reporterঅনলাইন ডেস্ক
  ১৪ মার্চ, ২০২৩

টাইগারদের জয়ের ধারা অব্যাহত থাকুক

কয়েক বছর ধরে দুর্দান্ত ক্রিকেট খেলছে বাংলাদেশ দল। বাংলাদেশের ক্রিকেট ইতিহাসে সেরা সময়গুলো উপহার দিয়েছেন তামিম-মুশফিক, সাকিব, মাশরাফি, রিয়াদসহ একঝাঁক তরুণ। তাদের এই ভয়ডরহীন ক্রিকেট বিশ্বকে তাক লাগিয়ে দিয়েছে। বিশেষ করে ২০১৫ ক্রিকেট বিশ্বকাপের সাফল্যের পরই বাংলাদেশকে এখন অন্য চোখে দেখতে শুরু করেছে বিশ্ব। ওই বিশ্বকাপে প্রথমবারের মতো কোয়ার্টার ফাইনালে ওঠে বাংলাদেশ। বাংলাদেশের ক্রিকেটের সাফল্য আসলে শুরু হয় ১৯৯৯ সালে। তখন থেকেই এই দলটিতে প্রতিভাবান খেলোয়াড়ের অভাব ছিল না। কিন্তু তাদের সবচেয়ে বড় অভাব ছিল ধারাবাহিকতার। তবে নতুনদের হাত ধরে বাংলাদেশ এগিয়ে গেছে অনেক দূর।

বাংলাদেশ দুর্দান্ত ক্রিকেট খেলে বিশ্বের বড় বড় দলকে হারিয়েছে। এই ধারা চলমান রয়েছে। বাংলাদেশ যত ক্রিকেট খেলেছে তত যেন দলের খেলোয়াড়দের পরিপক্বতা আসছে। ক্রিকেট বিশেষজ্ঞরাও বাংলাদেশকে নিয়ে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করছেন, তাদের চোখে আগামীর ক্রিকেট পরাশক্তি হয়ে উঠছে বাংলাদেশ। বিশেষ করে এক দিনের ক্রিকেটে বিশ্ব মানচিত্রে ভালোভাবেই নিজেদের প্রতিষ্ঠিত করেছে বাংলাদেশ। এই সংস্করণে যেকোনো দলকে চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিতে সক্ষম টাইগাররা। সর্বশেষ গত রবিবার ঢাকায় অনুষ্ঠিত ইংল্যান্ডের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি সিরিজ জিতে নিয়েছে বাংলাদেশ। চট্টগ্রামে শেষ ওয়ানডে জয়ের পর টি-টোয়েন্টি সিরিজ শুরুর ম্যাচেও ইংল্যান্ডকে হারায় বাংলাদেশ। সেই ফর্মটা ঢাকাতেও টেনে আনে টাইগাররা। মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টি ম্যাচেও বিশ্বচ্যাম্পিয়নদের হারিয়ে দেয় তারা। মিরাজ-শান্তদের হাত ধরেই ক্রিকেটে তিন সংস্করণ মিলিয়ে এই প্রথম ইংলিশদের সিরিজ হারায় বাংলাদেশ। সময়ের প্রবাহে বদলে যায় কত কিছুই! দিনের পর দিন সমালোচনা আর ট্রলের ঝড় পেরিয়ে নাজমুল হোসেন শান্ত হয়ে ওঠেন জয়ের জন্য বড় ভরসা। টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে ধুঁকতে থাকা মেহেদী হাসান মিরাজ হয়ে ওঠেন জয়ের নায়ক। এই সবকিছুর পেছনে আছে মানসিকতা আর সাহসিকতা। এই জায়গায় ছোট পরিবর্তনেই বড় ফল মিলেছে বলে বিশ্বাস মিরাজের। তার অসাধারণ বোলিং নৈপুণ্যে ইংল্যান্ডকে ১১৭ রানেই গুটিয়ে দেয় বাংলাদেশ। টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে এই রান করেও জেতার আশা করা একটু কঠিনই। কিন্তু খেলাটা যখন মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামের স্পিন স্বর্গে, তখন এই রান নিয়েও লড়াই করা সম্ভব। আর ইংল্যান্ডের জন্য লড়াইটা ছিল সিরিজ বাঁচানোর, বাংলাদেশের রান-তাড়ার কাজটাও তাই সহজ হওয়ার কথা ছিল না। ইংলিশ বোলাররা সেটি হতেও দেননি। সিরিজের দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টিতে ইংল্যান্ডের ১১৭ রান টপকাতে বাংলাদেশকে যথেষ্ট কাঠখড় পোড়াতে হয়েছে। ম্যাচ গড়িয়েছে ১৯তম ওভারে। তাতে ছিল টানটান উত্তেজনা। শেষ পর্যন্ত ৬ উইকেটে হারিয়ে ইনিংসের ৭ বল বাকি থাকতে দারুণ এক জয় পায় বাংলাদেশ। ৪ উইকেটের এই জয়ে সাদা বলের দুই সংস্করণেই বিশ্বচ্যাম্পিয়ন ইংল্যান্ডের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি সিরিজ জিতে নেয় বাংলাদেশ। তিন ম্যাচ সিরিজের প্রথম দুটিই জিতেছে বাংলাদেশ, শেষ ম্যাচটা এখন ইংল্যান্ডের জন্য ধবলধোলাই এড়ানোর লড়াই।

ঘরের মাঠে এর আগেও বড় দলের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি সিরিজ জিতেছে বাংলাদেশ। তবে গত নভেম্বরে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের শিরোপা উঁচিয়ে ধরা বাটলারদের সেই বিশ্বকাপের পরের সিরিজেই হারানো নিশ্চয়ই আলাদাভাবে মনে রাখবেন সাকিবরা। শুধু সাকিবরা নন, এই জয়ের কথা মনে রাখবে পুরো বাংলাদেশ। এমন অবিশ্বাস্য জয় আরো আসুক; বাংলাদেশের এমন দুর্দান্ত জয়ের ধারা অব্যাহত থাকুক- সেই প্রত্যাশা থাকবে আমাদের। আমরা আশা করব, বাংলাদেশের ক্রিকেটের ভবিষ্যৎ আরো উজ্জ্বল হোক।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close