reporterঅনলাইন ডেস্ক
  ০৭ আগস্ট, ২০২২

ঝুঁকিতে চালের বাজার সতর্কতা জরুরি

টালমাটাল বিশ্ব। করোনা মহামারির পর যুদ্ধের ডঙ্কায় কাঁপছে পৃথিবী। পড়ে যাচ্ছে অর্থনীতির শক্তি। বিপর্যস্ত স্বাভাবিক চলাচল। দাম বাড়ছে পণ্যের। মূল্য কমছে টাকার। মূল্যস্ফীতির কবলে বিশ্ব মানব সম্প্রদায়। এ নিয়ে কারো কোনো মাথাব্যথা নেই। নিজেকে নিয়েই ব্যস্ত। অর্থনীতি আইসিইউতে যাওয়ার অপেক্ষায়। তবু বোধে ফিরছে না কেউ। আগ্রাসী চিন্তায় বিভোর সবাই। রাষ্ট্র থেকে পরিবার, সর্বত্রই যেন আগ্রাসী মনোভাবের অভয়ারণ্য। ঠিক এ রকম এক পরিবেশে মিডিয়া বলছে, বিরূপ আবহাওয়ায় ঝুঁকিতে বিশ্ব চালের বাজার।

প্রকাশিত সংবাদে বলা হয়, বৈরী আবহাওয়ার কারণে এ বছর চালের উৎপাদন কমে যাওয়ার আশঙ্কা করছে ভারতসহ এশিয়ার শীর্ষ চাল উৎপাদনকারী দেশগুলো, যা খাদ্যের মূল্যস্ফীতিকে আরো বাড়িয়ে দেওয়ার ঝুঁকি তৈরি করেছে। একে তো করোনা মহামরির কারণে সরবরাহে বাধা এবং সম্প্রতি রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ অন্যান্য শস্যের দাম আকাশচুম্বী করেছে। ফলে খাদ্যের মূল্যস্ফীতি পৌঁছে গেছে রেকর্ডের খুব কাছাকাছি। তবে গত দুই বছরের বাম্পার ফলন এবং রপ্তানিকারকদের বিশাল মজুদের কারণে দুর্ভিক্ষের হাত থেকে রক্ষা পেয়েছে বিশ্ব মানব সম্প্রদায়। এবার উৎপাদন কমে গেলে সংকট ঘনীভূত হবে। বিশেষ করে চাল নিয়ে দেখা দেবে মহাসংকট।

তথ্য মতে, বিশ্বের মোট উৎপাদিত চালের ৯০ শতাংশই আসে এশিয়ার দেশগুলো থেকে। কিন্তু এশিয়ার এসব দেশে এবার বৈরী আবহাওয়ার কারণে পরিস্থিতি পাল্টে যেতে পারে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা। ন্যাশনাল অস্ট্রেলিয়া ব্যাংকের কৃষি অর্থনীতিবিদ ফিন জিবেল বলেছেন, ‘প্রধান রপ্তানিকারক দেশগুলোর উৎপাদন কমার সঙ্গে চালের দাম ঊর্ধ্বমুখী হওয়ার বিষয়টি সরাসরি যুক্ত। উন্নয়নশীল বিশ্বে অনেক দেশেই খাবারের দাম ক্রয়ক্ষমতার ভেতরে রাখা কঠিন হয়ে পড়েছে। চালের দাম বাড়লে পরিস্থিতি আরো জটিল করে তুলবে।

বাংলাদেশের খাদ্য তালিকায় চাল অন্যতম স্থান দখল করে আছে। বিশ্ব মানচিত্রে এ চালের উৎপাদন কমে গেলে তার একটি নেকিবাচক প্রভাব পড়বে। মোকাবিলা করতে হবে দেশকেই। চালের দাম বাড়বে। ক্রয়ক্ষমতা হারানোর সম্ভাবনা বেড়ে যাবে। অর্থাৎ বিষয়টি বাংলাদেশের জন্য একটি অশনিসংকেত। আর সে কারণেই যা করার আগেভাগেই ঠিক করতে হবে। আগামীতে চাল উৎপাদনের দিকে বিশেষ দৃষ্টি দেওয়াই হবে প্রধান কাজ। সরকার নিশ্চয়ই ভাবছেন এবং সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনায় বিষয়টি মোকাবিলার পথ খুঁজছে। আমরা যদি চালের ঘাটতি মেটাতে পারি, তাহলে সহজেই সে ক্রান্তিকাল অতিক্রমে সফল হব। আমদানি নয়, চালের স্বয়ংসম্পূর্ণতাই দেশ ও জাতিকে রক্ষা করতে পারে।

তথ্য বলছে, ভারতের যেসব এলাকায় ধান বেশি হয়, সেসব জায়গায় এবার বৃষ্টি হয়েছে কম। চীন পুড়ছে দাবদাহে। বাংলাদেশের বন্যা এবং ভিয়েতনামের ধান-চালের মানের অবনতির কারণে সার্বিকভাবে উৎপাদন কমবে বিশ্বের সবচেয়ে বেশি চাল উৎপাদনকারী দেশসমূহে। জাতিসংঘের ফুড অ্যান্ড এগ্রিকালচারাল অরগানাইজেশনের (এফএও) তথ্য মতে, ভারত, চীন ও বাংলাদেশসহ উৎপাদনকারী দেশসমূহ যেন প্রকৃতির শরণাপন্ন হয়ে আছে। আগামী কয়েক সপ্তাহের মধ্যে অবস্থার উন্নতি না হলে সংকট আরো ঘনীভূত হবে। তবে সংকট মোকাবিলা করেই বাংলাদেশের মানুষ বেঁচে আছে এবং থাকবে। প্রাকৃতিক দুর্যোগ আমাদের জীবনেরই একটি অংশ। আগাম তথ্য পাওয়ায় যুদ্ধের জন্য আগাম প্রস্তুতির দরকার। সরকার ও জনগণ সে প্রস্তুতি নেবে বলেই আমাদের বিশ্বাস এবং প্রত্যাশা।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close