reporterঅনলাইন ডেস্ক
  ১২ আগস্ট, ২০২২

সংকটে সতর্ক থাকাই জরুরি

বিশ্বরাজনীতি এখন স্মরণকালের সবচেয়ে অস্থির অবস্থায় রয়েছে। যেকোনো সময় তা বিস্ফোরিত হতে পারে। অর্থনীতি ক্রমান্বয়ে ভেঙে পড়ছে। করোনা মহামারি থেকে যার শুরু, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের মধ্য দিয়ে তা আরো ঘনীভূত হয়েছে। মূল্য ও মুদ্রাস্ফীতির আগ্রাসী ভূমিকায় পৃথিবী ক্ষত-বিক্ষত। রক্তাক্ত জনপদ। আসছে যেদিন তা আরো ভয়ংকর হতে পারে বলেই সবার ধারণা। তাই বাস্তবতার প্রতি আনুগত্য প্রকাশ করে সতর্কতার সঙ্গে এগিয়ে যাওয়াটাই হবে ইতিবাচক সিদ্ধান্ত।

বিষয়টি মাথায় রেখেই সতর্ক অবস্থানে রয়েছে সরকার। বৈশ্বিক সংকটের চলমান প্রবাহে দেশের অভ্যন্তরীণ সংকট যাতে বড় আকার নিতে না পারে তার জন্য সরকার দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনাও গ্রহণ করেছে। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, যেটুকু সংকট রয়েছে তা কাটাতে দু-তিন মাস সময় লাগতে পারে। এরপর অবস্থা স্বাভাবিক হবে বলেই তাদের বিশ্বাস। আমরাও তাদের এই বিশ্বাসের প্রতি আস্থা রাখতে চাই।

বাইরে যথেষ্ট গুঞ্জন আছে, দেশের অবস্থা শ্রীলঙ্কার মতো হবে। এ গুঞ্জন নিয়ে বিতর্কেরও শেষ নেই। সম্ভবত প্রকৃত সত্যের কাছাকাছি কেউই নেই। সবটাই গুঞ্জন। তবে তথ্য বলছে, শ্রীলঙ্কার মতো অবস্থা হওয়ার সম্ভাবনা নেই বললেই চলে। যারা বলছেন হবে, তারা সময়সীমা নির্ধারণ করতে গিয়ে যে সময়ের কথা বলেছেন, তত দিনে আমরা সংকট মোকাবিলা করে স্বাভাবিকতার কাছাকাছি পৌঁছাতে সক্ষম হব। তবে এখানে হার্ডলরেসের মতো অসংখ্য প্রতিবন্ধকতার কথা মাথায় রেখে পা ফেলার কথা ভাবতে হবে। অন্যথায় যেকোনো সময় রেসের বাইরে চলে যাওয়ার দৃষ্টান্ত তৈরি হতে পারে।

এখনো পায়ের নিচের মাটি সরে যায়নি। প্রবাসী আয়ের পালে হাওয়া লেগেছে। তথ্য মতে, রেকর্ড পরিমাণ রেমিট্যান্স আসছে। যদিও গত কয়েক মাসে যা আশানুরূপ ছিল না। চলতি আগস্ট মাসের প্রথম সাত দিনে ৫৫ কোটি ডলার দেশে পাঠিয়েছেন প্রবাসীরা। টাকার অঙ্কে যা ৫ হাজার ২২৫ কোটি টাকা। এ ছাড়া বর্ধিত মূল্যে জ্বালানি তেল বিক্রির কারণে সরকারের রাজস্ব আয়ও বাড়বে আশানুরূপ। তবে এ মুহূর্তে সরকারের বড় উদ্যোগ হচ্ছে বিদ্যুতের লোডশেডিং থেকে বেরিয়ে আসা। এ ক্ষেত্রে সরকারের পাশাপাশি ভোক্তাদেরও দায়িত্ব কম নয়। অত্যন্ত সতর্কতা ও সততার সঙ্গে এ দায়িত্ব পালন করতে পারলে সংকট মোকাবিলা সহজতর হবে বলেই আমাদের বিশ্বাস। যেকোনো ধরনের অপচয় রোধ করতে পারলেই সফলতা সন্নিকটে। দেশ ও জাতির সার্বিক কল্যাণের কথা বিবেচনায় রেখে এগিয়ে যাওয়ার মধ্যেই নিহিত রয়েছে অর্থনৈতিক মেরুদণ্ডকে সোজা রাখার নিশ্চয়তা।

তথ্য মতে, একাধিক বিদ্যুৎকেন্দ্রে নতুন করে বিদ্যুৎ উৎপাদন শুরু হতে যাচ্ছে। অক্টোবরের মধ্যে আরো ৪ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ জাতীয় গ্রিডে যুক্ত হতে পারে। লোডশেডিং মোকাবিলায় যা হতে পারে ইতিবাচক। এ ছাড়া আগামী অক্টোবরে শীত মৌসুমের শুরু। এ সময় বিদ্যুতের চাহিদাও কমে আসবে। এটিও লোডশেডিং থেকে বেরিয়ে আসার একটি অনুঘটক। আমরা মনে করি, সমস্যা ছিল এবং থাকবে। সমস্যা মোকাবিলা করে এগিয়ে যাওয়াই মানুষের কর্ম। তবে সমাজে সব সময়ই কিছু অনৈতিক মানুষেরও বসবাস রয়েছে। তাদের অনৈতিক কর্মকাণ্ডের কারণে বিপর্যয় নেমে আসে। বিপর্যয় রোধ করতে হলে এদের ব্যাপারেও সতর্ক থাকাটাও জরুরি। সরকার এদের প্রশ্নে কঠোর সিদ্ধান্তে এগিয়ে যাবে বলেই আমাদের বিশ্বাস এবং প্রত্যাশা।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close