reporterঅনলাইন ডেস্ক
  ২০ মার্চ, ২০২৩

সহযোগিতার ‘মাইলফলকে’ বাংলাদেশ-ভারত

বাংলাদেশ ও ভারতের দ্বিপক্ষীয় বোঝাপড়া আরো নিবিড় হলো। দুদেশের মধ্যে যৌথভাবে মৈত্রী তেল পাইপলাইন উদ্বোধন করেলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। গত শনিবার একটি ভার্চুয়াল অনুষ্ঠানে যৌথভাবে ‘বন্ধুত্বে’র এই প্রকল্পের সূচনা করেন দেশ দুটির দুই প্রধানমন্ত্রী। এই পাইপলাইনের মাধ্যমে ভারত থেকে পরিশোধিত ডিজেল পৌঁছাবে বাংলাদেশে। দুদেশের মধ্যে এই প্রথম পাইপলাইন সংযোগ চালু হলো। এত দিন ভারত থেকে ডিজেল রেলপথে আমদানি করা হতো।

বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশন (বিপিসি) সূত্র জানায়, ১৩০ কিলোমিটার দীর্ঘ এই পাইপলাইনের মাধ্যমে বাংলাদেশে ডিজেল সরবরাহ করবে ভারত। পাইপলাইনটি বাংলাদেশের ভূখে - রয়েছে ১২৫ কিলোমিটার এবং ভারতের অভ্যন্তরে রয়েছে ৫ কিলোমিটার। এর মাধ্যমে ভারত থেকে হাই স্পিড ডিজেল (এইচএসডি) সরবরাহ করা যাবে বছরে এক মিলিয়ন টন। পশ্চিমবঙ্গের শিলিগুড়ি থেকে দিনাজপুরের পার্বতীপুরে মেঘনা পেট্রোলিয়াম ডিপো পর্যন্ত পাইপলাইনের মাধ্যমে ভারত থেকে বাংলাদেশে ডিজেল আমদানির জন্য ২০১৭ সালে একটি দীর্ঘমেয়াদি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। ২০১৮ সালের ১৮ সেপ্টেম্বর ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি পাইপলাইন স্থাপন কাজের ভিত্তিপ্রস্তর করেন। ১৫ বছর মেয়াদি এ প্রকল্প ভারতের নুমালীগড় রিফাইনারি লিমিটেড এবং বাংলাদেশের মেঘনা পেট্রোলিয়াম লিমিটেড যৌথভাবে বাস্তবায়ন করছে।

মেঘনা পেট্রোলিয়ামের কর্মকর্তারা বলেছেন, পাইপলাইনে ডিজেল আমদানির বিষয়টি একটি যুগান্তকারী ঘটনা। এর মাধ্যমে বাংলাদেশে নতুন এক দিগন্ত উন্মোচিত হয়েছে। ডিজেল সরবরাহ এখন আরো অনেক সহজ হয়ে আসবে এবং ব্যয় কম হবে। তেলের ঘাটতিও কমে যাবে। চুক্তি অনুযায়ী, প্রথম তিন বছর বার্ষিক দুই লাখ টন করে, পরের তিন বছর তিন লাখ টন করে, পরের চার বছর পাঁচ লাখ টন করে এবং পরবর্তী বছরগুলোতে বার্ষিক ১০ লাখ টন করে জ্বালানি তেল ভারত থেকে বাংলাদেশে আসবে।

‘বাংলাদেশ-ভারত মৈত্রী পাইপলাইনকে’ দুদেশের জন্য একটি মাইলফলক অর্জন বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আর প্রকল্পের সূচনা করে শেখ হাসিনার নেতৃত্বের ভূয়সী প্রশংসা করেন নরেন্দ্র মোদি। শেখ হাসিনা বলেন, ফ্রেন্ডশিপ পাইপলাইন আমাদের দুই বন্ধুপ্রতিম দেশের মধ্যে সহযোগিতা ও উন্নয়নের একটি মাইলফলক অর্জন। এটি বাংলাদেশের জ্বালানি নিরাপত্তার পাশাপাশি অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ত্বরান্বিত করবে। নরেন্দ্র মোদি বলেন, গত কয়েক বছরে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশের ধারাবাহিক অগ্রগতি হয়েছে। বাংলাদেশের সেই উন্নয়নযাত্রার শরিক হতে পেরে প্রতিটি ভারতবাসী গর্ব অনুভব করছেন।’ দুই সরকার প্রধানের কথায় এটাই বোঝা গেল যে, ভারত-বাংলাদেশ মৈত্রী পাইপলাইন চালুর মাধ্যমে ভারত থেকে বাংলাদেশে জ্বালানি তেল সরবরাহে একটি টেকসই, নির্ভরযোগ্য, সাশ্রয়ী ও পরিবেশবান্ধব ব্যবস্থা হলো। এটি দুই বন্ধুপ্রতিম প্রতিবেশীর মধ্যে জ্বালানি নিরাপত্তার ক্ষেত্রে সহযোগিতা আরো জোরদার করবে।

ভারত আমাদের অকৃত্রিম বন্ধু, ভাতৃপ্রতিম প্রতিবেশী রাষ্ট্র। আমাদের হাজার বছরের সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যের অবাধপ্রবাহ রয়েছে দুদেশের মধ্যে। ঐতিহাসিক ও ভৌগোলিক সেতুবন্ধ দুদেশের সম্পর্ককে আরো ঘনিষ্ঠ থেকে ঘনিষ্ঠতর করেছে এই পাইপলাইন উদ্বোধনের মাধ্যমে। আমরা আশা করি, দুদেশের মধ্যে এই বন্ধুত্ব অটুট থাকবে এবং সম্পর্ক আরো এগিয়ে যাবে বহুদূর।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close