reporterঅনলাইন ডেস্ক
  ০২ মার্চ, ২০২১

কৃষি খাতের অগ্রযাত্রা অব্যাহত থাকুক

বাংলাদেশের অর্থনীতির অন্যতম চালিকাশক্তি কৃষি। দেশের মোট উৎপাদনের ১৪.২৩ শতাংশ আসে কৃষি খাত থেকে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সময়োপযোগী পদক্ষেপ এবং কৃষিমন্ত্রী ড. আবদুর রাজ্জাকের সঠিক দিকনির্দেশনায় খোরপোশের কৃষি আজ বাণিজ্যিক কৃষিতে রূপান্তরিত হয়েছে। ফলে এ খাতে দেশে কর্মসংস্থান বেড়েছে। খাদ্যশস্য উৎপাদনে বিশ্বে বাংলাদেশের স্থান দশম। কৃষিতে এগিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ। জাতিসংঘের কৃষি ও খাদ্য সংস্থার তথ্যানুযায়ী, ইলিশ উৎপাদনে বাংলাদেশ বিশ্বে প্রথম। এ ছাড়া কাঁঠাল উৎপাদনে দ্বিতীয়, সবজি উৎপাদনে তৃতীয়, চাল, মাছ ও ছাগল উৎপাদনে চতুর্থ, আলু উৎপাদনে ষষ্ঠ, আম উৎপাদনে সপ্তম এবং পেয়ারা উৎপাদনে অষ্টম স্থানে আছে দেশ। বর্তমানে ফসলের নিবিড়তা ১৯৪ শতাংশ। একসঙ্গে একই জমিতে সর্বোচ্চ চার রকমের ফসল ফলানো হচ্ছে, যার ফলে কৃষিজমির সর্বোচ্চ ব্যবহার নিশ্চিত হচ্ছে।

দেশে জনসংখ্যা ক্রমান্বয়ে বাড়লেও সে তুলনায় বাড়েনি কৃষিজমি বরং প্রতি বছর এক শতাংশ হারে কমেছে। এর পরও খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ বাংলাদেশ। একই সঙ্গে বেড়েছে পুষ্টির নিরাপত্তাও। বাংলাদেশের এসব সাফল্যকে বিশ্বে উদাহরণ হিসেবে তুলে ধরছে জাতিসংঘসহ আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলো। স্বাধীনতার ৫০ বছরের বাংলাদেশ এখন আর তলাবিহীন ঝুড়ি নয়। বাংলাদেশ আজ অনেকের চোখেই বিস্ময়। এটিই এখন বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা, যা তিনি চেয়েছিলেন। স্বাধীনতার পর দেশে যে চাল উৎপাদন হতো এখন তার চেয়ে তিন গুণ বেশি উৎপাদন হয়। ওই সময় যেখানে প্রতি হেক্টরে চালের উৎপাদন ছিল দেড় টন, তা এখন চার টনেরও বেশি। একইভাবে গম উৎপাদন বেড়ে দ্বিগুণ আর ভুট্টার উৎপাদন হয়েছে ১০ গুণ; যা এই করোনাকালেও অব্যাহত ছিল। এ ছাড়া প্রধান খাদ্যশস্যের বাইরে নিবিড় চাষের মাধ্যমে দেশে সবজি উৎপাদনে নীরব বিপ্লব ঘটেছে। সবজি উৎপাদন বৃদ্ধির হারের দিক দিয়ে বাংলাদেশ এখন বিশ্বে তৃতীয়। গত এক দশকে সবজির আবাদি জমির পরিমাণ ৫ শতাংশ হারে বেড়েছে, যা বিশ্বে সর্বোচ্চ আবাদি জমি বৃদ্ধির হার বলে জানিয়েছে জাতিসংঘের কৃষি ও খাদ্য সংস্থা (এফএও)।

বলা সংগত, একসময় সার ও বীজ নিয়ে কৃষকের ছিল তুমুল হাহাকার, সেটা এখন বেশ সহজলভ্য। অন্য যেকোনো সময়ের তুলনায় ফসল আবাদের জন্য কৃষক এখন বেশি পরিমাণ গুণগত মানসম্পন্ন বীজ ও সার পাচ্ছেন। বর্তমান কৃষিবান্ধব সরকার ২০০৮-০৯ অর্থবছর থেকে কৃষি পুনর্বাসন চালু করেছে। এ ছাড়া কৃষকদের মাত্র ১০ টাকায় ব্যাংক হিসাব খোলার সুযোগ করে দেওয়ায় ১ কোটি ১ লাখ ১৯ হাজার ৫৪৮টি ব্যাংক হিসাব খোলা সম্ভব হয়েছে, যেখানে বর্তমান স্থিতি প্রায় ২৮২ কোটি টাকা। সরকার সার, ডিজেল, বিদ্যুৎ ইত্যাদি খাতে আর্থিক সহযোগিতা উল্লেখযোগ্য পরিমাণে বৃদ্ধি করেছে। ফলে দেশের কৃষি খাতে এক যুগান্তকারী বিপ্লব ঘটেছে। মনে রাখতে হবে, এ খাতের উন্নয়ন হলে উন্নত হবে আমাদের দেশ। আমরা চাই, কৃষি খাতের এ অগ্রযাত্রা অব্যাহত থাকুক।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close