reporterঅনলাইন ডেস্ক
  ০৩ ডিসেম্বর, ২০২২

প্রধানমন্ত্রীর মানবিকতা দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে

পুরান ঢাকার নিমতলীতে একটি বাড়িতে কেমিক্যালের গুদামে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটল। ছয়তলা বাড়িটির নিচতলায় দুই বোন রুনা আর রত্মা এবং পাশের বাড়িতে আসমা নামে এক মেয়ের বিয়ের আয়োজন চলছিল। কনেরা পার্লারে সাজছিলেন। আর বাড়ির নিচতলায় চলছিল রান্না। রান্নার জায়গার পাশেই ছিল কেমিক্যালের গুদাম। প্রচণ্ড তাপে গুদামে থাকা কেমিক্যালের প্লাস্টিক ড্রাম গলে আগুন ধরে যায়। এরপর মুহূর্তেই সেই আগুন ছড়িয়ে পড়ে। এতে প্রাণ হারায় শতাধিক মানুষ। বিয়ের সাজের জন্য পার্লারে থাকায় প্রাণে বেঁচে যান তিন কন্যা। পরে তাদের মাতৃস্নেহে গণভবনে নিয়ে বিয়ের আয়োজন করেন। চাকরির ব্যবস্থা করে দেন ওই তিন মেয়ের স্বামীদের। শুধু কি তাই? মিয়ানমারের সেনাদের নির্যাতনের শিকার হয়ে লাখ লাখ রোহিঙ্গা ছুটে এলো বাংলাদেশের দিকে। তিনি সীমান্ত খুলে দিলেন; কয়েক লাখ রোহিঙ্গাকে আশ্রয় দিলেন। শুরু হলো করোনা মহামারি। মানুষের সে কী এক আতঙ্ক! যেন বাঁচা-মরার লড়াই। মানুষের জীবন রক্ষা, স্বাস্থ্য সুরক্ষা নিশ্চিত করাসহ যাবতীয় পদক্ষেপ নিলেন তিনি। একই সঙ্গে দরিদ্র মানুষকে ত্রাণ সহযোগিতার পাশাপাশি জীবিকা ও অর্থনীতি বাঁচাতে নিলেন নানা পদক্ষেপ। করোনার শুরু থেকেই খাদ্য ও আর্থিক সহায়তা নিয়ে অব্যাহতভাবে এসব মানুষের পাশে ছিলেন। সারা দেশে ভূমি ও গৃহহীন ৮ লাখ ৮৫ হাজার ৬২২ পরিবারকে বাড়ি নির্মাণ করে দিলেন। বলছি একজন মানবিক প্রধানমন্ত্রীর কথা, যিনি এভাবে অসহায়ের পাশে দাঁড়িয়ে সাহস দিয়েছেন, সুযোগ করে দিয়েছেন ঘুরে দাঁড়ানোর। বিশেষ করে চিকিৎসা সংক্রান্ত বিষয়ে তার মানবিকতা সত্যিই দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে।

অনেক দুরারোগ্য ব্যাধিতে আক্রান্তদের চিকিৎসার দায়িত্ব নিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। সাতক্ষীরার পাইকগাছা এলাকার ‘বৃক্ষমানব’ আবুল বাজানদারের কথা এখানে উল্লেখ করা যায়। বিরল রোগে আক্রান্ত সাতক্ষীরার শিশু মুক্তা-মনিরও চিকিৎসার দায়িত্ব নেন। পাবনার চাটমোহরের আটলংকা গ্রামের শিক্ষক দম্পতি রফিকুল ইসলাম ও তাসলিমা খাতুনের ঘরে জোড়া মাথা নিয়ে জন্ম নেয় রাবেয়া-রোকেয়া। এদের আলাদা (চিকিৎসা) করার দায়িত্ব নিয়ে নিলেন প্রধানমন্ত্রী। এভাবে তার মানবিকতার দৃষ্টান্ত অনেক আছে। সর্বশেষ তিনি মেরুদণ্ড জোড়া লাগা দুই শিশু নুহা ও নুবার দায়িত্ব নিয়েছেন। যমজ এই শিশু দুটির বাবা কুড়িগ্রামের কাঁঠালবাড়ীর আলমগীর রানা, পেশায় পরিবহন শ্রমিক। প্রায় সাড়ে সাত মাস আগে রানার স্ত্রী নাসরিন ফুটফুটে যমজ কন্যা সন্তানের জন্ম দেন। শিশু দুটির মেরুদণ্ড ও স্পাইন জন্মগতভাবে জোড়া লাগা। জটিল, কঠিন ও অত্যন্ত স্পর্শকাতর এ অস্ত্রোপচার হবে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় (বিএসএমএমইউ) হাসপাতালে। এখানেই শেষ নয়, দেশে যখনই বড় কোনো দুর্ঘটনা ঘটুক না কেন, সেটা গার্মেন্টে বা লঞ্চে- দ্রুত চিকিৎসার ব্যবস্থা করার নির্দেশ দেন প্রধানমন্ত্রী। অগ্নিকাণ্ডে দগ্ধদের চিকিৎসার জন্য নিজ উদ্যোগে করে দিলেন পূর্ণাঙ্গ একটি বার্ন ইনস্টিটিউট, যেটি বাংলাদেশের নয়, দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে সবচেয়ে বড় আগুনে পোড়া রোগীদের চিকিৎসাকেন্দ্র।

বলাবাহুল্য, সব সময়ই প্রধানমন্ত্রী চেয়েছেন দেশের চিকিৎসাব্যবস্থা উন্নত করতে এবং যারা অসহায় বিশেষ করে দুরারোগ্য ব্যাধিতে আক্রান্ত তাদের চিকিৎসার দায়িত্ব নিয়েছেন। প্রধানমন্ত্রী নিজেও দেশের চিকিৎসার ওপর আস্থা রেখেছেন। এমনকি তিনি এ-ও বলেছেন, ‘আমি যদি কখনো অসুস্থ হয়ে পড়ি, তাহলে আপনারা আমাকে বিদেশে নেবেন না। আমি দেশের মাটিতেই চিকিৎসা নেব।’ গত মঙ্গলবারও জাতীয় চক্ষুবিজ্ঞান ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালে গিয়ে সাধারণ রোগীদের মতো ১০ টাকায় টিকিট কেটে নিজের চোখ পরীক্ষা করিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। প্রধানমন্ত্রীর এই মানবিকতা ইতিহাসে উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close