reporterঅনলাইন ডেস্ক
  ২৬ মে, ২০২২

বিলাসী পণ্যে কর ইতিবাচক

বহুদিন পরে হলেও সরকার ফল, প্রসাধনী, আসবাবসহ বিলাসী ১৩৫ পণ্যের ওপর আমদানিতে ২০ শতাংশ পর্যন্ত নিয়ন্ত্রণমূলক শুল্ক (আরডি) অরোপ করেছে। যদিও এ দেশে প্রাইভেট কার অবশ্যই একটি বিলাসী পণ্য, কিন্তু তার আরডি একই অবস্থানে (৩০ শতাংশ) রয়েছে। সরকার আমদানিব্যয়ের ওপর চাপ কমাতে নতুন করে ১৩৫ পণ্যের ওপর এ কর আরোপ করেছে। মূলত ফল, ফুল, প্রসাধনী সামগ্রী ও ফার্নিচার- এই চারটি খাতের বিভিন্ন পণ্যে আরডি আরোপ করা হয়েছে। ফলে এসব পণ্যের বাজারমূল্য বেড়ে যাবে। তবে, বেড়ে গেলেও দেশের কোনো ক্ষতি নেই। যারা এসব পণ্যের ভোক্তা তাদেরও কোনো মাথাব্যথা নেই। যদি আরো বাড়ানো হতো তাতেও মনে হয় তাদের শরীরে কোনো আঁচ লাগত না। আর সাধারণ মানুষ কোনো দিন এসব বিলাসী পণ্যের ক্রেতা হওয়ার যোগ্যতাই অর্জন করতে পারেনি। তবে মধ্যবিত্তরা কিছুটা হলেও বিব্রতকর অবস্থায় পড়তে পারেন। বিশেষ করে ফলের ওপর আরোপিত করের কারণে। তবু বলতে হয়, বিষয়টি মন্দের ভালো।

এসব পণ্যের ওপর সর্বনিম্ন ৩ শতাংশ এবং সর্বোচ্চ ২০ শতাংশ হারে বাড়তি আরডি আরোপ করা হয়েছে। বর্তমান বৈশ্বিক প্রেক্ষাপটে আন্তর্জাতিক বাজারে পণ্যমূল্য লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে। ফলে বাড়তি দামে পণ্য আমদানি করতে হচ্ছে। এতে চাপ পড়ছে রিজার্ভে। পাশাপাশি ডলারের বিপরীতে টাকার অবমূল্যায়নও করতে হচ্ছে। বাজেট আগামী জুনে। কোনো পণ্যের ওপর বাড়তি শুল্কারোপের বিষয়টি সাধারণত বাজেটেই হয়ে থাকে। কিন্তু এবার বাজেটের আগে তা করা হয়েছে। এতে সাধারণ মানুষের মনে একটি জিজ্ঞাসার জন্ম দিয়েছে। তারা ভাবছেন, বাজেটের আগে এই করারোপ কী আসন্ন বাজেটকে প্রভাবিত করে অন্য অনেক কিছুর ওপর করের বোঝা নেমে আসার আগাম সতর্কবার্তা!

আমরা মনে করি, সরকার অন্য যেকোনো পণ্যের ওপর করারোপ করতেই পারে। তবে তা যেন নিত্যপ্রয়োজনীয় কোনো পণ্যকে স্পর্শ না করে। সরকার যদি বিলাসী যেকোনো পণ্যের ওপর করারোপ করে তাকে সাধারণ মানুষ নিশ্চয়ই স্বাগত জানাবে। সরকার নিশ্চয়ই সাধারণ মানুষের কথা মাথায় রেখে আগামী বাজেট ঘোষণা করবে। এমনিতেই নিত্যপণ্যের বাজার এখন সাধারণ মানুষের জন্য এক বিব্রতর অবস্থার সৃষ্টি করেছে। এ অবস্থা যেন আরো বিব্রতকর অবস্থার জন্ম না দেয় সেদিকে খেয়াল রাখাই আজ সময়ের দাবি।

এদিকে এনবিআরের পক্ষ থেকে বলা হয়, বাংলাদেশ ফুল ও ফল চাষে যথেষ্ট ভালো অবস্থানে রয়েছে। আরডি আরোপের ফলে দেশীয় ফুল ও ফলচাষিদের বাজার কিছুটা হলেও চাঙা হবে। এতে চাষিরা অর্থনৈতিকভাবে লাভবান এবং উৎপাদনে আরো মনোযোগী হবেন। পাশাপাশি আমদানিনির্ভরতাও কমবে। ফার্নিচার ও প্রসাধনীর ক্ষেত্রেও একই কথা প্রযোজ্য।

এনবিআরের পক্ষ থেকে বলা হয়, ‘আমদানিনির্ভরতা কমবে’। বিষয়টি দেশের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি কথা। যে কথা এ দেশের মানুষ বহুদিন ধরেই চিন্তা করে আসছে। দেশ স্বাধীন হয়েছিল একটি স্বনির্ভর বাংলাদেশ দেখার জন্য। দুর্ভাগ্যজনক হলেও সত্য, সাধারণ মানুষের হাতে সে ক্ষমতা ছিল না। যারা ক্ষমতায় ছিলেন, তারা বিষয়টি খুব একটা গুরুত্ব দিয়ে বিবেচনা করেননি বলেই এখনো স্বপ্ন স্বপ্নই থেকে গেছে। তবু বলতে হয়, আমরা এগিয়েছি অনেক। তবে, এখনো অনেকটা পথ বাকি। সঠিক পরিকল্পনা এবং সততার মধ্য দিয়ে চলতে পারলে রাত পোহাতে আর বেশি সময়ের প্রয়োজন হবে না। সূর্যোদয়ের দেখা মিলবেই- সেই প্রত্যাশাতেই রইলাম।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close