reporterঅনলাইন ডেস্ক
  ০৯ মে, ২০২১

হাজার মাসের চেয়ে উত্তম তুমিই- ‘লাইলাতুল কদর’

মানবজাতির প্রতি মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামিনের যত নিয়ামত, রহমত ও বরকত রয়েছে, তার মধ্যে অন্যতম শ্রেষ্ঠ হলো লাইলাতুল কদর বা শবেকদর। সহস্র মাসের ইবাদত-বন্দেগিতে যে পুণ্য অর্জিত হয়, তার চেয়েও বেশি পুণ্য অর্জিত হয় এই বরকতময় রাতের ইবাদত-বন্দেগিতে। স্বয়ং আল্লাহপাক আল-কোরআনে এ রাতের মর্যাদা ও তাৎপর্য নিয়ে এরশাদ করেছেন নিশ্চয়ই আমি এই কোরআন নাজিল করেছি লাইলাতুল কদরে। আপনি কি জানেন (হে মুহাম্মদ (সা.)! লাইলাতুল কদর কী? লাইলাতুল কদর হাজার মাসের চেয়ে উত্তম। এ রাতে ফেরেশতারা ও রুহ স্বীয় পালনকর্তার নির্দেশে অবতীর্ণ হন। পরম শান্তি বিরাজ করতে থাকে সূর্যোদয় পর্যন্ত (সুরা কদর)। হজরত আনাস (রা.) থেকে বর্ণিত রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, কদরের এই রাত কেবল আমার উম্মতরাই পেয়েছে। মানুষের প্রতি আল্লাহপাকের যত নিয়ামত ও রহমত রয়েছে, তার মধ্যে অন্যতম শ্রেষ্ঠ হলো এমন একটি বরকতময় রজনিকে তার বান্দাদের জন্য নসিব করা। মহান আল্লাহতায়ালা এই পবিত্র রজনিতেই সবশেষ ও সর্বশ্রেষ্ঠ ঐশী গ্রন্থ কোরআনুল কারিম নাজিল করেন। এ কারণেই এই রাত এত বেশি মহিমান্বিত ও মর্যাদাপূর্ণ। পবিত্র কোরআন বিশ্ব মানবের ইহকাল ও পরকালের সামগ্রিক কল্যাণের পথপ্রদর্শক এক সর্বজনীন, শাশ্বত ও পূর্ণাঙ্গ জীবনবিধান। পবিত্র কোরআনে লাইলাতুল কদরকে রমজানুল মোবারকের একটি রাত হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। হজরত আয়েশা (রা.) বলেছেন, নবী করিম (সা.) এরশাদ করেছেন, তোমরা রমজানের শেষ দশ দিনে লাইলাতুল কদর অনুসন্ধান করো (বুখারি)। প্রিয় নবী (সা.) বলেছেন, লাইলাতুল কদর রমজানের শেষ দশ দিনের বেজোড় রাতগুলোর একটি। অর্থাৎ ২১, ২৩, ২৫, ২৭ বা ২৯তম রাত। এজন্য নবী করিম (সা.) রমজানের শেষ দশ দিন এতেকাফ করতেন। তবে ইসলামি চিন্তাবিদ, গবেষক ও বিশেষজ্ঞদের অনেকেই রমজান মাসের ২৭তম রাত অর্থাৎ ২৬ রমজানের রাতকে পুণ্যময় মহিমান্বিত রজনি হতে পারে বলে উল্লেখ করেছেন।

কোরআনুল কারিম নাজিল হওয়া প্রসঙ্গে আল্লাহপাক বলেছেন, এটি একটি কিতাব, যা আমি আপনার কাছে বরকত হিসেবে প্রেরণ করেছি; যাতে মানুষ এর আয়াতগুলো নিয়ে চিন্তা করে এবং জ্ঞানীরা তা অনুধাবন করে।

প্রিয়নবী (সা.) বলেছেন, তোমাদের মধ্যে ওই ব্যক্তিই উৎকৃষ্ট যে নিজে পবিত্র কোরআন থেকে শিক্ষা লাভ করেছে এবং অন্যকেও শিক্ষা দিয়েছে। কোরআন মজিদের শিক্ষা মানুষকে প্রকৃত ইমানদার করে তোলে; চরিত্রকে করে উন্নত। মানুষের ধর্মীয় অনুভূতির সঙ্গে মানবিক অনুভূতির সমন্বয় ঘটিয়ে তাকে সঠিক পথপ্রদর্শন করে। এজন্যই পবিত্র কোরআন পড়ার সঙ্গে এর মর্মবাণী অনুধাবনেরও তাগিদ দেওয়া হয়েছে। কোরআনের মর্মবাণী অনুধাবন করলে মানুষ লোভ-লালসা, হিংসা-দ্বেষ, সন্ত্রাস, পাশবিকতা, ঘৃণ্য আচরণ, পরশ্রীকাতরতা থেকে নিজেদের মুক্ত রাখতে পারবে। মানুষ হয়ে উঠবে গরিব-দুঃখীদের প্রতি দরদি ও সহানুভূতিশীল। আজকের রাতে ব্যক্তি-সমাজ-রাষ্ট্রের কল্যাণে এবং বিশেষ করে এ সময় পৃথিবীতে মহামারি হিসেবে আবির্ভূত হওয়া করোনাভাইরাসের কবল থেকে মুক্তিলাভের জন্য ইবাদত-বন্দেগি করে কাটাবে মানুষ। মহান আল্লাহ যেন এ প্রার্থনা কবুল করে নেন।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close