ন সড়কে তীব্র যানজট সৃষ্টি হয়। এতে চরম ভোগান্তির শিকার হন নগরবাসী।

শুক্রবার (২৪ মার্চ) থেকে রমজানের প্রথম রোজা শুরু হয়। এরই মধ্যে শনিবার সাপ্তাহিক ছুটি ও রবিবার সরকারি ছুটি ছিল। তাই রমজানের প্রথম তিন রোজায় রাজধানীর সড়কগুলো ছিল অনেকটাই ফাঁকা। তবে সোমবার রমজানের প্রথম কর্মদিবস হওয়ায় সরকারি-বেসরকারি অফিস, আদালত, স্কুল-কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয় একসঙ্গে খোলায় সড়কে তীব্র যানজট সৃষ্টি হয়। বিশেষ করে উত্তরা হাউসবিল্ডিং, বিমানবন্দর হয়ে খিলক্ষেত বিশ্বরোড হয়ে র‌্যাডিসনের সামনে দিয়ে বনানী মহাখালী পর্যন্ত সড়কে, অন্যদিকে মহাখালী থেকে সাতরাস্তা, মগবাজার হয়ে রমনা, মৎস্যভবন এবং মহাখালী থেকে জাহাঙ্গীরগেট হয়ে ফার্মগেট, কারওয়ান বাজার হয়ে বাংলামোটর-শাহবাগ হয়ে মৎস্যভবন-প্রেস ক্লাব পর্যন্ত ছিল যানবাহনের প্রচণ্ড চাপ। এ ছাড়া খিলক্ষেত থেকে কুড়িল হয়ে নতুনবাজার বাড্ডা, রামপুরা, মালিবাগ হয়ে গুলিস্তান পর্যন্ত সড়কেও একই অবস্থা। ফলে যাত্রীরা স্থবির হয়ে থাকা যানবাহন থেকে নেমে হেঁটেই যার যার গন্তব্যে ছুটতে থাকেন। যদিও রমজান মাসে রাজধানীতে যানজট ও তার ফলে দুর্ভোগ এড়িয়ে নির্বিঘ্নে নিরাপদে চলাচল করার জন্য ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের ট্রাফিক বিভাগের পক্ষ থেকে সংশ্লিষ্ট সবার জন্য ১৫টি নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। এগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য কয়েকটি হচ্ছে- মহানগরীতে দূরপাল্লার ও আন্তজেলা বাস টার্মিনালের অভ্যন্তরে কোনো বাসই সড়কে রেখে বা থামিয়ে যাত্রী ওঠাবে না। যাত্রীরা টার্মিনালের ভেতরে থাকা অবস্থায় বাসের আসন গ্রহণ করবেন। সংশ্লিষ্ট বাসের প্রতিনিধিদের এ বিষয়টি খেয়াল রাখতে হবে। আন্তজেলা ও দূরপাল্লার বাসগুলো টার্মিনাল-সংলগ্ন প্রধান সড়কের অংশ দখল করে দাঁড়াবে না। কিন্তু এই নির্দেশনা কতটা বাস্তবায়িত হচ্ছে এদিকে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে অবশ্যই নজর দিতে হবে। কারণ নিয়ম রক্ষার চেয়ে নিয়মভঙ্গের প্রতি আমাদের ঝোঁক বেশি। পৃথিবীর অনেক দেশের বড় বড় শহরে যানজটের সমস্যা আছে, কিন্তু ঢাকা মহানগরের যানজট যেন সবাইকে ছাড়িয়ে গেছে। এই দুর্ভাগ্যজনক পরিণতি আমাদের আর কত দিন বহন করতে হবে- সেটাই প্রশ্ন?

বলা সংগত, ঢাকার যানজট শুধু সড়কগুলোতে যানবাহন চলাচলে বিশৃঙ্খলা ও ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণের অব্যবস্থাপনা ও অদক্ষতার ফল নয়। আরো কয়েকটি বড় কারণ আছে। যেমন : প্রায় দুই কোটি মানুষের এই মহানগরে সড়কের তুলনায় যানবাহনের যে প্রাচুর্য সৃষ্টি হয়েছে, তা একেবারেই অস্বাভাবিক। বিদ্যমান সড়কব্যবস্থায় সর্বোচ্চ কতসংখ্যক যানবাহন স্বাভাবিক গতিতে চলাচল করতে পারে, তা বিবেচনায় না নিয়ে নিয়ন্ত্রণহীনভাবে যানবাহন নিবন্ধন করা হচ্ছে বছরের পর বছর ধরে। যানজট কমাতে চাইলে এই সমস্যাটিই সবকিছুর আগে সমাধান করতে হবে। এ ছাড়া নির্ধারণ করতে হবে ঢাকা মহানগরে কতসংখ্যক যানবাহন চলাচলের অনুমতি দেওয়া হবে। পাশাপাশি ব্যক্তিগত গাড়ির সংখ্যা কমিয়ে বড় আকারের বাসের সংখ্যা বাড়ানোর নীতি গ্রহণ ও বাস্তবায়ন করা গেলে অনেকাংশে এ সমস্যার লাঘব হতে পারে বলে আমাদের বিশ্বাস। কিন্তু বর্তমানে রোজায় রাজধানীর যানজট নিরসনে ডিএমপির নির্দেশনা বাস্তবায়িত হোক। আর এটাই আমাদের প্রত্যাশা।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close