reporterঅনলাইন ডেস্ক
  ১৮ জানুয়ারি, ২০২২

পর্যটনশিল্পে বিশেষ সহায়তা জরুরি

করোনার বিপর্যয় থেকে রেহাই পাচ্ছে না বিশ্ব। ডেল্টার ভয়াবহতার রেশ টানতে না টানতেই আবার ছড়িয়ে পড়ছে নতুন ভ্যারিয়েন্ট ওমিক্রন। দেশে এখন ১০ থেকে ১৫ শতাংশ করোনা রোগীই ওমিক্রনে আক্রান্ত। এক সপ্তাহে দেশে করোনার সংক্রমণ বেড়েছে প্রায় ২০ গুণ। করোনাভাইরাসের প্রভাবে বিশ্বে ব্যবসা-বাণিজ্যে ব্যাপক বিরূপ প্রভাব পড়েছে। তা থেকে রেহাই পায়নি পর্যটনশিল্পও। আচমকা ছড়িয়ে পড়া এই ভাইরাসে পর্যটকশূন্য হয়ে পড়ছে বিশ্বের সবচেয়ে বড় ম্যানগ্রোভ বন সুন্দরবন। ফলে এ খাতে চলতি অর্থবছরের রাজস্বের টার্গেট নিয়ে শঙ্কায় রয়েছে বনবিভাগ। পর্যটক ভাটার কারণে এরই মধ্যে ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছে বাংলাদেশ। অক্টোবর থেকে এপ্রিল পর্যন্ত বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে বাংলাদেশে ঘুরতে আসেন প্রকৃতিপ্রেমীরা।

কিন্তু এ বছর প্রথম থেকেই বিভিন্ন দেশের পর্যটকরা তাদের বুকিং বাতিল করছেন। এর সঙ্গে যুক্ত হচ্ছে দেশীয় পর্যটকরাও, যা পর্যটনসংশ্লিষ্ট সবাইকে ভাবিয়ে তুলছে। সন্দেহ নেই, এর নেতিবাচক প্রভার কমবেশি অর্থনীতিতেও পড়বে।

বিশ্বের ৫১টি দেশের প্রধান শিল্প হচ্ছে পর্যটন। দুই দশক ধরে পর্যটনশিল্প বিশ্বব্যাপী সব অর্থনৈতিক, সামাজিক, রাজনৈতিক উন্নয়নের মূল হাতিয়ার হিসেবে কাজ করছে। বাংলাদেশও এর ব্যতিক্রম নয়। বিগত কয়েক বছরের ধারাবাহিকতায় বাংলাদেশের পর্যটনশিল্প এ দেশের আর্থসামাজিক উন্নয়নে ভূমিকা পালন করে আসছে। ২০১৯ সালে বাংলাদেশের জিডিপিতে পর্যটনের প্রত্যক্ষ অবদান ছিল ৪ দশমিক ৩ শতাংশ।

তা ছাড়া কর্মসংস্থানের প্রায় ২ দশমিক ৯ শতাংশ তৈরি হয় এ খাতে। ওয়ার্ল্ড ট্রাভেল অ্যান্ড ট্যুরিজম কাউন্সিলের মতে, ২০২০ সালে পর্যটনশিল্পে ক্ষতির পরিমাণ প্রায় ৪ দশমিক ৪ ট্রিলিয়ন ডলার, যা ২০১৯ সাল থেকে প্রায় ৪৯ দশমিক ১ শতাংশ কম। এর ধাক্কা লেগেছে কর্মসংস্থানেও। ২০২০ সালে পর্যটনশিল্পে কর্মসংস্থান তৈরি হয়েছে মাত্র ২৭২ মিলিয়ন, যা ২০১৯ সালের চেয়ে ১৮ দশমিক ৫ শতাংশ কম। বাংলাদেশও এর বাইরে নয়। বলাবাহুল্য, শীত মৌসুম এলেই প্রতি বছরই লাখো পর্যটক ভিড় করেন সৌন্দর্যের লীলাভূমি সুন্দরবনে।

কিন্তু গত বছরের মার্চ থেকে একের পর এক করোনার ধকল, তেল-গ্যাসের মূল্যবৃদ্ধিসহ স্বাস্থ্যসচেতনতার জন্য নানা পরিবহনের সমস্যার ফলে ঘুরে দাঁড়াতে পারছে না সুন্দরবনের পর্যটন খাত। গত ১ সেপ্টেম্বর থেকে কিছুটা পরিবর্তন হলেও আবার ১৩ জানুয়ারি থেকে ওমিক্রনের সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ায় সরকারের নতুন নিষেধাজ্ঞার কারণে পর্যটকশিল্প ও এর ওপর নির্ভরশীল পেশাজীবীদের মধ্যে উদ্বেগ ও আতঙ্ক দেখা দিয়েছে। সরকারের এই নিষেধাজ্ঞার কারণে ক্রমান্বয়ে ধস নামছে সুন্দরবন পর্যটনশিল্পে। আবার জীবন বাঁচাতে নতুন করে লড়াই করতে হবে পরিবার-পরিজন নিয়ে নির্ভরশীল এ পেশার কর্মজীবীদের।

তবে এ সংকট মোকাবিলায় সরকার যদি এর সঙ্গে সংশ্লিষ্টদের জন্য প্রণোদনা দেয় তাহলে কিছুটা হলেও পুষিয়ে নিতে পারবে সুন্দরবনের পর্যটক খাতে জড়িত মানুষ। এ ছাড়া বিশ্বের বিভিন্ন দেশ পর্যটন স্থানগুলো চালু করার জন্য নানা রকম উন্নত প্রযুক্তি ব্যবহার করছে, যা আমাদের ক্ষেত্রেও হতে পারে অনুকরণীয়। পাশাপাশি সচেতনতা বৃদ্ধি করতে পারলে ও প্রতিকারমূলক ব্যবস্থাগুলো যথাসম্ভব মেনে চললে করোনাভাইরাসকে আমরা জয় করতে পারব।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close