reporterঅনলাইন ডেস্ক
  ১৯ সেপ্টেম্বর, ২০২১

মোবাইল আমদানিতে কড়াকড়িই কাম্য

এমনিতেই আমরা আমদানিনির্ভর দেশ। সুঁই থেকে এমন কোনো জিনিস নেই, যা আমদানি হয় না এই দেশে। মুক্তবাজার অর্থনীতি বলে কথা। তাই হয়তো আমদানির চাপটা একটু বেশি। কারণ শুধু মুক্তবাজার অর্থনীতিই নয়। অন্যতম প্রধান কারণ অন্যত্র। আমরা এখনো শিল্পোন্নত দেশের ধারে-কাছেও পৌঁছাতে পারিনি। আর আমদানিনির্ভরতাই এর অন্যতম কারণ। তবু চেষ্টা হচ্ছে, তবে সে চেষ্টা শিল্প উৎপাদনের ক্ষেত্রে চোখে পড়ার মতো নয়। আমরা যা আমদানি করছি তা দেশেই উৎপাদন করতে পারি কি না তা নিয়ে আমাদের তেমন একটা উৎসাহ আছে বলে মনে করার মতো উদাহরণ নেই। ঝুঁকি কম লাভ বেশি, এদিকেই দৃষ্টি সবার। অন্তত যারা বাণিজ্যের সঙ্গে যুক্ত- এটি তাদের চিন্তা। এ দেশে শিল্পে বিনিয়োগ করার মতো লোকের অভাব নেই। পুঁজি আছে। দুর্ভাগ্য দেশ ও জাতির। পুঁজি বিনিয়োগকারীর সংখ্যা তুলনামূলক বিচারে নেই বললেই চলে। ফলে শিল্প বিকাশ থমকে আছে। যা আমাদের ভবিষ্যৎকে একটি অশনিসংকেত ছাড়া আর কিছুই উপহার দিতে পারছে না। এটিই বাস্তবতা। এখান থেকে বেরিয়ে আসাটা খুবই জরুরি।

সরকারের সহযোগিতা নেই বললে ভুল বলা হবে। তবে তা সুষ্ঠু পরিকল্পনার ওপরে প্রতিষ্ঠিত নয়। সুষ্ঠু পরিকল্পনা থাকলে দেশ থেকে হাজার হাজার কোটি টাকা বিদেশে পাচার হওয়ার মহাসড়কটি নিশ্চয়ই এত দিনে বন্ধ হতে পারত। আর এই পাচার হওয়া টাকা যদি শিল্পে ব্যবহার করা যেত, তাহলে আজ আমরা একটি শিল্পোন্নত দেশের তালিকার নিচের দিকে হলেও থাকার যোগ্যতা অর্জন করতাম। কিন্তু তা হয়নি। কবে হবে তাও আমাদের জানা নেই। তবে স্বপ্ন এখনো মরে যায়নি। আমরা স্বপ্ন দেখি দেশ এক দিন শিল্পোন্নত দেশের কাতারে গিয়ে দাঁড়াতে সক্ষম হবে। আমাদের স্বপ্ন আর সরকারের আন্তরিক প্রচেষ্টা এক দিন আমাদের সেই অবস্থানে নিয়ে দাঁড় করাবে- এ বিশ্বাসের ওপর বেঁচে আছে বাংলাদেশের ১৭ কোটি মানুষ।

সরকার উপহারের নামে মোবাইল সেট আমদানির ওপর কড়াকড়ি আরোপ করতে যাচ্ছে। যদিও এটি একটি ক্ষুদ্র প্রচেষ্টা মাত্র। তবু বলতে হয়, কাজটি মন্দের ভালো। সরকারের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, বিদেশে থাকা আত্মীয় কিংবা বন্ধু দেশের কাউকে উপহার হিসেবে দুটি মোবাইল সেট পাঠালেও তা নিবন্ধন করেই গ্রহন করতে হবে সংশ্লিষ্ট গ্রহীতাকে।এ নিয়মের ব্যত্যয় ঘটিয়ে প্রতারণার আশ্রয় নিয়ে হ্যান্ডসেট ব্যবহারের চেষ্টা করলে সচল করার ১০ মিনিটের মধ্যে নিষ্ক্রিয় হবে উপহার হিসেবে পাওয়া মোবাইল সেটটি। শুল্ক ফাঁকি বন্ধ এবং রাজস্ব আয় বাড়াতে এ নিয়ন্ত্রণ আরোপের সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি)। এ ছাড়া ভ্রমণে গিয়ে কোনো ব্যক্তি সর্বোচ্চ আটটি মোবাইল সেট নিয়ে এলে শুল্ক ছাড় পাবেন দুটিতে। বাকি ছয়টির জন্য গুনতে হবে শুল্ক। একই ধরনের চেষ্টা তিনবারের বেশি করলে প্রতারণার অপরাধে আইন মোতাবেক শাস্তি পাবেন সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি।

বিটিআরসির সিদ্ধান্তকে স্বাগত। কাজটি দেশ ও জাতিকে খুব বড় মাপের কিছু একটা উপহার দিতে না পারলেও বড় মাপের একটি মেসেজ উপহার দিতে সক্ষম হয়েছে। আমরা মনে করি, কেবল উপহার সামগ্রীর ওপরেই নয়, আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্যে কর ফাঁকি দেওয়ার ক্ষেত্রের ক্যানভাসটি অনেক বড়। প্রতিটি কর্নারে সরকারের কঠিন নজরদারি দরকার এবং সরকার তা করবে- এটি জাতির অনেক দিনের পুঞ্জীভূত প্রত্যাশা।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close