reporterঅনলাইন ডেস্ক
  ২৮ মে, ২০২২

স্বয়ংসম্পূর্ণতাই একমাত্র পথ

মিডিয়াতে চোখ রাখতেই দেখা যেত সীমান্তে মানুষ হত্যার খবর। বলা হতো গরু পাচারকারীকে হত্যা করা হয়েছে। এখন আর সেরকম খবর চোখে পড়ে না। হত্যা যে হয় না তাও নয়। তবে কারণ খুঁজতে গিয়ে জানা যায়, ওরা গরু পাচারকারী নয়। কারণ অন্যত্র। বাস্তবতা হলো, বাংলাদেশ এখন গরু উৎপাদনে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন করেছে। পাশের দেশ থেকে গরু আনার আর প্রয়োজন পড়ে না। শুধু পশু উৎপাদনের ক্ষেত্রেই নয়, কৃষির অনেক ক্ষেত্রেই বাংলদেশের সাফল্য চোখে পড়ার মতো। যে কারণে করোনা অতিমারিতে অনেক দেশের অর্থনীতি ভেঙে পড়লেও বাংলাদেশকে তেমনভাবে তা স্পর্শ করতে পারেনি। এর অন্যতম কারণ এ সময় কৃষিতে আমাদের অসামান্য অর্জন। এখান থেকে আমরা শিক্ষা নিতে পারি যে, স্বয়ংসম্পূর্ণতা একটি রাষ্ট্র কাঠামোকে কতটা শক্তিশালী করতে পারে। সম্ভবত বাংলাদেশ সে পথেই পা বাড়িয়েছে।

কোরবানি ঈদের এখনো বাকি প্রায় দেড় মাস। প্রস্তুতি চলছে বেপারি ও খামারিদের। তিন-চার সপ্তাহ পর থেকে জমে উঠবে দেশের বিভিন্ন পশুর হাট। প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের তথ্য মতে, দেশে এবারও পশুর কোনো সংকট নেই, আমদানির প্রয়োজন হবে না। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, দেশে প্রস্তুত হওয়া পশু দিয়ে চাহিদা মেটানো সম্ভব। অধিদপ্তরের তথ্য মতে, গত কোরবানির ঈদে দেশে পশুর সংখ্যা ছিল ১ কোটি ১৯ লাখ ১৬ হাজার। যার মধ্যে গরু-মহিষ ছিল ৪৫ লাখ ৪৭ হাজার, ছাগল-ভেড়া ছিল ৭৩ লাখ ৬৫ হাজার ও অন্যান্য পশু ছিল ৪ হাজার ৭৬৫টি।

গত বছর দেশ ছিল করোনা আক্রান্ত। কোরবানি ঈদে পশু বিক্রির পরিমাণ ছিল কম। তবে এবার করোনার প্রভাব অস্তাচলে যাওয়ার কারণে চাহিদা বাড়বে। বাড়ার পরিমাণ দশ শতাংশ ছাড়িয়ে যেতে পারে। তবুও শঙ্কার কোনো কারন নেই। উৎপাদনের মাত্রাও বেড়েছে। তবে গো-খাদ্যের দাম বাড়ায় গরুর দামও কিছুটা বাড়তে পারে। বাড়ার প্রশ্নে কোনো বিতর্ক নেই। তবে লাগাম ছাড়া বৃদ্ধিতে আপত্তি আছে। আমরা জানি, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে বিশ্ব বাজার ব্যবস্থা অনেকটা হেলে পড়েছে। দাম বাড়ার অন্যতম কারণ হিসেবে এই যুদ্ধকেই দায়ী করছেন বিশ্লেষকেরা। এরপরেও কথা থাকে। আমাদের অর্থনীতির দেখভাল করার দায়িত্ব আমাদের। সেভাবেই আমাদের অর্থনীতিকে পরিচালিত করতে হবে। কাপড় বুঝে জামা তৈরির কথা ভাবতে হবে। আর সেটাই হবে যুক্তিযুক্ত। একই সঙ্গে তাকাতে হবে উৎপাদনের দিকে। দেশজ পণ্যের উৎপাদনে বিশেষ করে কৃষিজাত পণ্য উৎপাদনে দিতে হবে সর্বোচ্চ গুরুত্ব।

ঘরে খাবার থাকলে অন্যত্র কৃচ্ছতাসাধন হয় সহজসাধ্য। তাই সর্বপ্রথম খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জনই হোক আমাদের লক্ষ্য। এ ক্ষেত্রে আমাদের সফলতা যেমন আছে ঘাটতিও কম নয়। এই ঘাটতিকে সামনে রেখে পরিকল্পনা সাজাতে হবে। কাজে নামতে হবে। স্বাধীন হবার পর, শূন্য থেকে এ পর্যন্ত যখন আসতে পেরেছি তখন ঘাটতিপূরণ কোনোভাবেই অসম্ভব নয়। এদেশের কৃষিজীবী মানুষ এরই মধ্যে তা প্রমাণ করে দেখিয়েছে। প্রয়োজন কিছু সহযোগিতা। সরকার তা করছে। তবে ঘাটতি পূরণের জন্য পর্যাপ্ত নয়। আমরা মনে করি, এ বিষয়ে সরকার বিশেষ গুরুত্ব সহকারে এগিয়ে আসবে এবং আসন্ন বাজেটে তার প্রতিফলন আমরা দেখব।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close