reporterঅনলাইন ডেস্ক
  ২৪ অক্টোবর, ২০২১

সম্প্রীতি বিনষ্টকারীদের কঠোর শাস্তি প্রত্যাশিত

প্রতিটি ঘটে যাওয়া ঘটনার পেছনে একটি কার্যকারণ আছে। কার্যকারণ ছাড়া কোনো কর্মই পৃথিবীতে সম্পাদন হয়নি এবং হবে না। এটাই সত্য। কেবল সত্যই নয়, চিরন্তনও বটে। এই সত্যকে খ-ন করার ক্ষমতা কারো নেই। সাময়িকভাবে প্রকৃত কার্যকারণকে খুঁজে পেতে বিলম্ব হতে পারে। অথবা কিছুকাল ধামাচাপা দিয়ে রাখা যেতে পারে। তবে নিউটনের তৃতীয় সূত্র যদি মিথ্যা না হয়, তাহলে এই সত্য বেরিয়ে আসতে বাধ্য। পাক-ভারত উপমহাদেশের দিকে তাকালেই তা খুঁজে পাওয়া যেতে পারে। ধর্মের সঙ্গে ধর্মের মতামতগত পার্থক্য থাকতে পারে। কিন্তু মানুষের প্রতি মানুষের আনুগত্য এবং ভালোবাসার প্রশ্নে সব ধর্মই একই চিন্তায় এগিয়েছে।

এখানে সংঘাতের কোনো রেখাচিত্রও পড়ার কোনো সুযোগ নেই। তবু ধর্মের নামে বিশ্বজুড়ে যেন এক মহাযুদ্ধের অশুভ সংকেত পাওয়া যাচ্ছে। কিন্তু কেন?

জবাবটা যেমনি সরল তেমনটাই গরল। প্রকৃত অর্থে ধর্মের সঙ্গে ধর্মের যুদ্ধ হওয়ার কোনো সুযোগ নেই। আমরা তথাকথিত যুদ্ধের কথা বলছি। যে যুদ্ধে জীবননাশের বিষয়াদি থাকে। ধ্বংসযজ্ঞের বহিঃপ্রকাশ থাকে। অস্ত্র হাতে এ যুদ্ধের কোনো সম্ভাবনাও নেই। কেননা প্রতিটি ধর্মই এক-একটি দর্শন চিন্তার ওপর প্রতিষ্ঠিত। আর দর্শনের সঙ্গে দর্শনের যুদ্ধ অস্ত্রের হতে পারে না। এখানে অস্ত্রের কোনো ভূমিকাই থাকে না। ভূমিকা থাকে চিন্তা ও দর্শনের। যুদ্ধটা হবে চিন্তার সঙ্গে চিন্তার, দর্শনের সঙ্গে দর্শনের। তাহলে বিরোধটা কোথায়?

বিরোধ তৈরির মহানায়ক আমরাই। আমাদের স্বার্থেই আমরা এ বিরোধের জন্ম দিয়েছি। এখানে আমরা বলতে সমাজের সংখ্যালঘিষ্ঠ মানুষের কথা বলা হয়েছে। সংখ্যালঘিষ্ঠ মানুষ সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষের ওপর কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠার লক্ষেই বারবার ধর্মকে ব্যবহার করেছে এবং এখনো করছে। ভারতভাগও হয়েছিল সেই একই তরিকায়। দুর্ভাগ্যজনক হলেও সত্য বারবারই খেসারত দিতে হয়েছে সাধারণ মানুষকে।

আর সেই সাধারণ মানুষের মাঝে ছিল সব ধর্মের মানুষ। স্বার্থান্বেষি মানুষ তাদের স্বার্থ হাসিলের জন্য মানুষের কাঁধের ওপর ধর্মকে রেখে মানুষ ও ধর্মকে ব্যবহার করেছে। ব্যবহৃত হয়েছে সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষের একাংশ। বলা হচ্ছে সাম্প্রদায়িক সহিংসতা। বিষয়টি ধর্মের সঙ্গে ধর্মের কোনো সহিংসতা নয়। সহিংসতা হচ্ছে ভোগের সঙ্গে ত্যাগের। এখানে ত্যাগের ভূমিকায় ধর্ম আর ভোগের ভূমিকায় সাম্প্রদায়িকতা।

সাম্প্রতিক ঘটে যাওয়া ঘটনা, কুমিল্লার পূজাম-পে কোরআন শরিফ রাখাসহ দেশের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতিকে যারা আঘাত করেছে তাদের কঠোর শাস্তির আওতায় আনা হবে বলে ঘোষণা দিয়েছেন স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায়মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম। একই সঙ্গে তিনি বলেছেন, ধর্মকে ব্যবহার করে যারা উগ্রবাদ সৃষ্টির পাঁয়তারা করছে, তাদেরও শক্ত হাতে মোকাবিলা করা হবে।

আমরাও মন্ত্রীর সঙ্গে একাত্মতা ঘোষণা করে বলতে চাই, এ দেশ লালনের-হাসনের আর বারআউলিয়ার। হাজার বছরের ইতিহাস বলছে আমরা জাতপাতে বিশ্বাসী নয়। মানবসেবাই আমাদের সংস্কৃতি। আমাদের কালচার। এখানে সব ধর্মের মানুষই এক ও অভিন্ন সম্প্রদায়ের। আর সেই সম্প্রদায়ের নাম মানব সম্প্রদায়।

আমরা মনে করি, প্রকৃত সত্য উদ্ঘাটনে সরকার তৎপর। এরই মধ্যে এক অপরাধীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। অচিরেই পেছনে থাকা কুশীলবদের নাম বেরিয়ে আসবে। দেশবাসী অপরাধীদের আদালতের কাঠগড়ায় দেখতে চায়। ন্যায়-বিচার প্রত্যাশা করে। তবে শাস্তির প্রশ্নে আমরা সর্বোচ্চের দাবিদার।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close