reporterঅনলাইন ডেস্ক
  ০৪ অক্টোবর, ২০২২

জ্বালানিতে সম্ভাবনার নতুন দ্বার

নবায়নযোগ্য জ্বালানিকে বলা হচ্ছে সময়োপযোগী পরিবেশবান্ধব শক্তি। যাকে কার্বন নিঃসরণমুক্ত উপাদান হিসেবে বিবেচনা করা হয়। জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলা এবং একটি টেকসই জ্বালানি ব্যবস্থায় পৌঁছানোর জন্য জাতিসংঘ ও বিশ্বব্যাপী পরিবেশবাদী দলগুলো নবায়নযোগ্য শক্তি ব্যবহারের ওপর উৎসাহ ও জোর দিয়ে আসছে, যা আমাদের মতো দেশের জন্যও প্রযোজ্য। কারণ বিশ্বব্যাপী যেভাবে প্রাকৃতিক বিপর্যয় শুরু হয়েছে তা থেকে আমাদের দেশও মুক্ত নয়। সেই পরিপ্রেক্ষিতে উন্নত বিশ্বের অবাধে কার্বন নির্গমন অব্যাহত আর অন্যদিকে দরিদ্র জাতিগোষ্ঠীর দুর্ভোগ এবং স্বাস্থ্যঝুঁকি থেকে রক্ষায় নবায়নযোগ্য জ্বালানির কোনো বিকল্প নেই। বিদ্যুৎ ও জ্বালানি চাহিদা মেটাতে এত দিন ব্যবহার করে আসা জীবাশ্ম জ্বালানির বিপরীতে নবায়নযোগ্য শক্তি বর্তমানে বিশ্বে ব্যাপক গ্রহণযোগ্যতা পেয়েছে। অধিকাংশ দেশ তাদের বিদ্যুৎ ও জ্বালানির চাহিদা মেটাতে নবায়নযোগ্য শক্তি ব্যবহারের লক্ষ্যমাত্রা ঠিক করেছে।

বলা সংগত, জলবায়ু পরিবর্তনের অন্যতম শিকার বাংলাদেশও নবায়নযোগ্য জ্বালানির দিক থেকে পিছিয়ে নেই। দেশে নবায়নযোগ্য শক্তি বা জ্বালানির ব্যবহার ও এর উন্নয়ন নিশ্চিত করতে ২০০৮ সালের ১৮ ডিসেম্বর থেকে নবায়নযোগ্য জ্বালানি নীতিমালা কার্যকর হয়। বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ জানান, টেকসই ও নবায়নযোগ্য জ্বালানি উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (স্রেডা) নবায়নযোগ্য জ্বালানির প্রসারে লজিস্টিক ও কারিগরি সহযোগিতা করছে। এদিকে এরই মধ্যে নবায়নযোগ্য জ্বালানি নিয়ে বেসরকারি খাতে ১০টি বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনের চুক্তি করা হয়েছে। মুজিব ক্লাইমেট প্রোসপ্রারিটি প্ল্যান জিইএস ইনটিগ্রেটেড এনার্জি অ্যান্ড পাওয়ার মাস্টার প্ল্যানের আওতায় ক্লিন এনার্জিকে গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। এছাড়া বিভিন্ন উৎসে নবায়নযোগ্য জ্বালানি থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদনে ২৯টি কোম্পানি আগ্রহ প্রকাশ করেছে। অন্যদিকে, আমাদের দুটি ভাসমান টার্মিনাল ও পুনরায় গ্যাসে রূপান্তরকরণ ইউনিট (এফএসআরইউ) রয়েছে। এ দুটির দৈনিক সরবরাহ সক্ষমতা রয়েছে এক হাজার মিলিয়ন ঘনফুট। যা থেকে সর্বোচ্চ ৯৫ শতাংশ ব্যবহার করা যাবে। আমাদের দুটি এফএসআরইউ দিয়ে বছরে ছয় মিলিয়ন টন পর্যন্ত সরবরাহ করা সম্ভব হবে। এছাড়া আরো একটি এফএসআরইউ স্থাপনের প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে। জ্বালানি ঘাটতির মধ্যে নতুন এ সম্ভাবনা নিঃসন্দেহে স্বস্তিদায়ক।

নবায়নযোগ্য শক্তি বর্তমানে বিশ্বে ব্যাপক গ্রহণযোগ্যতা পেয়েছে। অধিকাংশ দেশ তাদের বিদ্যুৎ ও জ্বালানির চাহিদা মেটাতে নবায়নযোগ্য শক্তি ব্যবহারের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে। বর্তমানে বিভিন্ন ধরনের নবায়নযোগ্য জ্বালানি উৎসের মধ্যে সৌরশক্তি সবচেয়ে সম্ভাবনাময় এবং বায়োগ্যাস ও বায়োমাসের রয়েছে সীমিত ব্যবহার। বিশ্বে জীবাশ্ম জ্বালানির অধিকাংশ ব্যয় হয় বিদ্যুৎ উৎপাদনে, মোটরযান চলাচলে এবং বাসাবাড়ির তাপ-উৎপাদনে। এজন্য নবায়নযোগ্য শক্তি ব্যবহার করে টেকসই বিদ্যুৎব্যবস্থাকে আরো সমৃদ্ধ এবং গ্রহণযোগ্য করে তুলতে হবে। উন্মোচন করতে হবে জ্বালানিতে নতুন সম্ভাবনার দ্বার। আর এটাই আমাদের প্রত্যাশা।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close