reporterঅনলাইন ডেস্ক
  ০৮ অক্টোবর, ২০২২

আসছে মহাদুর্যোগ সতর্কতা জরুরি

বিশ্বের আর্থসামাজিক অবস্থা এখন এমন এক নাজুক অবস্থানে এসে দাঁড়িয়েছে যাকে সুতার ওপর দাঁড়িয়ে থাকা বললেও বেশি বলা হবে না। যেকোনো সময় গড়িয়ে পড়তে পারে অতল গহ্বরে। শঙ্কাটি একক কোনো ব্যক্তি বা গোষ্ঠীর নয়। বিশ্বের প্রায় প্রতিটি চিন্তাশীল মানুষের মুখে আজ উচ্চারিত হচ্ছে এই একই সংলাপ। অর্থাৎ ভালো নেই বর্তমান পৃথিবী। ভালো নেই বিশ্ব মানব সম্প্রদায়। একই বাক্য উচ্চারিত হচ্ছে বাংলাদেশে। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধকে কেন্দ্র করে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে নিষেধাজ্ঞা ও পাল্টা নিষেধাজ্ঞার কারণে আগামী বছর বিশ্বের জন্য অত্যন্ত দুর্যোগময় হতে পারে বলে শঙ্কা প্রকাশ করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও।

২০২৩ সালে বিশ্বে যে দুর্যোগ আসছে তা অনেকটা নিশ্চিত। চারপাশের বাস্তবতা সে কথাই বলছে। এমন একটি শঙ্কায় দুলছে পৃথিবী। মোকাবিলার কথা ভুলে আগুনে বারুদ ঢেলে দেওয়ার কাজ করছে। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের রাশ টেনে ধরার কোনো লক্ষণই নেই। বিপরীতে তাকে তাজা করে তোলারই একটা প্রক্রিয়া চলছে। নানা রকম নিষেধাজ্ঞার জালে আটকে গেছে চলমান অর্থনীতি। বিশ্ববাণিজ্যে নেমেছে ধস। প্রাকৃতিক ও মানবসৃষ্ট কারণে উৎপাদন হচ্ছে বিঘিœত। কমে যাচ্ছে উৎপাদন, বাড়ছে চাহিদা। ফলাফলে মুদ্রা ও মূল্যস্ফীতি। পড়ে যাচ্ছে ক্রয় ক্ষমতা। জনজীবনে বাড়ছে দুর্ভোগ। বিষয়টি কোথায় গিয়ে থামবে এ মুহূর্তে নির্দিষ্ট করে বলা সম্ভব না হলেও অনুমান করা যায়। নেই অনুমান বলছে, দুর্ভিক্ষ অত্যাসন্ন।

এত কিছু জানার পরও মানুষের বোধোদয় হচ্ছে না। এখনো আফিম নেশায় বুদ হয়ে যুদ্ধ-যুদ্ধ খেলায় মেতে উঠেছে। মাঝে মধ্যেই শোনা যাচ্ছে তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধের কথা। কেউ কেউ ভাবছেন, পারমাণবিক অস্ত্রের ব্যবহারের কথা। তবে যতটুকু ধারণা করা যায়, পারমাণবিক অস্ত্রের ব্যবহার হবে না। কেননা যারা এ অস্ত্রের মালিক তারা সরাসরি পরস্পরের মুখোমুখি দাঁড়িয়ে যুদ্ধের কথা ভাবেন না। অন্যকে দিয়ে যুদ্ধ করাতেই ভালোবাসেন। আর সেটাই চলছে বর্তমান বিশ্বে। যখন পৃথিবীর অর্ধেকেরও বেশি রাষ্ট্র অন্য কোনো রাষ্ট্রের সঙ্গে যুদ্ধে লিপ্ত হবে। সম্ভবত সে দিনটিই হবে তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধের শুরু। অতীত মহাযুদ্ধের গতি-প্রকৃতির সঙ্গে আগামী বিশ্বযুদ্ধের পার্থক্য হবে এটাই। বিশ্বের সবচেয়ে বড় বাণিজ্যিক পণ্যের নাম হবে মারণাস্ত্র। যা এরই মধ্যে শুরু হয়ে গেছে। পৃথিবী তখন খন্ড-খন্ড বারুদের স্তূপের ওপরে বসে থাকবে। প্রতিনিয়তই শোনা যাবে বিস্ফোরণের শব্দ।

সেই শব্দকে ধারণ করেই বাঁচতে হবে আমাদের। প্রয়োজন হবে অস্ত্রের। কিন্তু অস্ত্র ভক্ষণ করে তো আর বেঁচে থাকা যাবে না। দরকার পড়বে খাবারের। খাবারের জোগান নিশ্চিত করতে চাই খাদ্য উৎপাদন। অর্জন করতে হবে খাদ্য উৎপাদনে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন। ঠিক সে কথাটিই বলেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ

হাসিনা। তিনি বলেছেন, উৎপাদন করুন। অপচয় বন্ধ করুন। দুশ্চিন্তা না করে সাশ্রয়ী হওয়ার সর্বোচ্চ চেষ্টা করুন। অর্থাৎ উৎপাদনই আগামী দিনে ভালোভাবে বেঁচে থাকার একমাত্র চাবিকাঠি। বিশেষ করে খাদ্য উৎপাদন। আমরা মনে করি, নিজের স্বার্থে পরিবারের স্বার্থে তথা রাষ্ট্রের সার্বিক কল্যাণে যুথবদ্ধভাবে সবাইকে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে মহামঙ্গা মোকাবিলায় ঝাঁপিয়ে পড়তে হবে। তবে কাউকে না কাউকে নেতৃত্ব দিতে হবে। যে বা যারা নেতৃত্ব দিতে ব্যর্থ হবেন ফলাফলের অংশ তিনি বা তাদেরও ভোগ করতে হবে। মনে রাখতে হবে, আমরা একটি বিশ্বযুদ্ধের মধ্যেই আছি।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close