মাছুম বিল্লাহ
পর্যালোচনা
দক্ষিণ এশিয়ায় উদ্বাস্তু শিশু ও তদীয় শিক্ষা
বিশ্বের ১৩৪ দেশের ৭০.৮ মিলিয়ন মানুষ জোরপূর্বক তাদের নিজ দেশ থেকে বিতাড়িত হয়েছে এবং ৪১.৩ মিলিয়ন মানুষ গৃহযুদ্ধ কিংবা আন্তরাষ্ট্র যুদ্ধের কারণে স্থানান্তরিত হয়েছে। প্রায় ২৫.৯ মিলিয়ন মানুষ উদ্বাস্তু এবং ৩.৯ মিলিয়নের কোনো দেশ নেই। পৃথিবীতে যত শরণার্থী রয়েছে তার অর্ধেকই শিশু। বিদ্যালয় উপযোগী শিশুদের অর্ধেকেরও বেশি শিশু কোনো শিক্ষা গ্রহণ করতে পারছে না; তার অর্থ হচ্ছে তাদের অমিত সম্ভাবনা থাকা সত্ত্বেও চার মিলিয়ন অর্থাৎ চল্লিশ লাখ শিশু বিদ্যালয়েই যাচ্ছে না। বিদ্যালয়ের বাইরে উদ্বাস্তু শিশুদের সংখ্যা ২০২০ সালেই বেড়েছে ৫ লাখ। এই ধারা চলতে থাকলে আরো হাজার হাজার শিশু এই পরিসংখ্যানে যুক্ত হবে, যদি এর পেছনে উপযুক্ত বিনিয়োগ করা না হয়। জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদ কর্তৃক গৃহীত ২০১৬ সালের নিউইয়র্ক ঘোষণা অনুযায়ী উদ্বাস্তু এবং অভিবাসী শিশুদের শিক্ষার ব্যবস্থা করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল আশ্রয়দানকারী দেশগুলো। কিন্তু বিশ^বাসী তার বাস্তবায়ন প্রত্যক্ষ করছে না। উদ্বাস্তু শিশুদের জন্য উপযুক্ত শিক্ষা হচ্ছে একটি নিয়ামক; যা তাদের জীবনমান এবং অবস্থা বদলে দিতে পারে।
দেশে দেশে বিশেষ করে দক্ষিণ এশিয়ার শরণার্থী আশ্রয়দানকারী চারটি দেশ বাংলাদেশ, ভারত, পাকিস্তান ও নেপালে উদ্বাস্তু শিশুদের শিক্ষার কী অবস্থা; সেটি নিয়ে আলোকপাত করা হয়েছে এই বইটিতে। বাস্তুহারা শিশুদের শিক্ষার কী নিয়ম এবং প্রচলিত ব্যবস্থা কী, রাষ্ট্র কর্তৃক এসব শিশুর কীভাবে শিক্ষাদান করা হচ্ছে; সেগুলো নিয়ে গবেষণা করা হয়েছে এবং সমস্যার কারণগুলো বর্ণনা করা হয়েছে এবং সে অনুযায়ী বেশ কিছু সুপারিশ তুলে ধরা হয়েছে। বৈশ্বিক প্রেক্ষাপটে বিষয়টি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এবং প্রাসঙ্গিক। তবে বাংলাদেশের ক্ষেত্রে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ কারণ বাংলাদেশে প্রায় ১১ লাখ রোহিঙ্গার বসবাস, তাদের মধ্যে একটি উল্লেখযোগ্যসংখ্যক শিশু রয়েছে। তাদের শিক্ষার বিষয়টি কী অবস্থায় আছে, কেন এ অবস্থায়, বাংলাদেশ সরকার তাদের শিক্ষার জন্য কী কী পদক্ষেপ নিয়েছে ইত্যাদি বিষয় বিশদভাবে আলোচিত হয়েছে। বিভিন্ন ধরনের কেস স্টাডির