reporterঅনলাইন ডেস্ক
  ১৮ মার্চ, ২০২৩

রোজায় জিম্মি করার চিন্তা পরিহার করতে হবে

রমজান হলো সংযম, আত্মনিয়ন্ত্রণ তথা তাকওয়ার মাস। এ মাসের উদ্দেশ্যই তাকওয়া অর্জন। তাকওয়া অর্থ আল্লাহর ভয়। আল্লাহর ভয়ে সব মন্দ কাজ থেকে বিরত থাকা। সংযম অবলম্বন করা। এই সংযম সব শ্রেণি-পেশার মানুষের জন্য। ব্যবসায়ী ও বিক্রেতারা অতি মুনাফার লোভ সংযত করবেন, কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি থেকে বিরত থাককেন। পাশাপাশি ভোক্তা ও ক্রেতারা অহেতুক অধিক পরিমাণে পণ্য ক্রয় করে অন্যদের জন্য সংকট সৃষ্টি করবেন না। তবেই রমজানের উদ্দেশ্য সফল হবে। রহমতের অফুরন্ত ধারা প্রবাহিত হবে। মাগফিরাত ও নাজাত লাভ হবে। সংকট থেকে মুক্তি পাবে সাধারণ মানুষ।

বলা সংগত, সেই প্রবণতা আমাদের সমাজে খুব একটা দেখা যায় না। রমজানকে কেন্দ্র তরে অসাধু ব্যবসায়ীরা পণ্যের দাম বাড়িয়ে দেয়। এক্ষেত্রে তাদের যেন আরো অগ্রগতি হয়েছে, তারা এখন রমজান শুরুর মাসখানেক আগে থেকেই নিত্যপণ্যের দাম বাড়িয়ে দেন। সত্যিকার অর্থে তাকওয়া অর্জন কি সেটাই? অনেকে হয়তো বোঝেন না বা বুঝতে চান না। পবিত্র রমজান মাসে রোজাদারদের কাছে ন্যায্যামূল্যে বা কম মূল্যে পণ্য বিক্রি করেও যে লাভবান হওয়া যায় সেটা অনেক ব্যবসায়ী বুঝতে চান না। আর এই লাভটা হলো পারলৌকিক। কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্য, মানুষ ঠকানোর মানসিকতা তারা পরিহার করতে পারেন না। অতি মুনাফা লাভের আশায় নিত্যপণ্যের কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করে দাম বাড়িয়ে দেন। আর এতে দুর্ভোগে পড়ে সাধারণ মানুষ, বিশেষত যারা নিম্নআয়ের। এ অবস্থায় পবিত্র রমজানে অসাধু ব্যবসায়ীরা যাতে নিত্যপণ্যের সংকট সৃষ্টি করতে না পারেন সেদিকে সবাইকে সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেছেন, ‘রমজান মাসে অনেকে পণ্যের দাম বাড়ানোর চেষ্টা করেন। এটা অত্যন্ত গর্হিত কাজ। রমজান মাস হলো কৃচ্ছ্রসাধনের সময়।’ কালোবাজারি, মজুদদারি বা খাদ্যে ভেজাল করা গর্হিত কাজ- এ ব্যাপারে মসজিদে জুমার খুতবায় মানুষকে সচেতন করতে ইমামদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন তিনি। গত বৃহস্পতিবার গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে দেশের বিভিন্ন জায়গায় ৫০টি মডেল মসজিদের উদ্বোধন শেষে প্রধানমন্ত্রী আরো বলেন, ‘নিম্নআয়ের মানুষের জন্য আমরা বিশেষ কার্ড করে দিয়েছি। বেশি দামে চাল কিনে মাত্র ৩০ টাকা কেজি দরে আমরা তাদের দিচ্ছি। রমজান মাসকে সামনে রেখে আমরা আরো এক কোটি মানুষের মধ্যে ১৫ টাকা কেজি দরে চাল সরবরাহ করব। সাধারণ মানুষ যাতে কষ্ট না পায়; চাল, তেল, চিনি, ডাল, যা যা দরকার সেগুলো যাতে ন্যায্যমূল্যে কিনতে পারে সেজন্য টিসিবির মাধ্যমে ন্যায্যমূল্যের কার্ড দিয়ে আমরা এই সহযোগিতা করে যাচ্ছি।’

রমজান উপলক্ষে সরকারের পক্ষ থেকে যে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে তা প্রশংসনীয়। তবে আমরা আশা করব, যাদের জন্য এই বিশেষ ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে তারা যেন ঠিকভাবে নির্ধারিত পণ্য পেতে পারেন সে ব্যাপারে দায়িত্বশীলদের সচেতন থাকতে হবে। একই সঙ্গে ব্যবসায়ীদের উদ্দেশে বলতে চাই, আপনার ধর্মীয় মূল্যবোধ বুঝতে চেষ্টা করুন। পবিত্র রমজানে সাধারণ মানুষকে জিম্মি করে ব্যবসায়ীরা অতি মুনাফা লাভের চিন্তা করবেন না। ন্যায্যমূল্যে পণ্য বিক্রি করুন যাতে রোজাদাররা নির্বিঘ্নে সিয়াম পালন করতে পারেন। আর এটাই আমাদের প্রত্যাশা।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close