reporterঅনলাইন ডেস্ক
  ২৬ অক্টোবর, ২০২১

প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নে চাই আন্তরিকতা

দেশে রাজনৈতিক দলের নিবন্ধন নিয়ে বিতর্ক কম হয়নি। পক্ষে-বিপক্ষে প্রায় সব দল ও মতের নেতৃত্ব পর্যায়ের ব্যক্তিরা এ বিষয়ে নিজেদের মতামত দিয়েছিলেন। তবে প্রাসঙ্গিকতায় এটুকু বলতে পারি, রাজনৈতিক দলের নিবন্ধন নিঃসন্দেহে একটি গণতান্ত্রিক প্রত্রিয়া। কারণ যে দলগুলো দেশের গণতন্ত্রকে সংহত করবে, মানুষের মৌলিক অধিকার প্রতিষ্ঠায় অগ্রণী ভূমিকা পালন করবে; তাদের মধ্যে যদি সেই বোধের অভাব থাকে, তাহলে দেশের রাজনীতিতেও তার প্রভাব পড়বে, যা মঙ্গলের চেয়ে অমঙ্গলই বয়ে আনবে বেশি। সে বাস্তবতায় বাংলাদেশের রাজনৈতিক দলের নিবন্ধনের প্রয়োজনীয়তা অস্বীকার করা যাবে না। নির্বাচনী আইন ও বিধি যুগোপযোগী এবং সংস্কারের উদ্দেশ্যে রাজনৈতিক সংলাপ আয়োজন করেছিল বিগত এটিএম শামসুল হুদার কমিশন। সব দলই সেখানে অংশ নিয়েছিল। সংলাপে বসে রাজনৈতিক দলগুলো স্বপ্রণোদিত হয়ে নির্বাচনী আইনে অন্তর্ভুক্তির জন্য বেশ কিছু স্পর্শকাতর বিষয়ে সুপারিশ করেছিল নির্বাচন কমিশনকে। সব দলের অভিন্ন একটি সুপারিশ ছিল দলে ৩৩ শতাংশ নারী নেতৃত্ব নিশ্চিত করা।

বলা সংগত, দলগুলোর সেই অঙ্গীকার প্রায় এক যুগ আগের। সময়ের পরিক্রমায় নিজেদের সুপারিশ বাস্তবায়ন করতে দলগুলো ফাঁদে আটকে গেছে; যার প্রভাব পড়েছে ইসির ওপর। নির্বাচন কমিশন বলছে, নিজেদের দেওয়া প্রতিশ্রুতি নিজেরাই ভাঙছে রাজনৈতিক দলগুলো। ফলে ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে আইনে সংশোধনী আনতে হচ্ছে ইসিকে। কিন্তু বর্তমান কে এম নুরুল হুদার কমিশনের শুরু হয়েছে বিদায়ের ক্ষণগণনা। শেষ মুহূর্তে এসে গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশে (আরপিও), ১৯৭২ সংশোধনী আনতে কর্মযজ্ঞ হাতে নিয়েছে। আরপিওতে আটটি অনুচ্ছেদে সংশোধন, সংযোজন-বিয়োজন ও সংস্কারের লক্ষ্যে খসড়া প্রস্তাবনা চূড়ান্ত করতে হবে। বিশেষজ্ঞদের কেউ কেউ এই উদ্যোগকে বাঁকা চোখে দেখছেন। বলছেন, বিদায়ের ঠিক আগে এ ধরনের কর্মযজ্ঞ হাতে নেওয়ার অর্থ প্রতিষ্ঠানকে খেলো প্রতিষ্ঠানে পরিণত করা। আগামী বছরের ১৪ ফেব্রুয়ারি এ কমিশনের মেয়াদ পূর্ণ হবে। শেষ সময়ের এ উদ্যোগ বাস্তবায়নে নির্বাচন কমিশন বড় ধরনের ধাক্কা খাবে বলেই ধরে নিয়েছেন অনেকে। কারণ ইসির খসড়া প্রস্তাবনা পর্যালোচনায় দেখা গেছে, আরপিওর আটটি অনুচ্ছেদে সংযোজন-বিয়োজন এবং সংশোধনের সুপারিশ করা হয়েছে। এসবের মধ্যে নির্বাচন পরিচালনার জন্য সৃষ্ট জটিলতা ও সংকট দূর করা সংক্রান্ত সুপারিশ আছে ইসির নতুন এ প্রস্তাবে। আমরা চাই, কোনো ধরনের জটিলতা ছাড়াই বিষয়গুলোর সফল বাস্তবায়ন হবে, যাতে দেশের গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া অব্যাহত থাকে।

রাজনৈতিক দলগুলো নারী নেতৃত্ব ৩৩ শতাংশ দলে অন্তর্ভুক্ত করার জন্য গত ২০২০ সাল পর্যন্ত সময় নিলেও তা আদৌ পূরণ করেনি; তাই সময় বাড়িয়ে ২০৩০ সাল করার প্রস্তাব করা হচ্ছে। তার পরও প্রশ্ন থেকে যায়, এই প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নে কতটুকু আন্তরিক থাকবে রাজনৈতিক দলগুলো। কারণ তারা মুখে নারী নেতৃত্ব মানলেও দলে তাদের স্থান দিতে নারাজ। এ কথা অস্বীকার করার জো নেই। দেশের জনসংখ্যার প্রায় অর্ধেকই নারী। এরই মধ্যে নারীরা প্রায় সব খাতে নিজেদের যোগ্যতার প্রমাণ দিয়েছেন। এমনকি রাজনীতিতেও রয়েছে তাদের বিশাল অবদান। আমরা আশা করি, দ্রুততম সময়ের মধ্যে রাজনৈতিক দলগুলো তাদের অঙ্গীকর বাস্তবায়নে আরো আন্তরিক হবে।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close