reporterঅনলাইন ডেস্ক
  ০৬ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩

সড়ক দুর্ঘটনা কেন রোধ করা যাচ্ছে না

মৃত্যু এখন কত সহজ হয়ে গেছে। রাস্তায় নামলেই ধরে নিতে হবে আমরা যে কেউ, যেকোনো সময় যানবাহনের চাপায় পিষ্ট হয়ে মারা যেতে পারি। তা না হলে এক মাসে সড়ক দুর্ঘটনায় ৫৮৫ জন মারা যায়। শিউরে ওঠার মতো খবর- জানুয়ারিতে ৫৯৩টি দুর্ঘটনায় প্রাণ গেছে ৫৮৫ জনের, আহত হয়েছেন ৮৯৯ জন। আর এই সময়ে রেলপথে ৪৪টি দুর্ঘটনায় ৪৬ জন নিহত ও নৌপথে ১৩ দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছেন ১১ জন। জানুয়ারিতে ২১৪টি মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় ২০৫ জন নিহত ও ১১৪ জন আহত হয়েছেন। গত শনিবার বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতির দুর্ঘটনা মনিটরিং সেলের দুর্ঘটনা পর্যবেক্ষণ প্রতিবেদনে ওঠে এসেছে এ তথ্য। রবিবার প্রতিদিনের সংবাদের এক খবরে এ তথ্য জানা যায়।

দুর্ঘটনার ধরন বিশ্লেষণ করে যাত্রী কল্যাণ সমিতি জানায়, মোট সংঘটিত দুর্ঘটনার ২৯ দশমিক ৫১ শতাংশ জাতীয় মহাসড়কে, ৩৮ দশমিক ৬১ শতাংশ আঞ্চলিক মহাসড়কে, ২৪ দশমিক ৪৫ শতাংশ ফিডার রোডে সংঘটিত হয়েছে। সড়ক দুর্ঘটনা সবচেয়ে বেশি সংঘটিত হয়েছে গত ১৭ জানুয়ারি। ওই দিন ৩৫টি সড়ক দুর্ঘটনায় ২০ জন নিহত ও ৩১ জন আহত হন। সবচেয়ে কম সড়ক দুর্ঘটনা হয়েছে গত ২ জানুয়ারি। সেদিন ১২টি সড়ক দুর্ঘটনায় ১০ জন নিহত ও আহত হন ২১ জন। সড়ক দুর্ঘটনায় এক দিনে সবচেয়ে বেশি নিহত হয়েছে ১১ জানুয়ারি। সেদিন ২৬টি সড়ক দুর্ঘটনায় ৩০ জন নিহত ও আহত হন ১৭ জন। পরিস্থিতি কতটা ভয়াবহ সেটা সহজেই অনুমেয়। সড়ক দুর্ঘটনা যেন কিছুতেই রোধ করা যাচ্ছে না। প্রতিদিনই দীর্ঘ হচ্ছে মৃত্যুর মিছিল। আমরা জানি, বেপরোয়া গতিতে যানবাহন চালানো, বিপজ্জনক ওভারটেক, ফিটনেসবিহীন যানবাহন, ট্রাফিক আইন লঙ্ঘন, অদক্ষ ও মাদকাসক্ত চালক কর্তৃক গাড়ি চালানো, রাস্তাঘাট নির্মাণে ত্রুটি, পথচারী-সেতু ব্যবহার না করা, ঝুঁকিপূর্ণ রাস্তা পারাপার ও আইনের যথাযথ প্রয়োগের অভাব- মোটাদাগে সড়ক দুর্ঘটনার এগুলোই প্রধান কারণ। দুর্ঘটনার এত সব কারণ জানা থাকা সত্ত্বেও শৃঙ্খলা ফেরে না সড়কে, যা খুবই দুঃখজনক। কিন্তু এই অবস্থা আর কত দিন চলতে দেওয়া যায়? সড়কে এভাবে আর কত নিরীহ মানুষের প্রাণ যাবে?

সড়কে শৃঙ্খলা ফেরানো কি কঠিন কিছু? তাহলে কেন দুর্ঘটনার কারণগুলো জানা সত্ত্বেও সড়কে অনাকাঙ্ক্ষিত মৃত্যুর হার কমানো যাচ্ছে না। আমরা মনে করি, দরকার শুধু প্রয়োজনীয় কিছু পদক্ষেপ গ্রহণ ও বাস্তবায়ন। অনাকাঙ্ক্ষিত সড়ক দুর্ঘটনা রোধে ও সড়কে শৃঙ্খলা ফেরাতে এখনই পদক্ষেপ নেওয়া জরুরি। চালকদের বেপরোয়া প্রতিযোগিতার মনোভাব ও গতি রুখতে সচেতনতা ও প্রশিক্ষণের ওপর জোর দিতে হবে। লাইসেন্স ও ফিটনেসবিহীন গাড়ি যেন সড়কে চলাচল করতে না পারে, সেটি নিশ্চিত করতে হবে। এছাড়া ট্রাফিক আইনকে কার্যকর করার পাশাপশি চালকদের ট্রাফিক আইন সম্পর্কে পর্যাপ্ত জ্ঞান থাকাও জরুরি। এসব বিষয়ে এখনই উদ্যোগ না নিলে সড়ক দুর্ঘটনা কখনোই রোধ করা যাবে না। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ এ বিষয়ে কঠোর হবে এটাই আমাদের প্রত্যাশা।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close