reporterঅনলাইন ডেস্ক
  ২০ জুন, ২০২২

বিলুপ্তির মুখে শ্বেত ভালুক

পরিবেশ দূষণের মুখে পৃথিবীর অনেক কিছুই তাদের অস্তিত্ব হারাতে বসেছে। বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, এধারা অব্যাহত থাকলে এক দিন বসবাসের অযোগ্য হয়ে পড়বে নান্দনিক এ গ্রহটি। ইতোমধ্যেই অসংখ্য জীব ও প্রাণিকুলের অস্তিত্ব খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। পরিবেশ ব্যবস্থাপনাকে ঢেলে সাজাতে না পারলে অক্সিজেনও তার চরিত্রে পরিবর্তন ঘটাতে পারে। তখন আল্লাহর এই বিশেষ নিয়ামত থেকে বঞ্চিত হবে মানুষ। বেঁচে থাকার সবচেয়ে বড় উপাদান না পেয়ে মানবজাতিকে অক্সিজেন সিলিন্ডার কাঁধে নিয়ে ঘুরতে হবে প্রকৃতির দরোজায়। প্রকৃতিরও তখন কিছুই করার থাকবে না। তার দরোজা থেকে ফিরতে হবে খালি হাতে। মানুষ না হয় সিলিন্ডার কাঁধে বাঁচার অপচেষ্টা করবে, কিন্তু অন্য প্রাণিকুল!

কিছুকাল আগেও শ্যামদেশ অর্থাৎ থাইল্যান্ডে শ্বেত হস্তির বসবাস দেখেছে মানুষ। এখন তার কোনো অস্তিত্ব নেই। কিন্তু কেন? এ কেনর একটিই উত্তর। পরিবেশ দূষণের কারণে তাদের অস্তিত্বকে আশ্রয় নিতে হয়েছে কালের গহ্বরে। যদি প্রশ্ন করা হয়, পরিবেশ দূষণ করল কে? সবাই সমস্বরে বলবে, ‘মানব প্রজাতি’। তাই নির্দ্বিধায় বলা যায়, মানব প্রজাতির হাতেই এক দিন জাতি ও সভ্যতার ধ্বংস অনিবার্য। সুতরাং এখনো সময় আছে, সময় থাকতে সাবধান হতে হবে। প্রকৃতির ঐকতানকে বিনষ্ট না করে সহাবস্থানের পথে ফিরে আসতে হবে।

আমরা জানি, শ্বেত ভালুকের প্রধান আবাসস্থল মেরু অঞ্চলের হিমশীতল পরিবেশ। কিন্তু বৈশ্বিক উষ্ণতার কারণে যেভাবে মেরুর বরফ গলতে শুরু করেছে, তাতে বিনষ্ট হচ্ছে তাদের আবাসভূমি। এরই মধ্যে বিপন্ন প্রাণীর তালিকায় উঠে এসেছে শ্বেত ভালুকের নাম। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, জলবায়ু পরিবর্তনের গতি রোধ করা না গেলে এই শতাব্দীর শেষদিকে প্রাণীটি বিলুপ্ত হবে। তবে একদল বিজ্ঞানী বলেছে অন্যকথা। বরফ ছাড়াই কিছু শ্বেত ভালুক তাদের চরিত্রে পরিবর্তন ঘটিয়ে বাঁচার উপায় খুঁজে পেয়েছে। ইতোমধ্যেই তারা বছরে আট মাসেরও বেশি সময় সামুদ্রিক বরফহীন এলাকায় বেঁচে থাকার অভ্যাস গড়ে তুলতে সম্মত হয়েছে। এরা মেরু অঞ্চলের ভালুক নয়। এদের বসবাস গ্রিনল্যান্ডের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চল।

প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে। মেরু অঞ্চলের শ্বেত ভালুকরা যাবে কোথায়! তাদের অস্তিত্ব রক্ষার পরিবেশ হারিয়ে গেলে পরিণতি কী হবে? সে প্রশ্নের জবাব না মিললেও বাস্তবতা বলছে হারিয়ে যাবে। যেভাবে অসংখ্য প্রাণী ও জীবগোষ্ঠীর অপমৃত্যু হয়েছে। তথ্যমতে, বর্তমান পৃথিবীতে আনুমানিক ২৬ হাজার শ্বেত ভালুকের উপস্থিতি পাওয়া গেছে। বিজ্ঞানীরা বলছেন, এটি সত্য যে, বৈশ্বিক উষ্ণতা বৃদ্ধির হার কমাতে না পারলে মেরু ভালুকের বিলুপ্তি অবিসম্ভাবি হয়ে দাঁড়াবে। এখন বলতে হয়, পরিবেশ বিনষ্ট হওয়ার কারণে ডায়নোসর ও শ্বেত হস্তির মতো বিশাল প্রাণীর অস্তিত্ব বিলুপ্ত হলে দেহগত দিক থেকে আমাদের অস্তিত্ব কোথায় গিয়ে দাঁড়াতে পারে, তা সহজেই অনুমেয়। করোনাভাইরাস তার একটি ছোট্ট নমুনা আমাদের দেখিয়েছে।

আমরা মনে করি, সুস্থভাবে বেঁচে থাকার জন্য প্রকৃতিই আমাদের সবচেয়ে ঘনিষ্ঠ সহযোগী। নিকটতম প্রতিবেশী। প্রকৃতি অসুস্থ হলে আমরাও অসুস্থ হয়ে পড়ব। তাই নিকটতম প্রতিবেশীকে সুস্থ ও সবল রাখার দায়িত্ব মানবজাতিকেই নিতে হবে। অন্যথায় এ জাতিকে এক দিন অক্সিজেন সিলিন্ডার কাঁধে নিয়েই বেঁচে থাকতে হবে; যা সভ্য জাতি হিসেবে কোনোভাবেই কারো কাম্য হতে পারে না।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close