মাধ্যমে শরণার্থীদের আশ্রয়দানকারী দেশগুলো যেমন বাংলাদেশ, ভারত, পকিস্তান ও নেপাল কী ব্যবস্থা গ্রহণ করছে, তাদের সীমাবদ্ধতা নিয়েও আলোচনা করা হয়েছে। বিশ্বে কমপক্ষে ১০০ মিলিয়ন মানুষ যুদ্ধ কিংবা সংঘাতের কারণে বাস্তুহারা। তারা হয় নিজ দেশে নিজের বাসস্থান থেকে দূরে কিংবা আশ্রয়ের সন্ধানে দেশের বাইরে অবস্থান করছে। ২০২০ সালে ৭৯.৫ মিলিয়ন মানুষকে জোর করে স্থানান্তরিত করা হয়েছে যুদ্ধ, সংঘাত, জাতিগত কিংবা রাজনৈতিক দ্বন্দ্বের কারণে। এসব মানুষগুলো নিজ বাসভূম ছেড়ে অন্যত্র আশ্রয় নিয়েছে। এটি মানবাধিকার লঙ্ঘনের চরম দৃষ্টান্ত।
শরণার্থী জনসংখ্যার মধ্যে ৪০ শতাংশ শিশু যাদের বয়স ১৮ বছরের নিচে। এই শিশুদের ৭৭ শতাংশ প্রাথমিক বিদ্যালয়ে যাচ্ছে, কিন্তু তাদের মাত্র ৩১ শতাংশ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে পড়াশোনার সুযোগ পাচ্ছে। আর উচ্চশিক্ষায় এ সংখ্যা একেবারে নগণ্য, মাত্র ৩ শতাংশ। শরণার্থী শিশুদের শিক্ষার এই ভয়ংকর অবস্থা সিদ্ধান্ত গ্রহণকারীদের কিছুটা হলেও ভাবিয়ে তুলতে পারে। দক্ষিণ এশিয়ার যে চারটি দেশ বাংলাদেশ, ভারত, পাকিস্তান ও নেপাল শরণার্থীদের আশ্রয় দিয়েছে, দেশগুলো তাদের ওপর অবাধে চলাচল তথা তাদের শিক্ষা ও উপার্জনের ওপরও নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে থাকে। তবে শরণার্থী বাচ্চাদের জন্য তারা শিক্ষার ব্যবস্থা করেছে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক বেসরকারি সংস্থা এবং জাতিসংঘের কয়েকটি সংস্থার সাহায্যে। দেশগুলো মানবিক দৃষ্টিকোণ থেকে শরণার্থী শিশুদের প্রাথমিক শিক্ষার ব্যবস্থা করেছে, কিন্তু শিক্ষা যে তাদের মৌলিক অধিকার বিষয়টি সেভাবে আসেনি বা হচ্ছে না। এজন্য শুধু এ দেশগুলো দায়ী নয়, গোট বিশ্বব্যবস্থাই দায়ী। একটি গবেষণা প্রবন্ধে দেখতে পাই যে, ভারত সরকারের উদ্বাস্তু এবং উদ্বাস্তু শিশুদের লেখাপড়া নিয়ে কোনো ধরনের পরিকল্পনা বা পলিসি নেই। তবে মানবিক দৃষ্টিকোণ থেকে তারা বেসরকারি সংস্থাগুলোর সহায়তায় এবং জাতিসংঘের সংস্থাগুলোর সহায়তায় শিশুদের জন্য শিক্ষার কিছুটা আয়োজন করে থাকে। অন্য একটিতে দেখা যায় যে, কিছু অন্তর্নিহিত কারণের জন্য আফগানিস্তানের উদ্বাস্তু শিশু যারা পাকিস্তান ও ভারতে আশ্রয় নিয়েছে, তাদের শিক্ষাগ্রহণ বাধাগ্রস্ত হচেছ। গবেষকরা দেখিয়েছেন, এখানে শিশুদের শিক্ষাদান করার ক্ষেত্রে বেশ কিছু চ্যালেঞ্জ রয়েছে। এখানকার সাধারণ কিছু সমস্যা হচ্ছে অর্থনৈতিক টানাপড়েন, শরীরবৃত্তীয় সমস্যা, ইউএনএইচসিআর-এর প্রতি এবং বেসরকারি সংস্থাগুলোর প্রতি নির্ভরশীলতা। গবেষকরা তাই বলছেন যে, উদ্বাস্তু সমস্যার স্থায়ী সমাধান হচ্ছে এসব শিশুর আফগানিস্তানে ফিরিয়ে নিয়ে প্রত্যাবাসন করা।
