reporterঅনলাইন ডেস্ক
  ২৫ জানুয়ারি, ২০২২

পর্যটনশিল্পে বিশেষ সহায়তা জরুরি

বিশ্বের ৫১টি দেশের প্রধান শিল্প খাত হচ্ছে পর্যটন। দুই দশক ধরে এই শিল্প বিশ্বব্যাপী অর্থনৈতিক উন্নয়নের মূল হাতিয়ার। সেই কাতারে রয়েছে বাংলাদেশও। দেশে পর্যটন খাতে এখন পর্যন্ত মোট কর্মসংস্থান হয়েছে প্রায় ৪০ লাখ মানুষের। ২০১৯ সালে দেশের জাতীয় আয়ে পর্যটন খাতের অবদান ছিল ৯৫০ দশমিক ৭ বিলিয়ন টাকা যা জিডিপির ৪ দশমিক ৩০ শতাংশ। অদূর ভবিষ্যতে তা ৬ শতাংশে পরিণত হবে। এমন সম্ভাবনার মধ্যেই হানা দিল করোনা। প্রাথমিক ক্ষতি কাটিয়ে পর্যটনশিল্প যখন প্রাণ ফিরে পাচ্ছিল। তখন আবার ছড়িয়ে পড়ছে করোনার নতুন ভ্যারিয়েন্ট ওমিক্রন। যার বিরূপ প্রভাব পড়েছে দেশের পর্যটন খাতেও। বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে বাংলাদেশে ঘুরতে আসেন প্রকৃতিপ্রেমীরা। কিন্তু এ বছর প্রথম থেকেই পর্যটকরা তাদের বুকিং বাতিল করছেন। হোটেল, মোটেল ও গেস্ট হাউসগুলোতে স্বাভাবিকের চেয়ে কম রুম বুকিং হচ্ছে। আবার অনেকে রুম বুকিং দিয়ে করোনায় আক্রান্ত ও বিধিনিষেধে বুকিং বাতিল করছেন। ভিড় নেই সমুদ্রসৈকত, রেস্টুরেন্ট ও পর্যটন সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন পণ্যের দোকানসহ পর্যটন স্পটগুলোতে। নিঃসন্দেহে যা পর্যটনশিল্পের জন্য একটি অশনিসংকেত।

২০১৯ সালে বাংলাদেশের জিডিপিতে পর্যটনের প্রত্যক্ষ অবদান ছিল ৪ দশমিক ৩ শতাংশ। তা ছাড়া মোট কর্মসংস্থানের প্রায় ২ দশমিক ৯ শতাংশ তৈরি হয় এ খাতে। ওয়ার্ল্ড ট্রাভেল অ্যান্ড ট্যুরিজম কাউন্সিলের মতে, ২০২০ সালে পর্যটনশিল্পে ক্ষতির পরিমাণ প্রায় ৪ দশমিক ৪ ট্রিলিয়ন ডলার, যা ২০১৯ সাল থেকে প্রায় ৪৯ দশমিক ১ শতাংশ কম। এর ধাক্কা লেগেছে কর্মসংস্থানেও। ২০২০ সালে পর্যটনশিল্পে কর্মসংস্থান তৈরি হয়েছে মাত্র ২৭২ মিলিয়ন, যা ২০১৯ সালের চেয়ে ১৮ দশমিক ৫ শতাংশ কম। বাংলাদেশও এর বাইরে নয়। বলাবাহুল্য, শীতের মৌসুম এলেই প্রতি বছরই লাখো পর্যটক ভিড় করেন দেশের পর্যটন স্পটগুলোতে। কিন্তু গত বছরের মার্চ থেকে একের পর এক করোনার ধকল, তেল-গ্যাসের মূল্য বৃদ্ধিসহ স্বাস্থ্য সচেতনতার জন্য নানা পরিবহনের সমস্যার ফলে ঘুরে দাঁড়াতে পারছে না পর্যটন খাত। গত ১ সেপ্টেম্বর থেকে কিছুটা পরিবর্তন হলেও আবার ১৩ জানুয়ারি থেকে ওমিক্রনের সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ায় সরকারের নতুন নিষেধাজ্ঞার কারণে পর্যটনশিল্প ও এর ওপর নির্ভরশীল পেশাজীবীদের মধ্যে উদ্বেগ ও আতঙ্ক দেখা দিয়েছে। সরকারের এই নিষেধাজ্ঞার কারণে ক্রমান্বয়ে ধস নামছে পর্যটনশিল্পে। আবার জীবন বাঁচাতে নতুন করে লড়াই করতে হবে পরিবার-পরিজন নিয়ে নির্ভরশীল এ পেশার কর্মজীবীদের। তবে এ সংকট মোকাবিলায় সরকার যদি এর সঙ্গে সংশ্লিষ্টদের জন্য প্রণোদনা দেয় তাহলে কিছুটা হলেও পুষিয়ে নিতে পারবে পর্যটক খাতে জড়িত মানুষ। এ ছাড়া বিশ্বের বিভিন্ন দেশ পর্যটন স্থানগুলো চালু করার জন্য নানা রকম উন্নত প্রযুক্তি ব্যবহার করছে, যা আমাদের ক্ষেত্রেও হতে পারে অনুকরণীয়। পাশাপাশি সচেতনতা বৃদ্ধি করতে পারলে ও প্রতিকারমূলক ব্যবস্থা মেনে চললে দেশের পর্যটন খাতও পূর্বাবস্থা ফিরে পাবে- এটাই আমাদের প্রত্যাশা।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close