reporterঅনলাইন ডেস্ক
  ২৭ নভেম্বর, ২০২২

মানবতা হোক মানুষের জন্য

মানুষ ও মানবতা শব্দ দুটি একটি আরেকটির পরিপূরক। কিন্তু সেই মানুষই যখন অমানবিক আচরণ করে তখন মানবতা প্রশ্নবিদ্ধ হয়। কারণ মানবতা তখনই সর্বোৎকৃষ্ট পর্যায়ে অবস্থান করে যখন তা পরিপূর্ণভাবে যথার্থ প্রয়োগ হয়। অন্যথায় মানবতা কথাটির প্রকৃত কোনো অর্থ প্রকাশ পায় না। সবার অন্তরে যেমন মানবতা বিরাজমান থাকে না; তেমনই সব ক্ষেত্রে মানবতার বহিঃপ্রকাশও ঘটে না। মানুষ থেকে মানবতার সৃষ্টি আবার মানুষের দ্বারাই সেই মানবতা ধ্বংস হয়। তবে এই মানবতাহীনদের সংখ্যা সমাজে খুব বেশি নয়, সামান্যই বলা যায়। কিন্তু তাদের দৌরাত্ম্য ও বিবেকহীনতা গোটা সমাজকে কলুষিত করে।

বলা সংগত, মানুষ ও মানবিকতা সম্পন্ন মানুষের মাঝে যেমন তফাৎ রয়েছে, তেমনভাবে মানবতা ও লোক দেখানো মানবতার তফাৎও কম নয়। সমাজে এমন মানুষ আছেন যারা নিজেদের স্বার্থে এমন কোনো হীন কাজ নেই যা করতে সামান্য দ্বিধাবোধও করে না। তাদের কালো থাবা থেকে রেহাই নেই শিশু-কিশোর-আবাল-বৃদ্ধ-বণিতা কারোরই। পাঁচ বছরের এক শিশু আলিনা ইসলাম আয়াত। ১৫ নভেম্বর মক্তবে গিয়ে আর ফেরেনি বাসায়। এদিক সেদিক খোঁজাখুঁজির পর অভিযোগ যায় থানায়। ১০ দিনের মাথায় আবির আলী নামের এক যুবককে গ্রেপ্তার করে পিবিআই। এরপর জানা যায়, আয়াতকে ছয় টুকরো করে নদীতে ফেলে দেয় সে। তার তথ্য মতে, আয়াতের জামা-জুতা উদ্ধার করে পুলিশ। সেসব দেখেই কান্নায় ভেঙে পড়েন স্বজনরা। অন্যদিকে, ২০১৮ সালে রাজধানীর কারওয়ানবাজারে সার্ক ফোয়ারার কাছে দুই বাসের রেষারেষিতে হাত হারানো রাজীবের কথা এখনো মনে আছে অনেকের। এবার বাসের রেষারেষিতে হাত গেল জামাল উদ্দিন নামে এক ব্যক্তির। দুর্ঘটনায় হাত হারানোর ১৩ দিন পর মারা যান রাজীব। তবে জামাল উদ্দিন বেঁচে গেলেও পঙ্গু হয়েছেন; বন্ধ হয়েছে তার আয়ের পথ। রাজধানীর শেরেবাংলা নগরের জাতীয় অর্থোপেডিক হাসপাতালের ইমার্জেন্সি রিকভারি ওয়ার্ডের জি-৩৬ নম্বর শয্যায় কাতরাচ্ছেন জামাল। ৬২ বছর বয়সি জামালের বাড়ি গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলার রাজেন্দ্রপুরে। সোমবার (২১ নভেম্বর) তিনি দুর্ঘটনার শিকার হন। সড়ক দুর্ঘটনার লাগাম কিছুতেই যেন টেনে ধরা যাচ্ছে না। প্রতিদিনই দেশের বিভিন্ন স্থানে সড়ক দুর্ঘটনায় হতাহতের ঘটনা ঘটছে। প্রশ্ন হলো, এর কি কোনো প্রতিকার নেই? প্রধানমন্ত্রীও এ বিষয়টির ওপর গুরুত্বারোপ করেছিলেন। সড়কে শৃঙ্খলা ফেরাতে ১১১টি সুপারিশ করা হলেও আজ পর্যন্ত তা বাস্তবায়িত হয়নি। স্বল্পতম সময়ের মধ্যে পুলিশ কর্তৃক চার্জশিট দাখিল এবং দ্রুত ন্যায়বিচার প্রাপ্তির পথ সুগম করা হলে তা দুর্ঘটনা হ্রাসে ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে বলে আমাদের বিশ্বাস।

সড়ক দুর্ঘটনা রোধে যেভাবেই হোক সড়ক-মহসড়কে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে হবে। পাশাপাশি পরিবহন মালিক ও শ্রমিক সংগঠন, স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা এবং গণমাধ্যমসহ সংশ্লিষ্ট সবার সমন্বিত কর্মসূচি নিয়ে অগ্রসর হওয়া উচিত বলে মনে করি আমরা। এছাড়া খুন-খারাবির মতো ভয়ঙ্কর অবস্থা থেকে সমাজকে মুক্ত করতে হবে। এই ভয়ঙ্কর অবস্থা থেকে সাধারণ মানুষের মুক্তির জন্য আইন ও বিচার বিভাগসহ সংশ্লিষ্ট বিভাগকে সচেতন থাকতে হবে। এমনকি মানবতা ভঙ্গকারীদের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রের নজর আরো বাড়াতে হবে। যেন কোনো ধরনের অপকর্ম করে কেউ রেহাই না পায়।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close