সাকিবুল হাছান

  ২৩ মার্চ, ২০২৩

মুক্তমত

স্বাগতম মাহে রমজান

রহমত, মাগফিরাত আর নাজাত নিয়ে দুয়ারে কড়া নাড়ছে ১৪৪৪ হিজরির রমজান মাস। ২৩ এপ্রিল (বৃহস্পতিবার) দেশের আকাশে চাঁদ দেখা গেলে ২৪ এপ্রিল শুরু হবে পবিত্র রমজান। আমরা আল্লাহতায়ালার সন্তুষ্টি অর্জনের লক্ষ্যে রোজা রাখা শুরু করব, ইনশাআল্লাহ।

রমজান মহান আল্লাহর অপূর্ব রহমতে সমৃদ্ধ এবং তার সান্নিধ্য লাভের সুবর্ণ সুযোগসংবলিত একটি মাস। এ মাস মুমিনের প্রার্থিত এবং ইবাদতের বসন্ত হিসেবে পরিচিত। মাহে রমজানের প্রতি ইমানদারদের অনুরাগ ও আগ্রহ সীমাহীন। মহিমান্বিত এ মাসের মর্যাদা অপরিসীম।

রোজার মতো গুরুত্বপূর্ণ আমলের জন্য মহান আল্লাহ রমজান মাসকে নির্ধারিত করেছেন। রমজান মাস মর্যাদাপূর্ণ হওয়ার জন্য এটিই যথেষ্ট। আল্লাহ বলেন, ‘সুতরাং তোমাদের মধ্যে যারা এই মাস পাবে তারা যেন এই মাসে রোজা পালন করে।’ (সুরা বাকারা, আয়াত : ১৮৫)

পবিত্র এ রমজানে মুমিন মুত্তাকিদের আধ্যাত্মিক-বাগানে ঘটবে নব-বসন্তের সমারোহ। জান্নাতি আনন্দে মুমিন মুত্তাকির হৃদয়গুলো আলোকিত হয়ে উঠবে। আল্লাহপাকের পবিত্র বান্দারা জানে, রমজানের রহমতের প্রথম দশকে রহমতের বৃষ্টির পানি দ্বারা তাদের সিক্ত করবেন এবং তাদের তৃষ্ণা মেটাবেন। পবিত্র কোরআনে আল্লাহতায়ালা মাহে রমজানের গুরুত্ব সম্পর্কে বলেন-

‘হে ইমানদাররা! তোমাদের প্রতি রোজা ফরজ করা হয়েছে, যেমন তোমাদের পূর্ববর্তী লোকদের প্রতি ফরজ করা হয়েছিল, যাতে তোমরা মুত্তাকি হতে পারো।’ (সুরা বাকারা : আয়াত ১৮৩)

পবিত্র মাহে রমজানের উপবাস পালনকে ইসলাম পূর্ণমাত্রার আত্মোৎসর্গ মনে করে থাকে। যিনি রোজা পালন করেন, তিনি যে শুধু শরীর রক্ষাকারী খাদ্যপানীয় থেকেই বিরত থাকেন; তা নয় বরং তিনি সন্তানাদি জন্মদান তথা বংশবৃদ্ধির ক্রিয়াকলাপ থেকেও দূরে থাকেন এবং সব পাপকাজ থেকেও বিরত থাকেন। এ ছাড়া তার হৃদয় এটাও বলে যে, যেহেতু আমি আল্লাহর জন্য রোজা রাখছি এবং সব ধরনের পাপকাজ থেকে বিরত থাকার অঙ্গীকার করছি তাই প্রয়োজনবোধে আমি আমার প্রভু ও সৃষ্টিকর্তার খাতিরে আমার সবকিছু, এমনকি আমার জীবন পর্যন্ত কোরবানি করে দিতে দ্বিধাবোধ করব না।

তার পরও আমাদের মধ্যে অনেকেই এই মাসের ইবাদত-বন্দেগি থেকে গাফেল থাকি। অন্যান্য মাসের মতোই এই পবিত্র মাসটিকে অবহেলায় কাটিয়ে দিই। আমরা যারা পবিত্র এই মাস পেয়েছি তারা সৌভাগ্যবান। অনেকেই হয়তো রমজান পাওয়ার আশায় ছিল কিন্তু রমজান আসার আগেই না ফেরার দেশে চলে গেছেন। তাই আমাদের এ পবিত্র রমজান মাসের পুরো ফায়দা অর্জন করতে হবে। আমাদের প্রত্যেকের উচিত হবে, পবিত্র রমজানের মাহাত্ম্য ও গুরুত্ব বুঝে রমজান থেকে কল্যাণ অর্জন করা।

রমজান মাস জাহান্নাম থেকে মুক্তির মাস। জাবির (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘আল্লাহ রমজান মাসের প্রত্যেক রাতে ও দিনে অসংখ্য লোককে জাহান্নাম থেকে মুক্তি দিয়ে থাকেন।’ (শুআবুল ইমান, হাদিস : ৩৬০৫)

আমাদের সবার উচিত হবে, রমজানের কল্যাণ থেকে পুরোপুরি ফায়দা হাসিল করা, রমজানের কল্যাণসমূহ দ্বারা নিজেদের সুশোভিত করা। যেন এ রমজানে কোরআন তেলাওয়াতের গুঞ্জনে মুখরিত হয়ে উঠে আমাদের চারপাশ। যেন কোরআনের আলোয় আলোকিত হয় সমগ্র বিশ্ব। মহান আল্লাহপাকের দরবারে এই ফরিয়াদ, হে আল্লাহ! আপনি আমাদের ক্ষমা করুন এবং পবিত্র এই রমজানে আপনার রহমত, মাগফিরাত আর নাজাত পেয়ে আমরা যেন ধন্য হতে পারি। আমিন।

লেখক : শিক্ষার্থী ঢাকা কলেজ, ঢাকা

[email protected]

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close