reporterঅনলাইন ডেস্ক
  ০৮ ডিসেম্বর, ২০২২

আইনিব্যবস্থার চাই যথাযথ প্রয়োগ

ভুয়া চিকিৎসকদের অপতৎপরতায় বারবার প্রশ্নবিদ্ধ হচ্ছে দেশের চিকিৎসাব্যবস্থা। সরকারি সতর্কবার্তার পরও অবাধে চলছে তাদের অবৈধ চিকিৎসা বাণিজ্য্য। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ভুয়া চিকিৎসদের বিরুদ্ধে সতর্কবার্তা দিয়েই দায়িত্ব শেষ করলে হবে না। তাদের বিরুদ্ধে নিতে হবে আইনগত ব্যবস্থা। যাতে সাধারণ মানুষ তাদের প্রতারণার শিকার থেকে রক্ষা পায়। চিকিৎসক হিসেবে প্রয়োজনীয় ডিগ্রি না থাকা সত্ত্বেও কেউ কেউ নিজেকে ‘বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক’ হিসেবে পরিচয় দিয়ে যাচ্ছেন, যা বিএমডিসি আইনের পরিপন্থি এবং শাস্তিযোগ্য অপরাধ। অন্যদিকে ভুল চিকিৎসার শিকার হয়ে অকালে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ছেন অনেক রোগী।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, দেশের সর্বত্র চলছে বিএমডিসি আইনের লঙ্ঘন। স্বীকৃত চিকিৎসা থেকে ডাক্তার হয়েও অনেকে ভুয়া ডিগ্রি ব্যবহার করে থাকেন। নামের আগে ভুয়া ডিগ্রি লাগিয়ে রোগীদের দৃষ্টি আকর্ষণ করাই এ ধরনের চিকিৎসকদের মূল উদ্দেশ্য। রোগীদের ভালো মন্দ বিবেচনায় রাখেন না তারা। মহান পেশা চিকিৎসাসেবা তাদের কাছে হয়ে ওঠে রোগী মেরে টাকা উপার্জনের অপকৌশল। এছাড়া কোনো চিকিৎসা প্রতিষ্ঠান বা অভিজ্ঞ ব্যক্তির সংস্পর্শে এসে অনেকে কিছু চিকিৎসা জ্ঞান অর্জন করেন। সেই সীমিত জ্ঞান দিয়ে তারা নিজেদের মতো করে চিকিৎসাসেবা দিয়ে যান। এতে অনেক রোগী ভুল চিকিৎসার শিকার হচ্ছেন। সরকারি অনুমোদন না থাকলেও এ ধরনের চিকিৎসকরা দেশের আনাচে-কানাচে তাদের চিকিৎসা বাণিজ্য অবাধে চালিয়ে যাচ্ছেন। এবার চিকিৎসক হিসেবে প্র্যাকটিসের জন্য বৈধ সনদ ও নিবন্ধন নেই এমন ‘ভুয়া’ চিকিৎসকের বিরুদ্ধে যথাযথ আইনিব্যবস্থা নিতে সরকারকে নির্দেশ দিয়েছে হাইকোর্ট। মঙ্গলবার (৬ ডিসেম্বর) বিচারপতি কে এম কামরুল কাদের ও বিচারপতি মোহাম্মদ আলীর হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন। বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যান্ড ডেন্টাল কাউন্সিলের (বিএমডিসি) সভাপতি ও পুলিশের মহাপরিদর্শককে (আইজিপি) এ বিষয়ে ৩ মাসের মধ্যে হাইকোর্টের নির্দেশনা মেনে প্রতিবেদন দাখিলেরও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। একই সঙ্গে রোগীদের সঙ্গে প্রতারণা করে তাদের স্বাস্থ্যঝুঁঁকিতে ফেলা ভুয়া চিকিৎসকদের শাস্তির জন্য বিদ্যমান ৩ বছরের কারাদণ্ডের মেয়াদ সংশোধনে তারা নিষ্ক্রিয় কেন, তা আগামী ৪ সপ্তাহের মধ্যে ব্যাখ্যা দিতে রুল জারি করা হয়েছে। রুলে কর্মকর্তাদের শাস্তি বাড়ানোর জন্য মেডিকেল অ্যান্ড ডেন্টাল কাউন্সিল আইন-২০১০-এর ২৮(৩) এবং ২৯(২) ধারা সংশোধনের পদক্ষেপ নিতে কেন বলা হবে না তা জানতে চাওয়া হয়েছে। আমরা আশা করি, এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ আইনের যথাযথ প্রয়োগসহ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন। যাতে ভবিষ্যতে ভুয়া চিকিৎসদের দৌরাত্ম্য থেকে মানুষ রেহাই পায়।

দেশে ভুয়া চিকিৎসকের অভাব নেই, টাকা দিলেই পাওয়া যায় অবৈধ সনদ। এসব অনিয়ম বন্ধ করতে সরকারের স্বাস্থ্যসংক্রান্ত চিকিৎসা প্রতিষ্ঠানগুলো মনিটরিং ব্যবস্থা জোরালো করতে হবে। তবে সরকারি অভিযান ও ডিজিটালাইজেশনের কারণে এমন অপতৎপরতা অনেক কমে এসেছে। তবে শুধু কমলেই হবে না। ভুয়া চিকিৎসকদের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতি প্রয়োগ করতে হবে। যাতে সাধারণ মানুষ তাদের প্রতারণার ফাঁদ থেকে রক্ষা পায়। আর এটাই আমাদের প্রত্যাশা।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close