১৯৭৮ সাল থেকে ১.২ মিলিয়ন রোহিঙ্গা মিয়ানমার থেকে বাংলাদেশে পালিয়ে আসে। ২০১৭ সালের যে রোহিঙ্গা জনস্রোত বাংলাদেশে প্রবেশ করে, তাতে প্রায় ৭৪২০০০ রোহিঙ্গা এ দেশে প্রবেশ করে। বর্তমানে বাংলাদেশে প্রায় ৯১২০০০ রোহিঙ্গা কক্সবাজারে দুটো নিবন্ধিত শিবিরে বসবাস করছে। শিবির ছাড়াও কিন্তু তাদের বসবাস রয়েছে অত্র এলাকায়। এসব রোহিঙ্গা উদ্বাস্তুর মধ্যে শিশুদের সংখ্যা হচ্ছে ৬৮৩০০০। কিছু কিছু বেসরকারি সংস্থা এই শিশুদের ধর্মীয় শিক্ষাদান করছে। ধর্মীয় নিয়মকানুন ও বিধিনিষেধ সম্পর্কে আর ভবিষ্যতে যাতে তারা ধর্মীয় শিক্ষাবিষয়ক কোথাও কাজ পায়, সেই উদ্দেশ্যে তারা কাজটি করছেন। তবে ৪-১৪ বছর বয়সি রোহিঙ্গা শিশুরা শিবিরে জরুরি কিছু শিক্ষা গ্রহণ করার সুযোগ পাচ্ছে। তবে ৯৭ শতাংশ তরুণ ও বয়স্করা আনুষ্ঠানিক শিক্ষার বাইরে রয়ে গেছে। বাংলাদেশের কক্সবাজারে আশ্রয় গ্রহণকারী রোহিঙ্গাদের শিশুদের শিক্ষার জন্য ইউনিসেফ ২০২০ সালে শিক্ষার এক নতুন দ্বার উন্মোচন করে। বাংলাদেশ সরকারের যুগান্তকারী সিদ্ধান্ত অনুযায়ী সংস্থাটি মিয়ানমারের কারিকুলাম ব্যবহার করতে সহায়তা করার কথা। বাংলাদেশ সরকার ১৯৯৭ সালে থেকে রোহিঙ্গা শিশুদের জন্য প্রাথমিক ও কিন্ডারগার্টেনে প্রাথমিক শিক্ষার ব্যবস্থা করেছে দুটি নিবন্ধনকৃত ক্যাম্পে। ২০০৭ সাল থেকে সীমিত আকারে মাধ্যমিক শিক্ষাও শুরু হয় তাদের জন্য এবং রোহিঙ্গা শিশুদের সপ্তম শ্রেণিতে ভর্তি করা হয়। বর্তমানে রোহিঙ্গা শিশুদের জন্য ২১টি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও দুটি মাধ্যমিক বিদ্যালয় স্থাপন করা হয়েছে দুটি ক্যাম্পে। তাদের মধ্যে ১১টি নয়াপাড়া ও ১০টি কুতুপালং-এ।
