reporterঅনলাইন ডেস্ক
  ২৫ জুন, ২০২২

একটি স্বপ্ন, আবেগ ও বিশ্বাসের নাম

আমাদের স্বপ্ন, আমাদের আবেগ ও বিশ্বাসের ভিতকে আমরা স্পর্শ করেছি ১৯৭১-এ। এটিই ছিল বাঙালি জাতির হাজার বছরের বঞ্চনার ইতিহাসের সবচেয়ে বড় স্বপ্ন। যে স্বপ্নের ওপর দাঁড়িয়ে আঁকা হয়েছে নতুন বাস্তবতা। পেয়েছি স্বাধীনতা। যে স্বাধীনতা আমাকে দিয়েছে মুক্ত বাতাস গ্রহণের সুযোগ। স্বপ্ন এবং আবেগ যেন যমজ দুই ভাই-বোন। একজনের চোখে পানি এলে আরেকজনের বুকের গভীরে নামে আষাঢ়ের ঢল। এ সময় বিশ্বাস হয়ে ওঠে অভিভাবক। পথ দেখিয়ে নিয়ে যায় সূর্যোদয়ের পথে। স্বাধীনতার অর্ধশত বছর পেরিয়ে আজও আমরা সে পথেই হাঁটছি। এখন আর স্বপ্নের সে বিশালতা না থাকলেও স্বপ্নের যেন শেষ নেই। ছোট ছোট স্বপ্নে সাজাতে হয় সংসার- ‘দেশ, জাতি ও রাষ্ট্রের’। সেই ছোট ছোট স্বপ্নের একটির আজ জন্মদিন। ‘পদ্মা সেতু’- তোমাকে শুভেচ্ছা...; স্বাগতম। রূপকার হিসেবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, তোমাকেও অভিনন্দন।

আমাদের আছে তিনটি বাগান। ফুল, ফল ও বনজ। এই তিন বাগানের ওপর নির্ভর করেই আমাদের বাঁচা-মরা। এই তিনের প্রথমটি আমাদের সংস্কৃতি, দ্বিতীয়টি অর্থনীতি আর ‘বনজ’ আমাদের রাজনীতি। তবে কাঠামোগত দিক দিয়ে অর্থনীতির ভূমিকাই প্রধান। স্বপ্ন আর আবেগের যেন এক মহান অভিভাবক। বিশেষ করে উন্নয়ন প্রশ্নে, নান্দনিক দেশ গড়ার প্রশ্নে। এখানে একটি কথা না বললেই নয়, ভালো কর্মই ভালো ফলাফলের জন্ম দেয়। আবার ভালো কর্মের কারিগর এই রাজনীতি। মানুষের কল্যাণে রাজনীতি পরিচালিত হলে উন্নয়ন অবধারিত। উন্নয়ন প্রশ্নে বিভিন্নজনের বিভিন্ন মত। তবে, ‘হচ্ছে না’- এমন কথা বলার লোকের সংখ্যা খুব বেশি নয়। আবার উন্নয়নের কথা সরাসরি অস্বীকার না করে একটি পক্ষ বলেছেন বা বলছেন, উন্নয়ন হলেও দুর্নীতি তার সুখ্যাতিকে খর্ব করছে। এরা উন্নয়নকে অস্বীকারও করছেন না। তাহলে বলা যায়, পদ্মা সেতু বাংলাদেশের সার্বিক উন্নয়ন অর্থাৎ অর্থনীতি, রাজনীতি ও সংস্কৃতিতে একটি ইতিবাচক ভূমিকা রাখতে সক্ষম। এটি একটি বহুমুখী প্রকল্প বলেই সার্বিক উন্নয়নের সঙ্গে এর সম্পর্ক। স্বল্প সময়ের মধ্যে এর একটি নান্দনিক ফলাফল দেখতে পাব বলেই আমাদের বিশ্বাস।

আমাদের কাছে পদ্মা সেতু এখন আর স্বপ্ন নয়, বাস্তবতা। দেশের মানুষের কাছে পদ্মা সেতু এক অন্য রকম আবেগের নাম, স্বপ্নের নাম। নাম বিশ্বাসের। দেশের কোটি কোটি মানুষ যে স্বপ্নটির দিকে চাতক পাখির মতো তাকিয়ে ছিল, আজ সেই সেতুটির উদ্বোধন। অপেক্ষাকৃত অনুন্নত অঞ্চলের সামাজিক, অর্থনৈতিক ও শিল্প বিকাশে উল্লেখযোগ্যভাবে অবদান রাখবে এই সেতুটি। প্রত্যক্ষভাবে প্রায় ৪৪ হাজার বর্গ কিলোমিটার বা দেশের মোট এলাকার ২৯ ভাগ অঞ্চলজুড়ে তিন কোটিরও অধিক মানুষ উপকৃত হবেন প্রত্যক্ষভাবে। দেশের পরিবহন নেটওয়ার্ক এবং আঞ্চলিক অর্থনৈতিক উন্নয়নের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ অবকাঠামো হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে এই সেতুটি। জিডিপিতে বাড়তি জোগান দেওয়ার ক্ষমতা ধরা হচ্ছে ১ দশমিক ২ শতাংশ। সুতরাং এই সেতুর সার্বিক সাফল্য কামনা করেই বলতে হয়, এটি আমাদের স্বপ্ন, আবেগ ও বিশ্বাসের প্রতিফলন। আমাদের অহংকার।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close