reporterঅনলাইন ডেস্ক
  ১৮ সেপ্টেম্বর, ২০২১

গ্রামীণ জনপদের ৩৬ শতাংশ এখন সামাজিক নিরাপত্তায়

তথ্য-উপাত্তে যদিও গরমিল আছে। তবু বিশ্বব্যাংকের এক গবেষণা প্রতিবেদন বলছে, বাংলাদেশের গ্রামীণ জনপদের ২৬ শতাংশ মানুষ গরিব হলেও সেখানে ৩৬ শতাংশ মানুষ সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির সুবিধা পাচ্ছে। প্রতিবেদনে বলা হয়, দরিদ্র জনগোষ্ঠীর টেকসই উন্নয়নে সামাজিক সুরক্ষা কর্মসূচির সঠিক ব্যবহারে দেশে দারিদ্র্যের হার ৩৬ থেকে কমে ২৪ শতাংশে নেমে আসতে পারে। সামাজিক সুরক্ষাগুলো মূলত গ্রামীণ জনপদকেন্দ্রিক। শহরের চিত্র ভিন্নতর। এখানে পাঁচজনের মধ্যে একজন দারিদ্র্যসীমার মধ্যে রয়েছে। তাদের হিসাব মতে, শহরের অর্ধেক পরিবার দারিদ্র্যঝুঁকির মধ্যে রয়েছে। বিশ্বব্যাংকের গবেষণাপত্র বলছে, গ্রামে দারিদ্র্য হারের চেয়ে বেশিসংখ্যক মানুষ সরকারের সামাজিক সুরক্ষা কর্মসূচির আওতায় এসেছে। ফলে সামাজিক সুরক্ষার ক্ষেত্রে শহর ও গ্রামীণ জনপদের মধ্যে একটি বৈষম্যের আভাস পাওয়া যাচ্ছে, যেখানে সমন্বয় করাটা জরুরি হয়ে পড়েছে। একই সঙ্গে তারা সামাজিক সুরক্ষা কর্মসূচির প্রকৃত উপকারভোগীর স্বচ্ছ ডেটাবেইস তালিকা তৈরির পরামর্শও দিয়েছেন।

প্রতিবেদনে আরো বলা হয়, কয়েক দশক ধরে বাংলাদেশ সামাজিক সুরক্ষা কর্মসূচির আওতা বাড়িয়ে চলেছে। এখন এটি দেশের প্রতি ১০টি পরিবারের মধ্যে তিনটিতে পৌঁছাতে সক্ষম হয়েছে। একই সঙ্গে কোভিড-১৯ মহামারি আরো জোরদার, দক্ষ ও অভিযোজিত সামাজিক সুরক্ষাব্যবস্থার প্রয়োজনীয়তাকে জোরালো করেছে। যথাযথ লক্ষ্য ঠিক করে এই কর্মকা- সঠিকভাবে বাস্তবায়ন করলে দেশটি দারিদ্র্যের হার কমাতে সক্ষম হবে। এদিকে বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) পক্ষ থেকে বলা হয়, খানা আয় ও ব্যয় জরিপ ২০১৬ অনুযায়ী, সে সময় দারিদ্র্যের হার ছিল ২৪ দশমিক ৫ শতাংশ। ২০১৯ সালের শেষে অনুমিত হিসাবে তা নেমে আসে ২০ দশমিক ৫ শতাংশে। পরবর্তী সময়ে দারিদ্র্যের হার নিয়ে আর কোনো নতুন তথ্য প্রকাশ করেনি বিবিএস।

এ তো গেল এক পক্ষের ভাষ্য। বিপরীতেরও মতামত আছে। যেখানে বেসরকারি গবেষণা সংস্থা সাউথ এশিয়ান নেটওয়ার্ক অন ইকোনমিক মডেলিংয়ের (সানেম) পক্ষ থেকে বলা হয়, করোনাভাইরাস মহামারির অর্থনৈতিক প্রতিঘাতে বাংলাদেশের দারিদ্র্যের হার দ্বিগুণ বেড়ে ৪২ হয়েছে শতাংশ। সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি) বলেছে, করোনার কারণে আয় কমে যাওয়ায় দরিদ্র মানুষের সংখ্যা বেড়েছে। ফলে সার্বিকভাবে দারিদ্র্যের হার ৩৫ শতাংশে উন্নীত হয়েছে। তবে সরকারের পক্ষ থেকে বেসরকারি সংস্থাগুলোর মতামতকে প্রত্যাখ্যান করা হয়। দুই পক্ষের মতামত বিবেচনায় নিলে কোনো সুরাহায় আসা সম্ভব নয়। প্রশ্ন থেকেই যায়। প্রশ্ন উঠতেই পারে, কে সত্য বলেছেন? সত্যতা যাচাইয়ের প্রশ্নে বলতে হয়, কেউই মিথ্যা বলেননি। তবে বাস্তবতা বলছে, দারিদ্র্যের হার যেখানেই থাকুক, এটা চিরস্থায়ী নয়। করোনা অতিমারিতে বিশ্বের সর্বত্রই একই চিত্র। বেকারের সংখ্যা বেড়েছে। অর্থনৈতিক মন্দায় ভাসছে বিশ্ব। সর্বত্রই দারিদ্র্য বেড়েছে। আমরাও এর বাইরে নই। কিন্তু করোনাকে আমরা যেভাবে মোকাবিলা করে আমাদের অর্থনীতিকে ভাঙনের হাত থেকে রক্ষা করেছি- বিশ্বদরবারে তা প্রশংসিত হয়েছে। আমরা এই প্রশংসাকে ধরে রাখতে চাই। প্রশংসা ধরে রাখতে পারলেই বলতে পারব, তারা কেউই মিথ্যা বলেননি।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close