reporterঅনলাইন ডেস্ক
  ২৬ নভেম্বর, ২০২২

চামড়াশিল্পে কর্মসংস্থানের ব্যাপক সম্ভাবনা

চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য দেশীয় কাঁচামালভিত্তিক একটি রপ্তানিমুখী শিল্প। জাতীয় আয়ের প্রবৃদ্ধি, রপ্তানির মাধ্যমে বৈদেশিক মুদ্রা আয়, কর্মসংস্থান এবং মূল্য সংযোজনের নিরিখে এটি একটি অপার সম্ভাবনাময় খাত। ৮০-এর দশক থেকে বাংলাদেশে রপ্তানি পণ্য হিসেবে তৈরি পোশাক শিল্পের উদ্ভব ও প্রসার হতে থাকে। বর্তমানে দেশের রপ্তানি আয়ের ৮৫ শতাংশই আসে তৈরি পোশাক খাত থেকে। এক তথ্যে জানা যায়, ২০২১-২২ অর্থবছরের প্রথম ১১ মাসে (জুলাই-মে) এ খাতে রপ্তানি হয়েছে ১১১ কোটি ৫৫ লাখ ডলার। চামড়া খাতে সবচেয়ে বেশি রপ্তানি আয় এসেছে ফুটওয়্যার বা পাদুকা থেকে। মোট রপ্তানি আয় এসেছে ৬৭ কোটি ৩০ লাখ ডলারের, যা গত অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় ৩১ দশমিক ৫৯ শতাংশ বেশি। ২০২৬ সালের মধ্যে বাংলাদেশ স্বল্পোন্নত দেশ (এলডিসি) থেকে বেরিয়ে উন্নয়নশীল দেশে উত্তীর্ণ হবে। তখন ইউরোপীয় বাজারে তৈরি পোশাক রপ্তানিতে শুল্কমুক্ত সুবিধা না-ও থাকতে পারে। সে ক্ষেত্রে গড়ে ৮ দশমিক ৭ শতাংশ হারে শুল্ক দিয়ে ইউরোপের বাজারে পণ্য রপ্তানি করতে হবে।

সংগত কারণেই বলা যায় যে, তৈরি পোশাক শিল্প বিপর্যয়ে পড়ার আগেই বাংলাদেশকে ইউরোপের বাজারে জিএসপি প্লাস সুবিধা পেতে হবে। বিকল্প হিসেবে অন্য কোনো খাতকে রপ্তানিযোগ্য হিসেবে প্রতিষ্ঠা করা জরুরি। এ সম্ভাবনাময় খাতটি হলো চামড়াশিল্প। এ শিল্পের প্রসারের সঙ্গে সঙ্গে তৈরি হচ্ছে নতুন কর্মসংস্থানও। প্রতিদিনের সংবাদের এক প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, টেকসই উন্নয়ন অভীষ্ট (এসডিজি) লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে ২০৩০ সালের মধ্যে সরকার ১০ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য রপ্তানির লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে। দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম রপ্তানি পণ্য হিসেবে ভবিষ্যতে এই খাতে প্রায় ৫০ লাখ শ্রমিকের কর্মসংস্থানের ব্যাপক সম্ভাবনা রয়েছে। সম্প্রতি ঢাকার একটি হোটেলে চামড়াশিল্পে সুষ্ঠু শিল্প সম্পর্ক উন্নয়নে ও শ্রম অধিকার সম্পর্কিত একটি জাতীয় সেমিনারে বক্তারা বলেন, চামড়াশিল্প ও শ্রমিক রক্ষায় শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের নেতৃত্বে যে অ্যাকশন প্ল্যান বা কর্মপরিকল্পনা গৃহীত হয়েছে, তা বাস্তবায়নে সরকার, মালিকসহ সংশ্লিষ্ট সব পক্ষকে আন্তরিকভাবে কাজ করতে হবে। সরকারের নীতি সহায়তা পেলে চামড়াশিল্প দেশের সবচেয়ে বড় কর্মসংস্থানের খাত হতে পারে। এজন্য সরকারকে শিল্প উদ্যোক্তাদের বর্তমান সমস্যা দূরীকরণে সহায়তা করতে হবে।

আমরা মনে করি, শ্রমিকের কর্মসংস্থান নিশ্চিত এবং চামড়াশিল্পকে রক্ষা করতে হলে, প্রথমে উদ্যোক্তাদের বাঁচাতে হবে। বাংলাদেশের চামড়াশিল্পকে এগিয়ে নিতে হলে প্রথমে দরকার একটি দীর্ঘমেয়াদি কর্মপরিকল্পনা। এ শিল্প উদ্যোক্তাদেরও সততা এবং পেশাদারত্ব বজায় রেখে কাজ করতে হবে। একটি সম্ভাবনাময় খাতকে সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টায় শুধু বাঁচিয়ে রাখাই নয়, জাগিয়ে তুলতে হবে। কিন্তু এ খাতে অনেক চ্যালেঞ্জ রয়েছে। সেই চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় সরকার এবং সংশ্লিষ্ট সবার অংশগ্রহণে একটি পূর্ণাঙ্গ কৌশলপত্র প্রণয়ন করতে হবে, যাতে এ শিল্পের প্রসারের সঙ্গে সঙ্গে নতুন কর্মসংস্থান তৈরি করা যায়। আর সরকারের নিকট এটিই আমাদের প্রত্যাশা।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close