reporterঅনলাইন ডেস্ক
  ০৯ মার্চ, ২০২১

বাজার নিয়ন্ত্রণে এখনই পদক্ষেপ নিতে হবে

ক্রমান্বয়ে অস্থির হয়ে উঠছে নিত্যপণ্যের বাজার; যা সাধারণ মানুষের নাগালের বাইরে চলে যাচ্ছে। এখনই তা নিয়ন্ত্রণ করতে না পারলে অবস্থা আরো নাজুক হয়ে উঠবে। অসাধু ব্যবসায়ীদের কারসাজিতে রমজানের আগেই নিত্যপণ্যের দাম কয়েক দফা বেড়েছে। তা যে এখানেই থেমে গেছে, তা কিন্তু বলা যাবে না। কারণ প্রতিশ্রুতি ভঙ্গকারী এসব অসাধু ব্যবসায়ী নানা অজুহাতেই নিত্যপণ্যের দাম বাড়াতে থাকে। অতিরিক্ত মুনাফা ছাড়া তাদের বিবেক বিবেচনা অন্য কিছুয়ে সায় দেয় না। আগামী মাসের মাঝামাঝি শুরু হচ্ছে পবিত্র মাহে রমজান। ওই সময়ে ভোজ্য তেল, পেঁয়াজ, চিনি, ডালসহ অন্য আরো কিছু পণ্যের বাড়তি চাহিদা তৈরি হয়। চাহিদার সঙ্গে দাম যাতে না বাড়ে, সেজন্য সরকারের সংশ্লিষ্ট দায়িত্বশীল সংস্থাগুলো দৃশ্যত কিছু বিশেষ ব্যবস্থাও নিয়ে থাকে। তবে এসব ব্যবস্থা বাজার নিয়ন্ত্রণে তেমন ইতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে না। করোনা-দুর্যোগে অনেকের আয়-রোজগার তলানিতে ঠেকেছে। এ অবস্থায়ও যদি মানবিকতার প্রকাশ না ঘটে, তাহলে এরচেয়ে দুঃখজনক কিইবা হতে পারে?

এক মাস ধরেই চাল ও ভোজ্য তেলের দাম বেড়েই চলেছে। সম্প্রতি এর সঙ্গে যুক্ত হয়েছে চিনি, ডাল, পেঁয়াজ, আটা-ময়দা, গুঁড়া দুধ। রমজানে নিত্যপণ্যের দাম বাড়লে ব্যবসায়ীরা সমালোচনার মুখে পড়েন। তাই এর আগেই দ্রব্যের দাম বাড়িয়ে নিজেদের ফায়দা তুলে নিচ্ছেন। বাজার এখনো শীতের শাকসবজিতে ভরপুর। তার পরও কাঁচাবাজারে শাকসবজি, মাছ-মাংসসহ নিত্যপণ্যের দাম ক্রমান্বয়ে বৃদ্ধি পাচ্ছে। এ মূল্যবৃদ্ধিকে অভিজ্ঞ মহল আসন্ন রমজানের বাজারের পূর্বাভাস বলে মনে করেন। সরকারি বাজার নিয়ন্ত্রণ ও তদারকি সংস্থা টিসিবির তথ্যমতে, এক মাসের ব্যবধানে খুচরা বাজারে অন্তত ১৬ ধরনের নিত্যপণ্যের দাম বেড়েছে। উদ্বেগের বিষয় হলো, রমজানের আগে ধাপে ধাপে বিভিন্ন পণ্যসামগ্রীর মূল্য যে পরিমাণ বাড়ানো হয়, পরে তা আর কমানো হয় না। কাজেই বাজারের নিয়ন্ত্রণ যাতে দুষ্টচক্রের হাতে চলে না যায়, সেজন্য এখনই সরকারি পদক্ষেপ জরুরি। মনে রাখতে হবে, বাজারব্যবস্থার স্বাভাবিক গতি বাধাগ্রস্ত করা হলে একদিকে ভোক্তাস্বার্থের হানি ঘটে, অন্যদিকে দেশের সামগ্রিক অর্থনৈতিক কর্মকান্ডের ওপর পড়ে এর বিরূপ প্রভাব।

বলা সংগত, বিগত কয়েক বছরে সরকারের আন্তরিকতা ও নানামুখী পদক্ষেপ সত্ত্বেও পণ্যের অযৌক্তিক মূল্যবৃদ্ধি কেন রোধ করা যায়নি, তা খতিয়ে দেখা উচিত। এ অবস্থায় টিসিবিকে কার্যকর করাসহ সরকারের উচিত নানামুখী পদক্ষেপ গ্রহণ করা, যাতে ভোক্তারা ক্ষতিগ্রস্ত না হয়। দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির কারণ হিসেবে ব্যবসায়ীদের পক্ষ থেকে অনেক সময় বিশ্ববাজারে মূল্যবৃদ্ধির দোহাই দেওয়া হয়। তবে বাস্তবতা হলো, দেশে বছরজুড়ে পণ্যমূল্যে আন্তর্জাতিক বাজারমূল্যের বিপরীত চিত্রই পরিলক্ষিত হয়। ব্যবসায়ীরা সাধারণ মানুষের দুর্দশা লাঘবে আন্তরিক হলে সারা বছর তো বটেই, রোজা-ঈদসহ বিভিন্ন উৎসবেও বাজার স্থিতিশীল থাকবে বলে আমাদের বিশ্বাস। এ ছাড়া নিত্যপ্রয়োজনীয়সহ সব ধরনের পণ্যের দাম স্থিতিশীল রাখতে সরকারের পাশাপাশি দেশের ব্যবসায়ীরাও আন্তরিক হবেন এটাই আমাদের প্রত্যাশা।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close