বাংলাদেশ সরকার জাতীয় ও আন্তর্জাতিক বেসরকারি সংস্থাগুলোকে জরুরি শিক্ষাদানে অনুমোদন দিয়েছে ক্যাম্পের ভেতর থাকা এবং অস্থায়ী বাসস্থানে থাকা রোহিঙ্গা ৫ থেকে ১৪ বছর বয়সি শিশুদের। এর প্রাথমিক উদ্দেশ্য হচ্ছে বেসিক অক্ষর ও সংখ্যার সঙ্গে পরিচিত হওয়া এবং সঙ্গে সঙ্গে মনো-সামাজিক এবং বিনোদনমূলক কিছু খেলাধুলায় অংশগ্রহণ করার সুযোগ তৈরি করা। এই জরুরি শিক্ষা তিন ধরনের ৫-৬ বছর বয়সি বাচ্চাদের জন্য প্রাকশিক্ষা, ৭-১০ বছর বয়সি বাচ্চাদের জন্য বেসিক শিক্ষা এবং ১১-১৪ বছর বয়সি বাচ্চাদের জন্য জীবন দক্ষতামূলক শিক্ষা। মাদরাসা শিক্ষা পরিচালনার জন্য সরকার কোনো ধরনের সহায়তা করে থাকে না, এটি অবহেলিত। তবে জরুরি শিক্ষাকেন্দ্রে গেলে বাচ্চারা বিস্কুট, চাল, মাংস, ব্যাগ, পেনসিল ইত্যাদি পেয়ে থাকে। এই জরুরি কেন্দ্রগুলো প্রতিষ্ঠার উদ্দেশ্য হচ্ছে বাচ্চাদের মানসিক আঘাতজনিত আচরণ কমানো। তারা এই কেন্দ্রগুলোয় পড়ার জন্য যায় না, বরং আনন্দের জন্য যায়, মজা করার জন্য যায়। আর এই মজা করার ফলে তাদের মানসিক কষ্ট তারা কিছুটা ভুলে থাকতে পারে, যা মাদরাসায় হচ্ছে না। তাই বলা হচ্ছে যে, মাদরাসার পরিবেশ শিশুবান্ধব নয়। কেন্দ্রগুলোয় তারা খেলতে পারে, নাচতে পারে ও গাইতে পারে; যা তারা মাদরাসায় করতে পারে না। তাই দেখা যাচ্ছে, যারা মাদরাসায় পড়ছে এই শিবিরগুলোতে তারা এখন মানসিক কষ্ট নিয়ে আছে এবং তার প্রকাশ ঘটছে বিভিন্নভাবে। তাদের মধ্যে কেউ কেউ হঠাৎ করে তাদের সহপাঠি ও বন্ধুদের সঙ্গে হিংস্র হয়ে উঠছে। এটি একটি চমৎকার পর্যবেক্ষণ, যা গবেষণায় উঠে এসেছে।
রোহিঙ্গা নিধনের একটি সংক্ষিপ্ত ইতিহাস সম্পর্কেও ধারণা একটি গবেষণাগ্রন্থে। অনেকেরই জানার কৌতূহল যে, রোহিঙ্গাদের ওপর এই অমানবিকতার শুরু কোথা থেকে। এটি মূলত শুরু হয়েছে দ্বিতীয় বিশ^যুদ্ধের সময়। ওই সময় রোহিঙ্গারা ব্রিটিশদের পক্ষ নিয়েছিল এবং বৌদ্ধরা নিয়েছিল অক্ষশক্তি জাপানের পক্ষ। জাপান ২৩ মার্চ ১৯৪২ আকিয়াবের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নেয়। তখন বহু ব্রিটিশ, কারেন এবং অন্যরা জাপানি বিমানবাহিনীর আক্রমণে হতাহত হয়। ব্রিটিশ সৈন্যরা জাপানিদের মিয়ানমারে প্রবেশ দেখে পালিয়ে যায়। আর তারই ফলে স্থানীয় বৌদ্ধরা এবং বার্মিজ ইনডিপেনডেন্ট আর্মি’ রোহিঙ্গাদের ওপর বর্ণবাদী হামলা চালায় এবং প্রায় এক লাখ রোহিঙ্গাকে হত্যা করে। এভাবে রোহিঙ্গা শরণার্থী, তাদের বাংলাদেশে প্রবেশের কারণ, তাদের শিক্ষা ইত্যাদি পুরো বিষয় উঠে এসেছে বইটিতে স্থান পাওয়া গবেষণা প্রবন্ধগুলোয়। নবম গবেষণাপত্রটিতে পূর্ববর্তী আটটি গবেষণার সারাংশ তুলে ধরা হয়েছে। কেস স্টাডিজের যুক্তির ওপর ভিত্তি করে লেখকরা দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোয় উদ্বাস্তু শিশুদের জন্য শিক্ষার চ্যালেঞ্জ ও বাধাগুলোকে তুলে ধরেছেন এবং শিক্ষার বর্তমান অবস্থার উন্নয়নের জন্য বেশ কিছু সুপারিশ করেছেন। এ ছাড়া সংশ্লিষ্ট দেশগুলোর সরকার ও ওইসব দেশে কর্মরত বেসরকারি সংস্থাগুলোর মধ্যে সহযোগিতার গুরুত্ব তুলে ধরা হয়েছে।
