reporterঅনলাইন ডেস্ক
  ২৭ সেপ্টেম্বর, ২০২২

দোষীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হোক

দিনটি ছিল রবিবার (২৫ সেপ্টেম্বর)। বিশ্ব নদী দিবস। নদী রক্ষায় সচেতনতা বাড়াতে প্রতি বছর সেপ্টেম্বরের চতুর্থ রবিবার বিশ্বব্যাপী দিবসটি পালিত হয়ে আসছে। আর দেশে এদিনই ঘটল এক নির্মম ঘটনা। অতিরিক্ত যাত্রীবোঝাই করার কারণে করতোয়া নদীতে ভয়াবহ এক নৌকাডুবি ঘটে। এতে প্রাণ হারিয়েছেন প্রায় অর্ধশতের মতো। তবে এ সংখ্যা আরো বাড়ার আশঙ্কা রয়েছে। বলা যায়, প্রতিটি মৃত্যুই প্রিয়জনদের কাছে বেদনার। সেক্ষেত্রে দুর্ঘটনায় মৃত্যু আরো বেশি কষ্টের। নদীমাতৃক বাংলাদেশে নৌকা অন্যতম পরিবহন মাধ্যম। গ্রামাঞ্চলে নদীসংলগ্ন মানুষ নৌকায় যাতায়াত করেন বেশি। প্রায়ই শোনা যায় নৌকাডুবিতে প্রাণহানির খবর। এ ব্যাপারে একটাই কথা আর তা হলো, সতর্কতা। নৌকাডুবির একটি বড় কারণ ধারণক্ষমতার অতিরিক্ত যাত্রী বহন। এবারও তাই ঘটেছে।

নদীর অপরপাড়ে মহালয়া উপলক্ষে প্রতি বছরের মতো বরদ্বেশ্বরী মন্দিরে ধর্মসভার আয়োজন করা হয়। রবিবার দুপুরের দিকে মূলত ওই ধর্মসভায় যোগ দিতে তারা নৌকায় নদী পার হচ্ছিলেন। যাচ্ছিলেন মহালয়ার ধর্মসভায় ঠাকুরের বাণী ও ধর্ম-উপদেশ শুনতে। শেষে মন্দিরে পূজা অর্চনা করে ভগবানের কাছে চাইবেন জীবনের শান্তি ও সমৃদ্ধি। কিন্তু তাদের এই পুণ্য অর্জনের শুভযাত্রায় নেমে এসেছে শোকের ছায়া। নৌকাডুবিতে তারা এখন লাশ ও দুঃখজাগানিয়া স্মৃতি। প্রশ্ন হলো, এই নৌকাডুবির দায় কার? দুর্ঘটনা পরিস্থিতি নিয়ে কাজ করেন যারা, তারা বলছেন, যারা ধারণক্ষমতার দ্বিগুণ মানুষ নিয়ে নৌকাটি ছাড়ার অনুমতি দিয়েছেন, সেই খেয়াঘাটের দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যক্তিরা, যারা দেখেও গ্রামবাসীকে বলেননি দুই বারে পার হওয়ার কথা, যারা জোর করে নৌকাভর্তি করে উঠে দুর্ঘটনাকবলিত হলেন। যারা এই খেয়াঘাটের অনুমোদন দিয়ে মনিটরিংয়ের কোনো ব্যবস্থা করেননি, প্রত্যেকে এর জন্য দায়ী। নৌ-দুর্ঘটনায় প্রতি বছরই অনেক মানুষ আহত, নিহত ও নিখোঁজ হচ্ছেন। এ দেশে বড় ধরনের নৌ-দুর্ঘটনা ঘটলে কিছুদিন হৈচৈ হয়, গণমাধ্যমগুলোও এ নিয়ে কিছুদিন সরগরম থাকে। আর এ জাতীয় নৌ-দুর্ঘটনা ঘটলে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ যথারীতি গঠন করে তদন্ত কমিটি। নৌ-দুর্ঘটনার কিছুদিন পর দেশে যদি অন্যকোনো বড় ধরনের ঘটনা বা সহিংসতা, অথবা অন্য কোনো দুর্ঘটনা ঘটে, তখন স্বাভাবিকভাবেই চাপা পড়ে যায় ওই নৌ-দুর্ঘটনার বিষয়টি।

বলা সংগত, পরবর্তী সময়ে আর কেউ জানতে পারে না, ওই নৌ-দুর্ঘটনার পেছনে দায়ী ব্যক্তি কে, অথবা দায়ী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে কিনা। এছাড়া চালকের দোষেও দুর্ঘটনা ঘটে থাকে। সাধারণ মানুষ ও কর্তৃপক্ষ যদি সতর্ক থাকে, তাহলে অনাকাঙ্ক্ষিত এসব দুর্ঘটনা এড়ানো সম্ভব। আমরা চাই এই দুর্ঘটনার যথাযথ তদন্ত ও দোষীদের আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হোক। যাতে ভবিষ্যতে এই নির্মম ঘটনার পুনরাবৃত্তি না ঘটে। এরই মধ্যে স্থানীয় প্রশাসন ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তি ও পরিবারগুলোকে আর্থিক সহায়তা প্রদানের ঘোষণা দিয়েছে। আমরা এই অর্থের সুষ্ঠু ও ন্যায়ভিত্তিক বণ্টন প্রত্যাশা করছি। পাশাপাশি শোকগ্রস্ত প্রতিটি পরিবারের প্রতি রইল আমাদের গভীর সমবেদনা।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close