reporterঅনলাইন ডেস্ক
  ২৬ জানুয়ারি, ২০২৩

সবুজ ছায়ায় ভরে উঠুক বাংলার শ্যামল প্রান্তর

পরিবেশ রক্ষায় বৃক্ষের বিকল্প নেই। যদিও বিশ্বে অনেক কিছুরই বিকল্প আছে। কিন্তু বৃক্ষের বিকল্প আছে কি না কেউ কি একবারও ভেবে দেখছেন? কিন্তু কোনো ধরনের গুরুত্বের কথা বিবেচনা না করে বৃক্ষকে আমরা নির্বিচারে নিধন করছি। আর এভাবেই পাল্টে যাচ্ছে বাংলাদেশের চিরসবুজ চেহারা। অবস্থাটা এতটাই নাজুক হয়ে পড়েছে যে, এশিয়ার যেসব দেশে বনাঞ্চল সবচেয়ে কম সে তালিকায়ও ঢুকে গেছে বাংলাদেশের নাম। দেশে গত ১৮ বছরে উজাড় হয়েছে প্রায় ৩ লাখ ৭৮ হাজার একর বনভূমি, যা মোট বনভূমির প্রাায় ৮ ভাগ। এর মধ্যে দুই-তৃতীয়াংশ বনভূমি উজাড় হয়েছে শেষ পাঁচ বছরে। ফলে জাতিসংঘের টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে চ্যালেঞ্জের মুখে পড়ার আশঙ্কা করছেন বিশেষজ্ঞরা।

বৃক্ষ আমাদের পরম বন্ধু। বৃক্ষের প্রয়োজনীয়তা সব ক্ষেত্রেই। বৃক্ষের তৈরি অক্সিজেন গ্রহণ করেই আমরা বেঁচে আছি। ফুলের সৌন্দর্য মনকে প্রফুল্ল করে। ফল মানুষের পুষ্টি জোগায়। বৃক্ষ আমাদের ছায়া দেয়। অকাজের বৃক্ষটিও জ্বালানি হিসেবে মানুষের উপকারে আসে। শিল্পের নানা উপাদান হিসেবে বৃক্ষ ও তার ফল ব্যবহার হয়। বৃক্ষের সীমাহীন গুরুত্ব সত্ত্বেও কুড়ালের কোপ থেকে তাকে রক্ষা করা যাচ্ছে না। ভাবলে কষ্ট হয়, এখন থেকে আর ছায়া দেবে না ২ হাজার ৭৮৬টি বৃক্ষ। অদূরদর্শিতার কারণে মেহেরপুর-কুষ্টিয়া সড়কে ও মেহেরপুরের মুজিবনগর উপজেলার কেদারগঞ্জ-দর্শনা সড়কে কোনো ক্লান্ত পথিককে আর ছায়া দেওয়ার মতো বৃক্ষ থাকছে না। সড়ক সংস্কারের প্রয়োজনে ওই দুই সড়কে ২ হাজার ৭৮৬টি বৃক্ষে গাছে কোপ পড়তে শুরু করেছে। এসব বৃক্ষ কাটার পর সড়কটি পরিণত হয়েছে ছায়া-মায়াহীন মরু কায়াতে। গত বুধবার প্রতিদিনের সংবাদে প্রকাশিত ‘ছায়া দেবে না ২৭৮৬ বৃক্ষ’ শীর্ষক প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয় যে, এর আগে দফায় দফায় বিভিন্ন সড়কে গাছ কেটে নেওয়ায় সড়ক পথে গাছের সংখ্যা একেবারেই কমে যায়। শুধু সড়ক বিভাগের নয়, বিগত সময়ে জেলা পরিষদের অনেক গাছ কাটা পড়েছে বৈধ ও অবৈধভাবে। কয়েক বছর আগেও সড়কে ব্রিটিশ

শাসনামলের বড় বড় মেহগনি, শিশু, কড়াই, রেইনট্রিসহ বিভিন্ন গাছ ছিল, যার একটা অংশ কেটে নেওয়া হয়েছে। আমরা মনে করি, পরিবেশ রক্ষায় বৃক্ষ যেমন জরুরি, তেমনি জাতীয় উন্নয়নকেও বাধাগ্রস্ত করে যাবে না। সমন্বয়ের ভিত্তিতেই সব সমস্যার সমাধান করতে হবে।

মনে রাখতে হবে, বৃক্ষ বিলুপ্ত হলে আমরা প্রয়োজনীয় অক্সিজেন পাব না। অক্সিজেনের অভাবে মানুষ মরে যাবে এই চরম সত্যটি উপলব্ধি করে হলেও যতটা সম্ভব বৃক্ষনিধন থেকে আমাদের বিরত থাকা উচিত। কারণ আমরা করোনাকালীন দেখেছি অক্সিজেন কতটা প্রয়োজন বা অক্সিজেনের অভাব কতটা অসহায় করে তোলে মানুষকে। এই একমাত্র কারণটি ছাড়াও বৃক্ষ আমাদের জীবনে কতটা প্রয়োজ্য তা অযোগ্য ছাড়া যোগ্যদের বোঝাতে হবে বলে মনে হয় না। তাই সচেতনদের বলব, বাঁচান বৃক্ষ, লাগান বৃক্ষ। বাসযোগ্য রাখুন বাংলাদেশসহ গোটা বিশ্ব। আর সেক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট সবার নিকট আমাদের প্রত্যাশা বৃক্ষরক্ষায় সচেতনতা, সহযোগিতা ও আইনের কঠোর প্রয়োগের কোনো বিকল্প নেই।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close