reporterঅনলাইন ডেস্ক
  ২৩ মে, ২০২২

প্রসঙ্গ : জবি ছাত্রী ডাইনিং হল

একটি চিঠি হাতে পাওয়ার পর মনে হলো বিষয়টি যথাযত কর্তৃপক্ষের গোচরে আনাটা দায়িত্বের মধ্যে পড়ে যায়। চিঠিটি লিখেছেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন ছাত্রী। কারো কোপানল থেকে রক্ষার জন্য ছাত্রীর নাম প্রকাশ করা থেকে বিরত থাকতে হয়েছে। আমরা চাই না তিনি কোনো বিব্রতকর অবস্থার মধ্যে নিপতিত হন। দেশের সার্বিক অবস্থা বিবেচনা করেই এই সতর্কতা। আবাসিক ছাত্রীর ঠিকানা বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হল। অভিযোগ, ডাইনিং হলের সার্বিক ব্যবস্থাপনার বেহাল দশার ওপর ভিত্তি করে। বলেছেন, এ বেহাল দশার জন্য স্বাস্থ্যঝুঁকির মধ্যে দিনাতিপাত করছেন সহস্রাধিক ছাত্রী। কর্তৃপক্ষের উদাসীনতাই পরিস্থিতিকে আরো জটিল করে তুলছে। আমরা পত্রটির মূল অংশ কোনো ধরনের কাটছাঁট না করে হুবহু তুলে ধরলাম।

‘জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় (জবি) একমাত্র বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিব ছাত্রী হলে খাবারের মান ভালো না হওয়ায় শিক্ষার্থীরা স্বাস্থ্যঝুঁকিতে রয়েছে। এ নিয়ে তাদের মধ্যে রয়েছে তীব্র অসন্তোষ। হলের বেশির ভাগ শিক্ষার্থীর অভিমত, মাছ ঠিকমতো না ধোয়ার কারণে শুঁটকির মতো গন্ধ বের হয়। মাংসের ক্ষেত্রেও একই অবস্থা। অথচ খাবারের দাম চড়া। মাসে প্রায় ৩০০০-৪০০০ টাকা খরচ হয় খাবার বাবদ। অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে তৈরি করা হয় খাবার, রাখা হয় ঢাকনা ছাড়া। খাবার আশপাশে মাছি পড়ে থাকতে দেখা যায়।

এ ছাড়া হলের পরিবেশও দিন দিন নোংরা হয়ে যাচ্ছে। এ বিষয়ে হলের ক্যানটিন পরিচালকরা খাবারের মান ঠিক আছে এবং দামও ঠিক আছে- এমন দাবি করলেও বাস্তবে দেখা যায় ভিন্নতা। কিছুদিন আগেও ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়েছিল ছাত্রী হলের অর্ধশতাধিক শিক্ষার্থী।

ছাত্রী হলের এ সমস্যাগুলো সমাধানের জন্য এখনই কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া উচিত। খাবারের মান নিশ্চিত করলে স্বাস্থ্যঝুঁকি থেকে বেরিয়ে আসতে পারবেন হলে থাকা সহস্রাধিক শিক্ষার্থী। এ বিষয়ে হল প্রভোস্ট ও কর্তৃপক্ষের সুনজর একান্ত কাম্য।’

অভিযোগের সত্য-মিথ্যা প্রমানের দায়িত্ব আমাদের নয়। এজন্য যথাযত কর্তৃপক্ষ নিশ্চয়ই আছে। বিষয়টি তাদের ওপর ছেড়ে দিয়েই বলছি, প্রকৃত সত্য উদঘাটন করে সহস্রাধিক শিক্ষার্থীর জন্য ডাইনিং হলের নান্দনিক পরিবেশ ফিরিয়ে দিন। ওরা আমাদেরই সন্তান। সন্তানকে উপযুক্ত পরিবেশ গড়ে দিতে না পারলে সুস্থ ও সবল নাগরিক হিসেবে গড়ে তোলা কারো পক্ষেই সম্ভব নয়। দেশকে সুস্থ সন্তান উপহার দিতে না পারলে সুস্থ দেশ গড়াও সম্ভব নয়।

এমনিতেই পুরো দেশটা ভেজালবৃত্তে আটকে আছে। বাজারে এমন কোনো পণ্যের সন্ধান পাওয়া যাবে না, যা ভেজালমুক্ত। এর পরও যদি ডাইনিং হলের খাবার অব্যবস্থাপনায় পড়ে খাবারের অনুপযুক্ত হয়ে যায়, তখন আমরা যাব কোথায়! আসলে আমাদের মস্তিষ্কে অর্থাৎ চিন্তা, চেতনা ও অনুশীলনে ভেজালের অনুপ্রবেশ ঘটেছে। এখানে আমাদের বলতে সমাজের সমাজপতিদের কথা বলা হয়েছে। মস্তিষ্ক থেকে এই আবর্জনা পরিষ্কার করতে না পারলে বাজার থেকে, সমাজ থেকে, রাষ্ট্র থেকে ভেজাল সরানো প্রায় অসম্ভব। প্রশ্ন উঠতেই পারে- এ জঞ্জাল সরানোর দায়িত্ব নেবে কে?

আমরা মনে করি, দায়িত্ব প্রধানত সরকারকেই নিতে হবে। জনগণ তার নিজের স্বার্থেই সরকারের পাশে গিয়ে দাঁড়াবে। সম্ভব নয়, এ কথা সত্য নয়। এ দেশের মানুষ অনেক অসম্ভবকে সম্ভব করেছে। আমাদের স্বাধীনতা তার মধ্যে একটি। আমরা আরো মনে করি, বঙ্গবন্ধুর মতো নেতৃত্বই পারে সবকিছুই পাল্টে দিতে। আমরাও সেই পরিবর্তন চাই। মানুষের কল্যাণে রাষ্ট্রের পরিবর্তন।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close