reporterঅনলাইন ডেস্ক
  ২৪ সেপ্টেম্বর, ২০২২

সংকট কাটাতে নতুন উদ্যোগ

জ্বালানি সংকটে ভুগছে পৃথিবী। আমরাও বাইরে থাকতে পারিনি। দেশে প্রকট হয়ে উঠছে জ্বালানি সংকট। স্থায়ী কোনো সমাধানে যেতে না পারলে জনজীবনের দুর্ভোগ যে বাড়বে, বাস্তবতা তারই স্বাক্ষর বহন করছে। বর্তমান বিশ্বের আর্থসামাজিক অবস্থা বলছে, নিজের যোগ্যতা বাড়াও। বাড়াতে না পারলে বিশ্বব্যবস্থা থেকে তোমার অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখা খুব কঠিন হয়ে পড়বে। জ্বালানি এমন একটি পণ্য, যা পৃথিবীর অর্থনীতিকে কান ধরে ওঠবস করাতে পারেছেও তাই। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের পর থেকে জ্বালানি সংকট মোকাবিলা করতে গিয়ে গোটা বিশ্বই হিমশিম খাচ্ছে। প্রায় প্রতিটি দেশের অর্থনৈতিক শক্তি দুর্বল থেকে দুর্বলতর হয়ে চলেছে। বিশেষ করে আমাদের মতো উন্নয়নশীল দেশের জন্য বিষয়টি একটু বেশি করে ভাবিয়ে তুলেছে। তাই নিজের অস্তিত্ব নিজেকে রক্ষা করার মানসিকতা নিয়ে এগিয়ে যাওয়ার সময় এসেছে। পিছিয়ে পড়লে আগামী দিনে ক্র্যাচে ভর দিয়ে চলার বাইরে আর কোনো পথ খোলা থাকবে না বলেই চিন্তাবিদদের ধারণা।

এ কথা স্মরণ করেই বাংলাদেশও ভাবছে। পরিকল্পনায় মনোযোগী হয়ে এগিয়ে চলেছে সামনের দিকে। গ্যাস সংকট কাটাতে নিয়েছে নতুন উদ্যোগ। খনন করা হচ্ছে ৪৬টি নতুন কূপ। বিশ্লেষকরা বলছেন, এলএনজি আমদানিতে অর্থনীতির ওপর যে চাপ পড়ছে, তা সামাল দিতে এ উদ্যোগ অনেকটাই কার্যকর ভূমিকা রাখবে। আগামী সাড়ে তিন বছরের মধ্যে পর্যায়ক্রমে এই পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করা হবে। এই কূপগুলো খনন হলে প্রতিদিন মিলবে ৬১৮ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস। এতে এলএনজি আমদানি কমানো সম্ভব হবে। রিজার্ভের ওপর চাপ কমবে। এ ছাড়াও আমাদের রয়েছে বিশাল সমুদ্র। যেখানে গ্যাসের মজুদ আছে, তবে কোথায় কতটা আছে, নির্দিষ্টভাবে আমাদের জানা নেই। অনুসন্ধান চলছে। সেখানে জ্বালানির সন্ধান পেলে দীর্ঘমেয়াদি সংকটের সমাধান হবে বলেই আমাদের বিশ্বাস। অটল এই বিশ্বাসের ওপর অটল থেকে এ ক্ষেত্রে সরকার নিশ্চয়ই বিশেষ মনোযোগী হবে।

তথ্যমতে, এখন দেশে প্রায় ৫০০ মিলিয়ন ঘনফুট এলএনজি আমদানি করা হচ্ছে। মূলত কাতার ও ওমানের দুটি কোম্পানির সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হয়ে এ গ্যাস আমদানি করছে বাংলাদেশ। এর বাইরে স্পট মার্কেট থেকে যে এলএনজি আমদানি করা হতো, তা আপাতত বন্ধ। দাম না কমলে স্পট মার্কেট থেকে আর এলএনজি আমদানি করা হবে না। তবে কবে নাগাদ কমবে, তা নির্দিষ্ট করেও বলা যাচ্ছে না। ইউক্রেন-রাশিয়ার যুদ্ধের কারণে বিশ্বব্যাপী জ্বালানির বাজারের অস্থিরতা অব্যাহত রয়েছে। বর্তমানে দেশে দৈনিক ২৮০০ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস সরবরাহ করা হচ্ছে। এরমধ্যে ২৩০০ ঘনফুট আসছে দেশি উৎস থেকে।

এদিকে আগামী শীতে পশ্চিমা দেশগুলোতে ঠান্ডার প্রকোপ বেড়ে যাওয়ার ফলে গ্যাসের চাহিদাও বাড়বে। আর এ কারণে বিশ্ববাজারে জ্বালানির দাম আরো এক দফা বাড়তে পারে। তবে আমাদের দেশে চাহিদার ওপর তেমন কোনো চাপ থাকবে না। তবে বিশ্ববাজারে দাম বাড়লে পার্শপ্রতিক্রিয়ায় কিছুটা চাপ আমাদের ওপরও এসে পড়বে। তাই নিজস্ব উৎপাদনের দিকে নজর বড়ানোই পরিত্রাণের একমাত্র পথ। ইতোমধ্যেই খননের কাজ শুরু হয়েছে। আমরা আশা করব, এ কাজে কোনো গাফিলতি থাকবে না। সবাই আন্তরিকতার সঙ্গে কাজ করবেন। মনে রাখতে হবে, দেশ না বাঁচলে আমরাও বাঁচব না। ত্রিশ লাখ শহীদের আত্মার কথা স্মরণ করে অস্তিত্ব রক্ষার লড়াইয়ে আমরা জাগ্রত থাকব।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close