reporterঅনলাইন ডেস্ক
  ২৮ জানুয়ারি, ২০২২

নতুন জাতের পেঁয়াজ উৎপাদনে সফলতা

বাংলাদেশ এগ্রিকালচারাল রিসার্চ ইনস্টিটিউশনের (বারি) নতুন উদ্ভাবন দেশের পেঁয়াজ উৎপাদনকে স্বয়ংসম্পূর্ণতা এনে দিতে সক্ষম- এমনটাই জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। সংবাদটি নিঃসন্দেহে আমাদের জন্য শুভ। উদ্ভাবিত পেঁয়াজের ফলন বছরজুড়েই। বর্তমানে এক ফলনের ওপরই নির্ভরশীল থাকতে হচ্ছে। প্রতিটি গাছের উচ্চতা ৫০-৫৫ সেন্টিমিটার। পেঁয়াজ গোলাকার এবং লালচে রঙের। প্রতিটি পেঁয়াজের গড় ওজন প্রায় ৯০-১০০ গ্রাম। বর্তমানে দেশে পেঁয়াজের জাতীয় গড় ফলন হেক্টরপ্রতি ১০ দশমিক ৫৬ টন হলেও নতুন জাতের বারি পেঁয়াজ-৫-এর ফলন হেক্টরপ্রতি ১৬-২২ টন। তথ্যই বলে দিচ্ছে উৎপাদন কোথায় গিয়ে দাঁড়াতে পারে।

পেঁয়াজ উৎপাদনে বিশ্বে বাংলাদেশের অবস্থান তৃতীয়। কিছুদিন আগেও যা ছিল দশম। দেশে পেঁয়াজের বর্তমান চাহিদা ৩৫-৩৬ লাখ টন। সেখানে গত বছর পেঁয়াজ উৎপাদন ছিল ৩২ লাখ টন। গত এক বছরে দেশের পেঁয়াজ উৎপাদন বেড়েছে ৮ লাখ টন। প্রতি বছর আমাদের ১০ লাখ টন পেঁয়াজ আমদানি করতে হয়। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, পেঁয়াজের নতুন জাত যদি সঠিক পদ্ধতি অবলম্বন করে চাষাবাদ করা সম্ভব হয়, তাহলে পেঁয়াজ উৎপাদনে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন কেবল সময়ের ব্যাপার মাত্র। এ যাবত বারি-৬ জাতের উচ্চফলনশীল পেঁয়াজ বাংলাদেশকে উপহার দিতে সক্ষম হয়েছে। এ ছাড়াও রয়েছে বছরে দুবার আবাদের সুবিধা। তবে প্রশ্ন থেকেই যায়। উৎপাদক এবং ভোক্তারা এর কতটুকু সুবিধা ভোগ করবে।

এ দেশে বাজার ব্যবস্থাপনা বড়ই নাজুক। এই নাজুক ব্যবস্থাপনাকে নাড়ানো যাচ্ছে না। বাজারের চাহিদা ও জোগানের লীলাখেলায় ক্রেতাপক্ষের অবস্থা বেসামাল। এ পর্যন্ত সরকারের পক্ষ থেকে যা করা হয়েছে তাতে কোনো লাভ হয়নি। অনৈতিক বাণিজ্যে সয়লাব হয়ে আছে সব বাজার। লাগামহীন দাম বাড়ছে প্রতিনিয়ত এবং তা কোনো কার্যকারণ ছাড়াই। সরকার রাষ্ট্র চালালেও বাজার ব্যবস্থাপনায় বসে আছে একদল সিন্ডিকেট। তাদের ইচ্ছা-অনিচ্ছার ওপর পণ্যের দাম বাড়ে। অনেকটা সিঁড়িভাঙা অঙ্কের মতো। চারিত্রিক বৈশিষ্ট্যও মনে রাখার মতো। একবার দাম বাড়লে তা আর কমেনি কখনো। তবে মানুষের দাম কমেছে!

অদ্ভুত নিয়মে যেন চলছে স্বদেশ। যারা পণ্য উৎপাদন করে তাদের কপালে জোটে না ন্যায্যমূল্য। আবার ক্রেতাপক্ষের নাকাল অবস্থা। নাগালের বাইরে থাকে পণ্যের দাম। সব অনিয়মই এখন নিয়মের সারথি। বাজারের দিকে তাকালেই সে কথা মনে করিয়ে দেয়। এ নিয়ে দেনদরবার কম হয়নি। চিৎকার-চেঁচামেচিও কম হয়নি। প্রতি বছর সময় বিচারে আমরা তার প্রতিধ্বনি শুনতে পাই। যে প্রতিধ্বনির মাঝে কোটি মানুষের আর্তনাদ ছাড়া আর কিছু শোনা যায় না। প্রতিনিয়ত সেই আর্তনাদ রাতের দেয়ালে মাথা কুটে হাই ড্রেনে আশ্রয় খুঁজে নেয়। সূর্যোদয়ের সঙ্গে সঙ্গে গতকালের কথা পেছনে ফেলে আবারও দাঁড়াতে হয় বাজারের মুখোমুখি।

ফলন বাড়বে। কিন্তু আমাদের স্বপ্নেরা বাড়বে না। অভিজ্ঞতা সে কথাই বলছে। কৃষি খাতে বাংলাদেশের উৎপাদন বিশ্বের অনেক দেশের কাছে আজ ঈর্ষণীয় হলেও আমাদের ঘরে নেই কোনো আনন্দ। লাভের গুড় সব পিঁপড়ের পেটেই চলে যাচ্ছে। ঠেকানোর কেউ নেই। যদিও এ দায়িত্ব রাষ্ট্রের। আমরা সরকারের দিকে তাকিয়ে ছিলাম, এখনো তা অব্যাহত রেখেছি। যদি বোধোদয় হয়!

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close