reporterঅনলাইন ডেস্ক
  ২৪ মে, ২০২২

উন্নয়ন আরো জোরদার করতে হবে

গ্যাস সংকট নিয়ে নানা ধরনের কথা শোনা যাচ্ছে। বলা হচ্ছে, ২০৩০ সাল নাগাদ দেশে গ্যাস সংকট তীব্র হবে। ক্রমবর্ধমান শিল্পায়নের ফলে গ্যাসের চাহিদা বাড়লেও সরবরাহ আরো সংকুচিত হবে। এতে বিদেশ থেকে আমদানি করা জ্বালানি দেশের চাহিদা জোগানের একমাত্র নির্ভরতা হয়ে উঠলেও দেশের জ্বালানির চাহিদা মেটানো নিঃসন্দেহে বড় ধরনের চ্যালেঞ্জ। কারণ উৎপাদন যে হারে বাড়ছে, চাহিদা বাড়ছে এর বহুগুণ। তাই অদূর ভবিষ্যতে গ্যাসের সংকট আরো তীব্র হবে। তবে যে যা-ই বলুক শঙ্কার কোনো কারণ নেই। গ্যাসক্ষেত্রগুলোর ওপর গবেষণা করে যথাযথ প্রক্রিয়ায় উত্তোলন করা গেলে নিজস্ব উৎপাদনের মাধ্যমেই শতভাগ গ্যাসের চাহিদা মেটানো সম্ভব বলে মত দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। তাদের মতে, বর্তমানে নিজেদের উৎপাদন সক্ষমতা থেকে চাহিদার ৭৫ শতাংশ মেটানো হচ্ছে। এটিকে দ্বিগুণ করার মাধ্যমে শুধু সক্ষমতা নয়, ঘাটতিও মেটানো সম্ভব।

বলা সংগত, দেশে গ্যাসের প্রকৃত চাহিদা বর্তমানে দৈনিক চার হাজার মিলিয়ন ঘনফুট। তবে নিজস্ব উৎপাদন ও আমদানি মিলিয়ে জোগান দেওয়া হচ্ছে মাত্র তিন হাজার মিলিয়ন ঘনফুট। এতে বিদেশ থেকে অনেক টাকায় গ্যাস আমদানি করেও চাহিদা পূরণ হচ্ছে না। বরং ঘাটতি থেকেই যাচ্ছে। কিন্তু গ্যাসক্ষেত্রগুলোর ওপর গবেষণা করে যথাযথ প্রক্রিয়ায় উত্তোলন করা গেলে, নিজস্ব উৎপাদনের মাধ্যমেই শতভাগ গ্যাসের চাহিদা মেটানো সম্ভব। বর্তমানে নিজেদের উৎপাদন সক্ষমতা থেকে চাহিদা পূরণের সক্ষমতার ৭৫ শতাংশ মেটানো হচ্ছে। এটিকে দ্বিগুণ করার মাধ্যমে শুধু সক্ষমতা নয়, ঘাটতিও মেটানো যেতে পারে। সম্প্রতি এক গবেষণায় জ্বালানি বিশেষজ্ঞ ড. আমিরুল ইসলাম তার এক গবেষণায় বাংলাদেশে গ্যাস উত্তোলনের যেসব কূপ বন্ধ হয়ে গেছে, সেগুলো থেকে সেকেন্ডারি রিকভারি করে ফের গ্যাস উত্তোলন সম্ভব বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন। কাতার, নরওয়ে বা মেক্সিকোর মতো বিশ্বের গ্যাস উৎপাদনকারী অনেক দেশই ‘প্রাইমারি রিকভারি’ শেষে সেকেন্ডারি রিকভারির মাধ্যমে গ্যাস উত্তোলন করছে। বাংলাদেশের যেসব গ্যাসকূপ বন্ধ হয়ে গেছে, সেগুলো থেকে প্রাইমারি রিকভারির মাধ্যমে ৫০ শতাংশ গ্যাস উত্তোলন করা হয়েছে। বাকি অর্ধেক গ্যাস এখনো রয়ে গেছে। বিশ্বজুড়েই গবেষণা বলছে, প্রাথমিক পর্যায়ে সর্বোচ্চ ৫০ শতাংশ গ্যাস উত্তোলন সম্ভব হয়। পরবর্তী আরো দুটি ধাপে উত্তোলন করলে ৯৫ শতাংশ পর্যন্ত গ্যাস উত্তোলন করা যেতে পারে। কিন্তু বাংলাদেশের কোম্পানিগুলো এ রকম কোনো চেষ্টা কখনো করেনি।

আমাদের উচিত তার গবেষণাটিকে যথাযথ মূল্যালন করা এবং প্রাইমারি রিকভারির মাধ্যমে গ্যাস উত্তোলনের বিষয়টিকে গুরুত্ব দেওয়া। কারণ দেশে প্রাকৃতিক গ্যাসের চাহিদা ক্রমেই বাড়ছে। বাড়তি চাহিদা পূরণে গ্যাস উৎপাদনকারী বিদেশি কোম্পানিগুলোর ওপর নির্ভরশীলতা তেমন বাড়ছে, একই সঙ্গে তরল প্রাকৃতিক গ্যাস (এলএনজি) আমদানির দিকেও ঝুঁকছে দেশ। এই আমদানি নির্ভরতা ভবিষ্যতে ঝুঁকির কারণ হতে পারে। তাই গ্যাস উৎপাদনে সরকারকে অবশ্যই গুরুত্ব দিতে হবে। মনে রাখা উচিত, টেকসই জ্বালানি নিশ্চিত করতে নিজস্ব উৎপাদন বাড়ানোর কোনো বিকল্প নেই। আমাদের যে গ্যাসক্ষেত্রগুলো রয়েছে, সেগুলো থেকে উৎপাদন আরো বাড়াতে হবে। একই সঙ্গে গ্যাস অনুসন্ধান এবং উন্নয়নও জোরদার করতে হবে।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close