reporterঅনলাইন ডেস্ক
  ২১ নভেম্বর, ২০২১

খেলার নাম টি-টোয়েন্টি অতটা সহজ নয়

মাত্র ২০ ওভারের খেলা। ক্রিকেট পেরিফেরিতে আমরা তিন ধরনের খেলা দেখে থাকি। ১. টেস্ট, ২. ওয়ান-ডে ও ৩. টি-টোয়েন্টি। এই তিন ফরম্যাটের খেলার চরিত্রও এক নয়। এক-এক ফরম্যাটে এক-এক রকম। কিন্তু বাংলাদেশ পরিচালন পরিষদ সম্ভবত বিষয়টি বুঝে উঠতে পারেনি। অথবা বলা যায়, বোঝার মতো মেধা ও দক্ষতার অভাব রয়েছে। বছরের পর বছর ক্ষমতায় থেকে তারা টি-টোয়েন্টির ওপেনিং জুটি গড়তে ব্যর্থ হয়েছেন। বিশ্বকাপ ক্রিকেটে বাংলাদেশের পারফরম্যান্সে তা সবার কাছে পরিষ্কার হয়েছে। না ফিল্ডিং, না ব্যাটিং, না বোলিং- কোথাও ছবি আঁকতে পারেনি বাংলাদেশ। সর্বত্রই ব্যর্থতার ছাপ এবং তা ছিল এযাবৎকালের নগ্নতম রূপ। এ নিয়ে আলোচনা-সমালোচনাও কম হয়নি। এখনো চলছে। দায় গিয়ে পড়ছে পরিচালন পরিষদের প্রধান নাজমুল হাসান পাপনের ওপর। পড়াটাও স্বাভাবিক। দেশ পরিচালনাকালে কত না নেতিবাচক ঘটনার মুখোমুখি হতে হয়। নেতিবাচক কর্মটি প্রধানমন্ত্রী করেন না। করেন দল অথবা প্রশাসনের অন্য কেউ। কিন্তু দায় প্রধানমন্ত্রীকেই নিতে হয়।

বিশ্বকাপের সেই করুণ স্মৃতি ভুলতে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে মাঠে নেমেছে বাংলাদেশ। ব্যাপক চাপ ও সমালোচনাকে সঙ্গী করে গত শুক্রবার পাকিস্তানের বিরুদ্ধে প্রথম টি-টোয়েন্টিতে মাঠে নামে বাংলাদেশ। কিন্তু মাঠে আমরা কী দেখলাম! কোনো পরিবর্তন চোখে পড়েনি। টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটের ওপেনিং জুটির কোনো খোঁজ মেলেনি। নতুনদের কেউই কোনো পারফরম্যান্স দেখাতে পারেনি। সর্বত্রই ব্যর্থতার চাদরে ঢাকা এক শ্রাবণ আকাশ। এখানেও টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের অনেকটা কার্বনকপি। ক্ষেত্রবিশেষ অবনতির ক্ষতটা একটু বড়। কিন্তু তাতেও বোধহয় পরিচালন পরিষদের বোধোদয় ঘটেনি।

গতকাল শেষ হলো দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টি। এখানেও আলাদা করে আলোচনা করার কিছু নেই। পূর্বের খেলার ওপর ডিটো দিলেই চলবে। তবে দ্বিতীয় ম্যাচে ব্যর্থতা ছিল ত্রিমুখী। ব্যাটিং, বোলিং ও ফিল্ডিং চলেছে সমান্তরালে। ব্যর্থতা..., ব্যর্থতা এবং ব্যর্থতা। অনেকেই বলছেন, পরাজয়ের বৃত্ত থেকে বেরিয়ে আসতে পারছে না বাংলাদেশ। আমরা কথাটা একটু অন্যভাবে বলতে চাই। পরাজয়ের বৃত্ত ভেঙে ভেতরে যাওয়ার শক্তি এবং দক্ষতা বাংলাদেশের নেই। সুতরাং সেই দক্ষতা অর্জনের আগে বৃত্তের ভেতরে প্রবেশের চিন্তাটা নেহাত স্বপ্নবিলাস বৈ অন্যকিছু নয়। একটু কঠিন করে বলতে গেলে বলতে হয়, ঢাল নেই তলোয়ার নেই নিধিরাম সর্দার। প্রশ্ন হলো, কেন এই ক্রিকেটভক্তদের স্বপ্নবিলাসী করে গড়ে তোলার চেষ্টা করা হচ্ছে! কেন আফিম খাইয়ে ঘুম পাড়িয়ে রাখার চেষ্টা চলছে।

এ ব্যাপারে অনেকের অভিযোগ রয়েছে পরিচালন পরিষদের বিরুদ্ধে। তারা বলছেন, পরিচালন পরিষদের সদস্যরা খেলোয়াড়সহ সবার ওপর সামন্ত প্রভুর মতো আচরণ করেছেন এবং এখনো তা অব্যাহত আছে। তারা ভুলেই যান একজন দক্ষ ক্রিকেটার গড়তে কতটা সময়ের প্রয়োজন। কত অর্থের বিনিয়োগ থাকে। আর থাকে খেলোয়াড়ের অধ্যবসায়। প্রকৃত খেলোয়াড় হিসেবে নিজেকে গড়ে তুলতে একজন খেলোয়াড়কে তার জীবনের শ্রেষ্ঠ সময়টা ব্যয় করতে হয়। এদের মায়ের আদরে আর বাবার শাসনে লালন করতে হয়। অন্যথায় ধ্বংস অনিবার্য। আমরা মনে করি, সামন্ত আচরণ থেকে বেরিয়ে আসতে পারলেই বাংলাদেশের ক্রিকেট দ্রুত বিকশিত হতে পারে। পরিবেশ বিকশিত হলে বিকশিত হবে ক্রিকেট। যোগ্যতা প্রায় প্রতিটি খেলোয়াড়েরই আছে বলে আমাদের বিশ্বাস।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close