reporterঅনলাইন ডেস্ক
  ২৫ অক্টোবর, ২০২১

উন্নয়নবিরোধীরাই উসকানিদাতা

দেশের দক্ষিণাঞ্চলের মানুষের স্বপ্নের সেতু পায়রা। পায়রা সেতু এখন আর স্বপ্নের দোলাচলে নেই। উন্মুক্ত করা হয়েছে চলাচলের জন্য। দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম চার লেনের দৃষ্টিনন্দন এ সেতুটি সর্বাধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করেই তৈরি হয়েছে। নির্মাণে ব্যয় হয়েছে ১ হাজার ৪৪৭ কোটি টাকা। বাংলাদেশের উন্নয়নে এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ সংযোজন। এই সেতু নিশ্চিতভাবে এ অঞ্চলের আর্থসামাজিক উন্নয়নে বিশেষ ভূমিকা রাখবে। পর্যটনশিল্পের জন্য পায়রা সেতুর ভূমিকার কথা নতুন করে উচ্চারিত হওয়ার প্রয়োজন নেই। সেতুটি সমুদ্র সঙ্গমকে করেছে শতভাগ আরামদায়ক। পর্যটনশিল্পকে দিয়েছে নতুন সম্ভাবনা। দেশের অবকাঠামো উন্নয়নে পায়রা সেতু নতুন করে উন্মোচন করল নবদিগন্ত।

স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায়মন্ত্রী যথার্থই বলেছেন। মন্ত্রী বলেছেন, কোনো বিশেষ অঞ্চলকে গুরুত্ব না দিয়ে সারা দেশেই সমভাবে উন্নয়ন কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে। কোনো অঞ্চল বাদ দিয়ে উন্নয়ন নয়। উন্নয়নের ছোঁয়া সর্বত্রই পৌঁছে দিতে হবে। নিজ এলাকায় উন্নয়ন বেশি হবে, অন্য এলাকা অবহেলিত থাকবে, এ নীতিতে আওয়ামী লীগ সরকার বিশ্বাস করে না। মানুষের জীবনযাত্রার মান উন্নয়নে বিভিন্ন উন্নয়ন কার্যক্রম চলমান রয়েছে এবং এই চলমান উন্নয়নের সঙ্গে দেশের সব মানুষকে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে পাশে দাঁড়াতে হবে।

আমরা মনে করি, এ দেশের মানুষ সব সময়ই উন্নয়নের পাশে থেকেছে, অংশ নিয়ে উন্নয়নের অংশীদার হয়েছে। সম্ভবত সে কারণেই বাংলাদেশের উন্নয়ন আজ বিশ্বের অনেকের কাছে ঈর্ষণীয়। যদিও সাম্প্রতিক একটি পরিকল্পিত ঘটনা আমাদের সব উন্নয়নকে কালিমালিপ্ত করার অপচেষ্টা করছে। এ দেশ কখনোই সাম্প্রদায়িকতার বৃত্তে শৃঙ্খলিত ছিল না, এখনো নেই। ইতিহাস সে কথাই বলে। তবে কুমিল্লার মন্দিরে মূর্তির পায়ের কাছে কোরআন রাখা এবং পরবর্তী সময়ের সহিংস ঘটনাকে এ দেশের মানুষ ঘৃণাভরে প্রত্যাখ্যান করেছে। তারা মনে করে, এ ঘটনার সঙ্গে মানুষের কোনো সম্পর্ক নেই। যারা ঘটিয়েছে তারা মনুষ্য সম্প্রদায়ের কেউ নয়। এ দেশের উন্নয়নে যারা শঙ্কিত, পেছন থেকে তারাই মদদ দিয়ে এই বিভৎস কর্মকাণ্ডের অবতারণা করেছে।

এরই মধ্যে ঘটনার সঙ্গে জড়িত একজনকে পুলিশ গ্রেপ্তার করেছে। জিজ্ঞাসাবাদ চলছে। বিশেষ ব্যক্তির পেছনে কারা ইন্ধন জুগিয়েছে, তাদের খোঁজা হচ্ছে। তাদের পাওয়া গেলে প্রকৃত রহস্যের পর্দা খুলতে পারে। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অবশ্য আশ্বাস দিয়ে বলেছেন, শিগগিরই তাদের জনগণের সামনে আনা হবে। আমরাও আশা করি, প্রকৃত অপরাধীদের মুখোশ উন্মোচিত হওয়া দরকার। যারা এ কাজটি করেছে তাদের এ অপরাধ ক্ষমার অযোগ্য। লালন, হাসন আর বারো আউলিয়ার এ দেশে তাদের বাস করার কোনো যোগ্যতা নেই। আমরা আমাদের ঐতিহ্য রক্ষায় বদ্ধপরিকর। তারা আমাদের হাজার বছরের ধারণ করা অনুভূতিতে আঘাত করেছে। আমরা রক্তাক্ত হয়েছি। আমাদের রক্তক্ষরণ নিরসনে ন্যায়বিচার প্রত্যাশা করতেই পারি। আশা করি, সরকার ও বিচার বিভাগ আমাদের সে প্রত্যাশা পূরণে সক্ষম হবে।

পরিশেষে, জাতির পক্ষ থেকে আমাদের আবেদন-দ্রুততম সময়ের মধ্যে রহস্য উদ্ঘাটন করে প্রকৃত দোষীদের বিচারের কাঠগড়ায় দাঁড় করানো হোক। একই সঙ্গে এমন শাস্তির ব্যবস্থা করা হোক, যাতে এ ধরনের আচরণ করার আগে দুর্বৃত্তদের অন্তত একবার ভাবতে হয়। আমরা সে রকম একটি শাস্তির প্রত্যাশায় রইলাম।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close