reporterঅনলাইন ডেস্ক
  ২৯ জানুয়ারি, ২০২৩

রমজানের আগেই পণ্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে রাখা হোক

রমজান মাস সংযমের মাস; আত্মশুদ্ধির মাস। এ মাসে মুসলমানদের লক্ষ্য থাকে সিয়াম সাধনার মাধ্যমে নিজেকে পরিশুদ্ধ করা। কিন্তু রমজান এলেই দেখা যায় এক শ্রেণির অসাধু ব্যবসায়ীদের অপতৎপরতা বেড়ে যায়। তারা নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম বাড়িয়ে রোজাদারদের অসহনীয় দুর্ভোগে ফেলেন। রমজানে তো বটেই, রমজানের কয়েক মাস আগে থেকেই পণ্যের দাম বাড়ানোর পাঁয়তারা চলতে থাকে। রমজানের আর মাস দুয়েক বাকি। এই মাসে সাধারণত পণ্যের চাহিদা কিছুটা বেশি থাকে। এরই মধ্যে চিনিসহ কয়েকটি প্রয়োজনীয় পণ্যের দাম বাড়তে শুরু করেছে। ছোলা, ভোজ্য তেল, মসুর ডাল, পেঁয়াজ, চিনি, খেজুরসহ বেশ কটি পণ্যের বাজার চড়া হয়ে উঠেছে। দাম কমাতে সরকারের পক্ষ থেকে শুল্কছাড়সহ নানা নীতি সহায়তা দিলেও এর প্রভাব পড়ছে না বাজারে। মূলত মিল ও মোকামপর্যায় থেকেই দাম বাড়ায় পাইকারিতে এর প্রভাব পড়েছে। ফলে খুচরা বাজারে পণ্যের দাম অসম্ভব পর্যায়ে গিয়ে ঠেকেছে।

চিনি নিয়ে অস্থিরতা দীর্ঘদিন ধরে। এখন নতুন করে দাম বেড়েছে। আগেও নির্ধারিত দামে চিনি বিক্রি হয়নি। বোঝা যাচ্ছে না পরিস্থিতি কোথায় গিয়ে দাঁড়াবে। শুধু চিনি নয়, মসলাসহ আদা-রসুন ও শুকনো মরিচের দামেও চলছে অস্থিরতা। সপ্তাহান্তেই বাড়ছে দাম। এখন প্রতি কেজি আদা ১৫০-২০০ টাকা। রসুনের দামও বেড়ে হয়েছে ১৫০-১৮০ টাকা। বাজারে তুলনামূলক কিছুটা কম দামে দেশি জাতের আদা-রসুন থাকলেও সেগুলোর চাহিদা কম। আগে যে শুকনো মরিচ প্রতি কেজি বিক্রি হতো ১০০-১৫০ টাকায় তা এখন ৫০০ টাকা পর্যন্ত পৌঁছেছে। আমদানি কমে যাওয়ার পাশাপাশি উৎপাদন সংকটে পণ্যটির রেকর্ড পরিমাণ দাম বেড়েছে। বর্তমানে শুকনো মরিচ কেজিপ্রতি সর্বনিম্ন ৩৫০-৫০০ টাকায় ওঠানামা করছে। আসন্ন রমজানের আগে সরবরাহ না বাড়লে দাম আরো বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা ব্যবসায়ীদের। উল্লেখ্য আন্তর্জাতিক বাজারে সব পণ্যের দাম কমে আসছে। এ মুহূর্তে কোনো পণ্যের দাম কমা ছাড়া বাড়ার কোনো কারণ নেই। সব সময় যে পণ্যের সরবরাহ কম থাকে তাণ্ডও নয়। তারপরও দাম বেড়ে যেতে দেখা যায়। এটা মূলত ব্যবসায়ীদের কারসাজি, যা নিয়ন্ত্রণ করা জরুরি।

রমজানে প্রয়োজনীয় পণ্যের এলসি খুলতে বাংলাদেশ ব্যাংক বিশেষ নির্দেশনা ও ডলার সহায়তা করবে বলে জানিয়েছে। এরপরও ব্যবসায়ীরা পণ্য মজুদ করে দাম বাড়িয়ে দেয়। ভোক্তা অধিকার আইন প্রয়োগ করে এসব ব্যবসায়ীর বিরুদ্ধে যথাযথ আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া উচিত। নাহলে মজুদ কারবার বন্ধ হবে না। রোজায় পণ্য আমদানিতে যাতে কোনো ধরনের সমস্যা না হয়, সেজন্য বাংলাদেশ ব্যাংক যে আশ্বাস দিচ্ছে তা নিশ্চিত করতে হবে। পবিত্র রমজান মাস এলেই নিত্যপণ্যের দাম বেড়ে যাওয়া বেশ পুরোনো রীতি। এর প্রভাব নিম্ন-মধ্যবিত্ত ও দারিদ্র্য মানুষের ‘মড়ার উপর খাঁড়ার ঘা’ হয়ে দাঁড়ায়। খেটে খাওয়া, দিনমজুর ও যাদের দৈনিক বা মাসিক আয় নির্দিষ্ট, পণ্যের দাম হঠাৎ বেড়ে গেলে তাদের সংসার চালাতে হিমশিম খেতে হয়। তা ছাড়া রমজানে এসব মানুষের আয় বৃদ্ধি পায় না, বরং অনেকের আয় কমে যায়। তাই বাজার ব্যবস্থাপনার সঙ্গে যারা জড়িত তাদের উচিত নিত্যপণ্যের দাম সহনশীল পর্যায়ে রাখার পাশাপাশি রোজাদারদের যেন ভোগান্তিতে না পড়তে হয় সে ব্যাপারে এখনই উদ্যোগ নিতে হবে।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close