রোহিঙ্গা ছাড়াও বাংলাদেশের আরো এক ধরনের উদ্বাস্তু কিংবা শরণার্থী আছে, যাদের আমরা বিহারী বলে থাকি। তারাও নানা বঞ্চনার শিকার। তাদের মধ্যে রয়েছে শিক্ষার চরম দুরবস্থা। বর্তমানে বাংলাদেশের বিভিন্ন স্থানে ১৩ জেলার ১১৬টি ক্যাম্পে/অস্থায়ী শিবিরে চার লাখ বিহারী বসবাস করছে। এগুলোর মধ্যে ঢাকার ৪৫টি বিহারী ক্যাম্পেই এক লাখ বিহারী বাস করছে, যেগুলোর মধ্যে জেনেভা ক্যাম্প সবচেয়ে বড়। এই শিবিরগুলোর মধ্যে নারী ও শিশুর অবস্থা সবচেয়ে দুঃখজনক ও করুণ। এদের মধ্যে ৯৫ শতাংশ নিরক্ষর এবং সামাজিকভাবে পিছিয়ে পড়া। যদিও ৯২ শতাংশ সাধারণ প্রাথমিক বিদ্যালয়ে যাওয়ার সুযোগ পায়, সেই সংখ্যা বিহারী ক্যাম্পে মাত্র ৬১ শতাংশ। মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে যায় আন্তর্জাতিকভাবে ৮৪ শতাংশ অ-উদ্বাস্তু শিশু, কিন্তু উদ্বাস্তু শিশুদের মধ্যে এই সংখ্যা ২৩ শতাংশ। কত ভয়াবহ পরিস্থিতি মাধ্যমিক শিক্ষার! এ ধরনের একটি গবেষণা প্রবন্ধও এই সিরিজে পড়ার সুযোগ হয়েছে।
উদ্বাস্তু শিশুদের শিক্ষার ওপর বেশ জোর দেওয়া হয়েছে প্রতিটি গবেষণাগ্রন্থে। নবরগ্রন্থে বিষয়টি পুনর্ব্যক্ত করা হয়েছে, যাতে উদ্বাস্তু শিশুরা সম্মান নিয়ে বেঁচে থাকতে পারে এবং সম্ভব হলে আশ্রয়দানকারী দেশগুলোর সঙ্গে মিলিয়ে দেওয়া যেতে পারে। কিন্তু আসল সমাধান হচ্ছে এসব শরণার্থী এবং শরণার্থী শিশুদের নিজ নিজ দেশে প্রত্যাবর্তন করানো এবং পুনর্বাসিত করা। এটিই আসল সমাধান। শিক্ষা মানুষের মৌলিক অধিকার। এই অধিকার থেকে কোনোভাবেই তাদের বঞ্চিত করা যাবে না। পুরো বিষয়টির সঙ্গে মানবিকতা, মূল্যবোধ এবং বিশ^রাজনীতি জড়িত। শিশুরাই এ পৃথিবীর ভবিষ্যৎ। তাদের সম্মুখে চলার পথ সুগম করে দিতে হবে বৈশ্বিক বিষয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণকারী সংস্থা ও দেশগুলোকে। সেই তাগিদই দেওয়া হয়েছে প্রতিটি গবেষণাগ্রন্থে আর আমরা সাধারণ জনগণও সেটিই আশা করছি।
লেখক : প্রেসিডেন্ট, ইংলিশ টিচার্স অ্যাসোসিয়েশন
অব বাংলাদেশ (ইট্যাব)
"