reporterঅনলাইন ডেস্ক
  ১৮ অক্টোবর, ২০২১

সিলেটের সাদা পাথরে কালো ভোগান্তি

দুর্বল ব্যবস্থাপনার জাঁতাকলে পিষ্ট হয়ে ধুঁকছে সমাজ। ভোগান্তিতে মানুষ। সিস্টেম লসে পড়ে হারিয়ে যাচ্ছে কোটি কোটি টাকা। ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে দেশের অর্থনীতি। তার পরও যেন কারো কোনো খেয়াল নেই। অথবা বলা যায়, যাদের খেয়াল রাখার কথা তারা ঘুমিয়ে আছেন। কুম্ভকর্ণের এই ঘুম কবে ভাঙবে, তাও কারো জানা নেই। তবে আমরা জানি, ব্যবস্থাপনার মাঝে যে মরিচা পড়েছে, তা সরানো গেলে দেশের উন্নয়নের গতি কয়েকগুণ বাড়তে পারে। দুর্ভোগ কমতে পারে মানুষের। কয়েক কোটি শ্রমঘণ্টার সাশ্রয় হতে পারে। অর্থনীতির উল্লম্ফন হতে পারে আশাতীত। নান্দনিক হতে পারে আমাদের জীবনযাপন। কিন্তু বিড়ালের গলায় ঘণ্টা পরাবে কে?

তেমন কারো দর্শন এখনো মেলেনি। আর সে কারণেই সমাজের প্রত্যেকটি মানুষ আজ দুর্বল ব্যবস্থাপনার শিকার। বাজার ব্যবস্থাপনা চোখে আঙুল দিয়ে তা আমাদের দেখিয়েছে। দুর্বল বাজার ব্যবস্থাপনার কারণে মানুষের নাভিশ্বাস উঠছে। পরিত্রাণের কোনো ব্যবস্থা নেই। তবে অভয়বাণীর নেই কোনো ঘাটতি। কিন্তু এই অভয়বাণী জীবনের ঘাটতি পূরণে কতটা সক্ষম, তা নতুন করে বলার প্রয়োজন নেই। যার যেখানে ব্যথা তার সেখানে হাত। ভুক্তভোগীরাই জানেন, দুর্বল বাজার ব্যবস্থাপনা তাদের কতটা বিপজ্জনক অবস্থার মাঝে ঠেলে দিয়েছে।

এ তো গেল বাজার ব্যবস্থাপনার কথা। এবার আসা যাক সড়ক-মহাসড়ক ব্যবস্থাপনার দিকে। বাস্তবতা বলছে, সেখানেও কোনো ভালো ব্যবস্থাপনা এখনো গড়ে উঠেনি। যেটুকু আছে, তাকে ভঙ্গুর ছাড়া অন্য কিছু বলার কোনো সুযোগ নেই। অর্থাৎ এখানেও ব্যবস্থাপনা দুর্বল। রাজধানী ঢাকার সড়কগুলোর দিকে তাকালেই তা সহজেই অনুমেয়। এই দুর্বল ব্যবস্থাপনার কারণে প্রতিদিন কত শ্রমঘণ্টার অপচয় হচ্ছে, তার কোনো হিসাব নেই। রাখার প্রয়োজনীয়তাও অনুভব করেননি কেউ। আইন না মানাই সড়ক ব্যবস্থাপনায় এক নতুন সংস্কৃতির জন্ম দিয়েছে। ফলে যানজটে দুর্ভোগ বেড়েছে শহরবাসীর। কেবল দুর্ভোগের মাঝেই সীমাবদ্ধ থাকেনি। দেশে সড়ক দুর্ঘটনায় প্রতিদিন গড়ে প্রাণ হারাচ্ছে এক ডজন মানুষ। এদিকে সরকারের চেষ্টার কমতি নেই। কিন্তু কোনো চেষ্টাই এখনো ভালো ফলাফল এনে দিতে পারেনি। পারেনি দুর্বল ব্যবস্থাপনা ও সড়ক পরিবহন সংশ্লিষ্টদের অসহযোগিতার কারণে। এদের কোনোভাবেই শৃঙ্খলার বৃত্তে আটকানো সম্ভব হচ্ছে না। কিন্তু কেন? এ প্রশ্ন তোলার আগে সড়ক ব্যবস্থাপনা নিয়ে নতুন করে ভাবার সময় এসেছে।

এই ভাবনার মাঝে সমাধান খুঁজতে গিয়ে সময়ক্ষেপণের কোনো সুযোগ নেই। কারণ এরই মধ্যে আমরা দেখেছি আমাদের প্রায় প্রতিটি খাতের ব্যবস্থাপনা কমবেশি দুর্বল। আর এই দুুর্বলতার কারণেই পর্যটন খাতের অবস্থাও তথৈবচ। যদিও এখানে সম্ভাবনার বিশাল সুযোগ রয়েছে। আছে বিশাল সমুদ্র এবং সি-বিচ। আছে নান্দনিক পাহাড়। আছে বিশাল বনভূমিসহ প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে ভরপুর একটি পাললিক সংস্কৃতি। অভাব শুধু একটিই। আর তা হলো ব্যবস্থাপনা। দেশের ভেতরে ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে অনেক পর্যটনকেন্দ্র। যার একটি সাদা পাথর। সিলেটের কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার ভোলাগঞ্জে এর অবস্থান। প্রচুর পর্যটকের সমাগম। নেই পর্যটকদের জন্য তেমন সুযোগ-সুবিধা। সাদা পাথরে বেড়াতে এসে কালো ভোগান্তি কাঁধে নিয়ে ফিরতে হয় পর্যটকদের। সামান্য একটি নৌকাঘাটের সুব্যবস্থাপনাও এখানে নেই। নেই কোনো বসার ছাউনি। রয়েছে নৌকার অভাব। একটা নৌকা পেতে ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষায় থাকতে হয়। এমন দুর্বল ব্যবস্থাপনা কীভাবে পর্যটনশিল্পকে সামনের দিকে এগিয়ে নেবে, তা আমরা জানি না। এ প্রশ্নের ভালো জবাব সংশ্লিষ্টরাই দিতে পারবেন। আমরা শুধু এটুকুই বলতে পারি, ৩০ লাখ শহীদের রক্তের বিনিময়ে গড়া এ দেশের সব ব্যবস্থাপনাকে দুর্বলতার জালে আটকে রাখার চেষ্টা যারা করবেন, তাদের কোনো ক্ষমা নেই। সময়ই তাদের মৃত্যুদ- ঘোষণা করবে।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close